কিছু মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখে। কিছু মানুষ স্বপ্নটা সত্যি করার জন্য ঘুম থেকে জেগে উঠে। জীবন আপনার কাছে সেভাবেই ধরা দিবে আপনি যেরকম থাকবেন।
প্রশ্নকর্তা শরিফুর রহমান (বি এ/ এম এ বাংলা)সাহেব যেটা করে যেতে পারেননি সেটা হল প্রশ্নটা ঠিক করে যেতে। এমনিতে প্রশ্ন তে ভুল থাকাটা খুব গুরুতর অপরাধ না।
অঙ্ক প্রশ্নেও ভুল ছিল। উতপাদকে বিশ্লেষন এর ভুলটা অবশ্য পরীক্ষা চলাকালিন সময়তেই ঠিক করা হয়। বাংলা এর ভুলটাও এত ভয়াবহ আকার ধারন করতনা কিন্তু ক্লাস এর রোল-৬২ আব্দুল বাতেন চৌধুরী ওরফে এবিসি যদি এটা আনসার করতে না যেত। আরেকটা সমস্যা হল যেদিন বাংলা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় সেদিন আবার শরিফুর রহমান সাহেবের অইদিন আবার নিজের বিয়ে ছিল। প্রশ্নটা করে দিয়েই তিনি চলে যান।
তার নিজের বিয়ে খেতে। টাইপিং মিসটেক যেটা হয় সেটা হল
“ প্রাত্যহিক জীবনে ......” ,
অর্থাৎ এই দুই শব্দ এর পর আর কিছু না থাকা। আসলে তো এটা হওয়ার কথা ছিল প্রাত্যহিক জীবনে বিজ্ঞান। তবে বিজ্ঞান শব্দটা কোনো এক অজ্ঞাত কারনে আসেনাই। যেহেতু শরিফুর রহমান সাহেব ছিলেন না তাই সেটা ঠিক করার ব্যাপারেও কার মাথা ব্যাথা ছিলনা।
আর সত্যিকার অর্থে এটা অত বড় ভুল ও না। কারন অনেকেই বুঝে ফেলেছিল এটা হবে প্রাত্যহিক জীবনে বিজ্ঞান। সমস্যাটা করল বাতেন। যেহেতু সে লেখাপড়া তেমন একটা কখনই করেনা, তার উপর সে কোথেকে শুনে আসছে এখন নাকি সৃজনশীল প্রশ্নের যুগ। তাই যখন সে দেখল যে প্রাত্যহিক জীবনে এর পর আর কিছু নাই তাই সে মনে করল ওখানে নিজের মত করে শব্দ বসানো যাবে।
সে রচনাটাকে বানিয়ে ফেলল “প্রাত্যহিক জীবনে কনডম”। শরিফুর রহমান সাহেব বিয়ের পরেও যখন কয়েকদিন ছুটি নিল তখন স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবহান স্যার নিজেই খাতা দেখলেন এবং বেশ অবাক নয়নে লক্ষ্য করলেন যেখানে ক্লাস এর ফার্স্ট বয় এর রচনা ৮ পৃষ্ঠা, সেখানে রোল-৬২ এর রচনা ৩২ পৃষ্ঠা। এবং রচনার নাম প্রাত্যহিক জীবনে কনডম। আমাদের দৈনন্দিন কাজে এই জিনিশের কত প্রয়োজন এর উপকারিতা সব কিছুই বর্ননা করা। এর অভাবে কত জাতি আজ হুমকির সম্মুখীন।
জাতীয় জীবনে এর গুরুত্ব বুঝিয়ে দেওয়া আছে। এর কারনে যে এইডস হতে পারে এবং একি পুকুরে গোসল করলে যে এইডস ছড়ায় না সেটাও দিয়ে দেওয়া। রচনায় কবিতাও দেওয়া আছে। রসময় গুপ্ত নামক অই কবির নাম অবশ্য সোবহান সাহেব আগে শুনেননি।
“ যদি বাচতে চান বেশিদিন, কনডম ব্যাবহার করুন প্রতিদিন”
সোবহান সাহেবের মোটামুটি আক্কেল গুরুম হয়ে গেল।
তিনি পরেরদিন স্কুল এ জরুরি মিটিং ডাকলেন এবং সেখানে বাতেন এর অভিভাবক-কেও ডাকান হল। বাতেন কে যথারিতি তিরঃস্কার করা হল এবং তার বাবা বাসায় গিয়েও দু চার ঘা লাগান শুরু করলেন। তখন বাতেনদের বাসাই বাতেন এর বাবার এক বন্ধু ছিলেন এবং তিনি পুরো ব্যাপারটা শুনার পর সম্পুর্ণ অন্য মত দিলেন। প্রথম কথা হল এইসব বাপারে এইসব নিশিদ্ধ ব্যাপারে আগ্রহ থাকবেই। কিন্তু আসল ব্যাপারটা অন্য।
জেই ছেলে পরীক্ষার খাতাই ২ পাতা লিখতে পারেনা সে ৩২ পৃষ্ঠার রচনা লিখল কিভাবে? যেহেতু এই রচনা আর কেউ লেখেনাই এবং এটার নকল অ থাকবেনা কাজেই এটা বাতেন এরই লেখা। কাজেই যে জিনিশটা সে বুঝে সেটা লিখতে তার কোন সমস্যা হয় না। তার আগ্রহ তা কোনোভাবে অই দিকে চলে গেছে এটাই সমস্যা। বাতেন ব্যাপারটা কতটুকু বুঝতে পারল বুঝা গেলনা অবশ্য তবে এরপর থেকে তার মধ্যে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেল। বাতেন এর বাবার বন্ধু তাকে গনিত করাতে গেলে খেয়াল করেন বাতেন এর বুদ্ধিমত্তা মোটেও খারাপ না।
কোনোভাবে মুখস্থ করাটা তার মধ্যে নাই এটাই সমস্যা। ফাইনাল পরীক্ষায় বাতেন হিন্দি সিনেমার মত ফার্স্ট হয়ে যায়নায় কিন্তু অনেক ভাল করল। এরপর থেকে বাতেন এর মধ্যে পরিবর্তন আসল। এবং ভবিষ্যত এ সে অনেক ভাল করল। তার ভাল করার পিছনে তার বাবার বন্ধুর অবদান ছিল আর কেউ বলুক আর নাই বলুক শরিফুর রহমান সাহেবের বিয়ের অবদান ছিল।
বাতেন এখন ডাক্তার। ডাক্তার এবিসি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।