নীরব বয়ান
আজকে বাংলা বছরের শেষ দিন। আগামীকাল থেকে নতুন বছর ১৪১৭ বঙ্গাব্দ শুরু হবে। তাই ব্লগার সব ভাইবোনকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ ও নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। কামনা করছি, নতুন বছর সবার জন্যে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ-শান্তি।
গতকাল থেকে পাহাড়ে শুরু হয়েছে পাহাড়ী আদিবাসীদের সবচেয়ে বড় সামাজিক উতসব বৈসু-সাংগ্রাই-বিজু যা এখন সংক্ষেপে বৈসাবি নামে পরিচিতি পাচ্ছে।
ত্রিপুরারা বলে বৈসু, মারমারা বলে সাংগ্রাই, চাকমারা বলে বিজু, ও তনচংগ্যারা বলে বিসু। এসব শব্দের আদ্যাক্ষর নিয়ে করা হয়েছে বৈসাবি। বছর পেরিয়ে এবারও বৈসাবি পাহাড়ে এসেছে। তবে বৈসাবি নিয়ে মিশ্র অভিব্যক্তি দেখা যাচ্ছে। এবার অনেকে বাঘাইহাট ও খাগড়াছড়িতে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে সমব্যথী হতে বৈসাবি বর্জনের ডাক দিয়েছেন।
কেননা, ক্ষতিগ্রস্তলোকজন এখনো থিতু হতে পারেনি। আর্থিক ও মানসিক যন্ত্রণায় তাদের হাসি-আনন্দ হারিয়ে গেছে। তাই বৈসাবি উতসবে তারা যোগদান করতে পারছে না। অন্যদিকে আরো এক পক্ষ সীমিত পরিসরে হলেও বৈসাবি পালন করছে। কেননা, বৈসাবি যদি বর্জন করা হয় তাহলে শাসকগোষ্ঠী বারবার আঘাত হানবে পাহাড়ী আদিবাসীদের, চেষ্টা করবে সংস্কৃতি ধ্বংসের।
কাজেই সেই শাসকগোষ্ঠীকে সেই সুযোগ দেওয়া যাবে না। এ বছর বৈসাবি উদযাপন নিয়ে মতপার্থক্য যাই হোক, বৈসাবি আজ আমাদের মাঝে উপস্থিত। এই বৈসাবি'র দিনে সবাইকে শুভেচ্ছা ও সাদর সম্ভাষণ জানাচ্ছি।
একই সাথে আপনাদের কাছ থেকে কয়েক সপ্তাহের ছুটি চাচ্ছি। কেননা, প্রথমত, বৈসাবি চলছে; দ্বিতীয়ত, আমি দূর পাহাড়ের মানুষ।
কাজের তাগিদে শহরে আসি, কাজ শেষ হলে ফিরে যাই সেই দূর পাহাড়ের চূড়ায়। তখন কথা বলি বনের গাছগাছালি, পাখ-পাখালির সাথে। আমি আগামীকাল থেকে তথ্যসেবা নাও পেতে পারি। তাই ব্লগে এসে আপনাদের সাথে তক-ঝাল-মিষ্টি কথা বলার সুযোগ থাকবে না।
আপনারা জানেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের লোকজন অনেক বছর মোবাইল তথা তথ্যসেবা থেকে অনেক বছর বঞ্চিত ছিল।
সবাই সমান অধিকারের কথা বললেও আমরা পার্বত্যবাসীরা ছিলাম মোবাইল সেবা থেকে বঞ্চিত। সমান অধিকার শুনতে বেশ ভালো লাগে। কিন্তু সমান বললেও বাস্তবে কী সমান হয়? যাহোক, আমি জানি না সেই বঞ্চনার যুগে (তবে এখনো বঞ্চনা শেষ হয়নি) এই ব্লগের 'সমঅধিকারের ভাইবোনেরা' জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন কি না। কারণ, তখন আমি এ ব্লগে ছিলাম না, চেনা তো দূরের কথা। সে যাক, এটুকু উপলব্দি হয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রামে তথাকথিত গণতান্ত্রিক সরকার সহজে কিছু করতে পারে না।
চাইলে অনিয়মতান্ত্রিক সরকারই কিছু করতে পারে। যেমন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফক্কর উদ্দীন তত্ত্বাবধায়ক (দু:খিত, একটু মজা করে বলছি) সাহস করেছেন মোবাইল সেবা দিতে। সেজন্যে তাকে ধন্যবাদ জানাই।
সে যাক, অনেক কথা হবে পরে। ব্লগার ভাইবোনেরা ভালো থাকুন।
নববর্ষের শুভ কামনা রইল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।