আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুন্সীগন্জের পাষন্ড পীর আর প্রথম আলো ভন্ডামী



ইসলামী শাসন ব্যবস্থা তথা সুশাসন কায়েম উৎখাত কল্পে আমাদের পরান্নভোজী সুশীলরা ইসলামী রাজনীতি বন্ধের জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ঐসব মেরুদন্ডহীন সরিসৃপদের ফ্ল্যাটফর্ম হলো প্রথম আলো। তথাকথিত সুশীল তত্তাবধায়কের সম্প্রসারিত সরকার বর্তমান ডিজিটাল সরকারের সময়ে এই প্রচেষ্টা লক্ষ্যনীয়ভাবে বৃদ্ধি হয়েছে। এদের প্রথম কর্তব্য হলো ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েমের জন্য যারা রাজনীতি করতে চায় তাদের তা থেকে বিরত রাখা। এ লক্ষ্যে তারা প্রচারনা ও শক্তিপ্রয়োগ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রচারনা হলো এরুপ যে,এরা সেকেলে,গোড়া,প্রগতিহীন,জঙ্গী,নারী লোভী প্রভৃতি । প্রচারনার দায়িত্বটা নিল প্রথম আলো ও তার সমমনারা। আর শক্তিপ্রয়োগটা হলো দল নিষিদ্ধকরন,রাজনীতি নিষিদ্ধকরন,যুদ্ধপরাধীর বিচার,সমাবেশে ১৪৪ ধারা জারি প্রভৃতি। প্রচারনা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির সুবিধার্থে কিছু লেবাসধারী মোল্লারাও এদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমানে শক্তিপ্রয়োগের দায়িত্বটা নিল আওয়ামী লীগ।

পূর্বে নিয়েছিল যথাক্রমে খালেদা ও ফখরুদ্দিন সরকার। প্রচারনা তথা ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে সমাজে বিদ্বেষ সৃষ্টি,ঘৃনা সৃষ্টি আর বলপ্রয়োগের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয়করন; এই উভয় কার্যক্রমই মূলত বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমেরিকায় ইচ্ছায় হচ্ছে। আমেরিকার এই ইচ্ছার সাথে কিছু টুকটাক ছেলা-ছামুন্ডার ইচ্ছা মিলে গেছে যেমন ইহুদী,খ্রিস্টান ও হিন্দু বিশ্বের। ফলে যারা ইসলামী ন্যায়বিচারের ক্ষমতায়ন বিরোধী যারা,তাদের আয় রোজগারের পথ খুলে গিয়েছে আর টাকার দরকার নেই যারা সেসব ন্যায়বিচার বিদ্বেষীদের মানসিক প্রশান্তির ব্যবস্থা হয়েছে। ব্যপারটা এরকম যে, টাকাওয়ালা খ্রিস্টান বিশ্বের পরিকল্পনায়,ইহুদী বিশ্বের সহযোগিতায়, হিন্দু বিশ্বের কূট কৌশলে আর পরান্নভোজী স্বজাতীয় দালালদের উচ্ছাসে ন্যায়বিচারের ক্ষমতায়নের রাজনীতি তথা ইসলামী রাজনীতি উৎখাতের আন্দোলন এখন তুঙ্গে।

এরই অংশ হিসেবে আওয়ামী সরকার এবার এসে যে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছে তা হলো ইসলামী আন্দোলনের মোকাবেলায় হুজুর লেবাসধারী লোকদের ব্যবহারকরন। অবশ্য প্রথম কাজটা ফখরুদ্দিন সরকার ভালোমতোই করতে সক্ষম হয়েছে। তারা কবর পূজারী মাওলানা সালাউদ্দীনকে বায়তুল মোকাররমের খতিব বানিয়ে জাতীয় মসজিদকে মাজারওয়ালাদের ঘাটি বানিয়েছেন। আর হাসিনা সরকার শামীম আফজাল চৌধুরীকে বানিয়েছেন ইফার ডিজি। এই মুজিবভক্ত মসজিদ ভিত্তিক কার্যক্রমকে প্রায় স্থগিত করে,দেশব্যাপী মাজারের তালিকা করে গান্জাখোরদের জন্য অনুদানের ব্যবস্থা করেন।

শুধু তাই নয়,কাঙ্গালীনী সুফিয়া,আখি আলমগীরদের গজলের বিচারক বানিয়ে ইফায় গজল অনুষ্ঠান করেন। মহাজোট শরীক ভেজাল কমিউনিস্ট মেনন সাহেব তরিকত ফেডারেশনের অনুষ্ঠানে ইসলাম শিক্ষা দেন। মূলধারার ইসলামী আন্দোলন ঠেকানোর জন্য যত্র-তত্র পুরোনো নতুন মাজার গুলোকে সরকার ডোনেশন দিয়ে রাত বিরাতে ইসলামের নামে ইসলামবিরোধীদের আখড়া বানিয়েছে। পাঠক একটু খেয়াল করলেই দেখবেন,শহরের আনাচে কানাচে পীর মুরীদ আর মাজারে মাজারে লেংটা বাবা,খাজা বাবা,দোহাই বাবারা গিজ গিজ করছে। উচ্চ বাদ্যের মাইক থেকে অনবরত গান বাজনা,আর ইসলামী রাজনীতি বিদ্বেষী বক্ততা করা হচ্ছে।

আর এসব মাহফিলের প্রধান অতিথি হচ্ছেন সংশ্লিষ্ট এলাকা এমপি ও তার সাঙ্গপাঙ্গ ক্যাডাররা। মাহফিল শেষে রাতভর চলে গান্জার আসর। এসব আসরে বাবার দোহাই দিয়ে বৃষ্টি,রোদ,আয় রোজগার কামনা করে শিরক করা শেখানো হচ্ছে। শুধু তাই নয় স্বতন্ত্র পীরের মুরীদদের জন্য স্বতন্ত্র পোশাক বিক্রি করা হচ্ছে। যেমন-লাল লুঙ্গি,সবুজ পাগড়ি ইত্যাদি।

ঢাকার রাজার বাগের দিল্লুর রহমান পীরকে তো পাঠকের না চেনার কথা নয়। জিহাদ বিদ্বেষী এই পীর সাহেব গত নির্বাচনের আগে হঠাৎ মতিঝিল বিমান অফিসের সামনে বকের ঠ্যাং এর বিরুদ্ধে জিহাদ করে বসেন,আর সুশীলরা ইস্যুটিকে জামায়াত-বিএনপির বিরুদ্ধে ব্যবহার করেন। ব্যাপারটা যেন মিলেমিশেই ঘটেছে। উনার আর আল বাইয়্যিনাত ও আল ইহসান পত্রিকা আছে,যা দ্বারা যতনা ইসলামের প্রচারনা চালানো হয় তার কয়েকশগুন বেশী ইসলামী রাজনীতি বিরোধী প্রচারনা চালানো হয়। ইন্টারনেটের মাধ্যমেও এ অখাদ্য পত্রিকাগুলো প্রচারের উদ্যেগ নেয়া হয়েছে।

কারা এদের ডোনার?ফার্মগেটের কুতুববাগ দরবার শরীফের জৌলুস দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবার তো জাতীয় সংসদের সামনেই তারা উরস করেছে। জানিনা কোন এমপি,মন্ত্রী সাহেব তাদের উরসে গেছেন। তারা যে কী ইসলাম প্রচার করছেন,তা ওখানকার শব্দ দূষনের শিকার এলাকাবাসীই ভালো জানেন! কয়েকদিন আগে সায়েদাবাদে জন্ম নিল নতুন পীরের আস্তানা,উনার মুরিদরা সবুজ পাগড়ি পরেন। নাম দাওয়াতে ইসলামী বাংলাদেশ।

এবারে ১২ ই রবিউল আউয়ালে ঢাকায় সত্যিই ঈদ বসেছিল মাজারপন্থী গান্জা ব্যবসায়ীদের। ভাবতে কষ্ট লাগে এরা দুই ঈদের বাহিরে নতুন ঈদের আবিস্কার করেছে। এদের গোড়া এতই শক্তযে, উরসের নামে বিরাট বিরাট গুরু খাইয়ে এরা মূর্খ ধার্মিকদের গরু বানিয়ে চলেছে। ডিজিটাল সরকারের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে এদের যে শিকড় গজাচ্ছে তা হয়ত একদিন মুন্সীগন্জের ভন্ডপীরের চেয়ে ভয়াবহ হবে। দেওয়ানবাগের পীরের ভন্ডামীর কথা সবাই কমবেশী জানেন বলে তার জন্য বেশী কথা বরাদ্দ না রাখাই ভালো।

শুধু পাঠকদের জ্ঞাতার্থে এতটুকু বলা প্রয়োজন বোধ করছি যে,এই ভন্ড পীরের মুরীদ হবার বিজ্ঞাপন একুশে টিভি আর প্রথম আলো পুরো পৃষ্ঠা জুড়ে চেপেছে। শুধু তাই নয় ভন্ড কাদিয়ানীদের সাক্ষাৎকার ,প্রচার প্রপাগান্ডার মহান দায়িত্বও তো প্রথম আলো নিয়েছিল,তাও আমরা ভুলিনি। ভুলিনি চট্টগ্রামের নতুন ভন্ড গ্রুপ যুব মুনিরীয়া তাবলিগ কমিটির বিজ্ঞাপন প্রথম আলোর পুরো পৃষ্ঠা জুড়ে ছাপানোর কথা। এই সেই প্রথম আলো যারা ইসলামী আন্দোলনকে দমানোর জন্য দেশী বিদেশী ইসলামবিরোধীদের ডোনেশনে গড়ে ওঠা ভন্ড পীরদের প্রপাগান্ডায় সহায়তা করে। আবার এদের হাতে নিগৃহীত জনতার প্রতি বিশেষত নারী ও শিশুদের প্রতি মমতার ভান করতে গিয়ে প্রথম আলো মূল ইসলামী রাজনীতিবিদদের উপর দোষ চাপায়।

সর্বশেষ ডিজিটাল ইসলামীদের কাছে এটা প্রশ্ন,আমাদের প্রিয় হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর উরস কবে? দয়াকরে বলবেন,তাহলে আমরা গরু নিয়ে সৌদি আরব রওয়ানা দিতাম। 12/4/2010 Email:

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.