সাগর সরওয়ার
আমার ছেলে মেঘের আজ আর বাইরে যাওয়া হচ্ছে না। শখ ছিল বাপ বেটা মিলে রাইন নদীর পাড়ে সাইকেল চালাবো। বিকেলে নুইয়ে পড়া রোদকে পিঠে লাগিয়ে চার চাকাকে গড়িয়ে দেবো। কিন্তু তা হলো না। আকাশ গুমড়ো মুখ করে বসে আছে, আর আমরা বসে আছি ঘরে।
ঘরে মেঘের নানা দুষ্টমি চলছে। এরই মধ্যে মজার দুষ্টমিটা হলো বাদাম বিক্রি। বেতের একটা ছোট্ট সাজি নিয়ে সে বললো
: এই বাদাম, বাদাম নেবেন বাদাম।
আমি তার কাছ থেকে মিথ্যে বাদাম কিনলাম। মিথ্যে মিথ্যে বাদাম সকলে কিনতে পারে না।
কেউ কেউ পারে।
মেঘের বাদাম বাদাম বিক্রি খেলা দেখে আমার মনটা বেশ ভালো হয়ে গেলো। ভাবলাম...যাক এই সুদুর প্রবাসে এসেও আমার প্রায় চার বছরের ছেলে দেশের এই বাদাম বিক্রি ভুলেনি।
আমার ভালো লাগছে। কিন্তু ভালো লাগা সব সময় বেশিক্ষণ থাকে না।
মিথ্যে বাদাম বিক্রির দুই মিনিটের মাথায় এবার তার কাছ থেকে আমায় কিনতে হলো পপর্কণ!
: বাবা পপর্কণ নাও। আমি নিলাম সেই মিথ্যে পপর্কণ।
বদলে যাচ্ছে সময়... বদলে যায় সময়.. বদলে যায় প্রজম্ম।
এটাকে কি পপর্কণ প্রজন্ম বলবো?
:::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
স্কুল ছুটি। শীতের দিন।
গুলিস্তান থেকে সকালে বিআরটিসি বাসে উঠে বিকাল নাগাদ পৌঁছলাম পাবনা। আমাদের গ্রামের বাড়ি। প্রতি শীতে বাড়ি যাবো এটা একটা বাধা বিষয়। সেবারও গেছি। বিকালে বিকালে বাড়ি গিয়েই সমবয়সী গ্রামের বন্ধুদের নিয়ে দে ছুট।
একছুটে যমুনার পাড়ে। আমাদের বাড়ির পাশ দিয়ে যমুনার একটি শাখা। এক পাশে চর। একপাশে আমাদের গ্রাম। মাঝে সেই নদী।
আহা আমার সেই স্বপ্নের নদী। ভালোবাসা। ঘোলা পানি, বালির চরে আটকে থাকা নীল পানি। আমি সেই নদীর পাড়ে। নদীর কোল ঘেষে থাকা বালুমাটি সবুজ।
ছোট ছোট গাছ। দারুন সবুজ।
আমার বন্ধুরা সেই গাছ তুলে নিলো কয়েকটি। গাছের মূলের সঙ্গে সাদাটে রঙের ফল। আমি এই থোকা থোকা ফলকে চিনলাম।
এটা বাদাম। এখনো সেই বাদাম পাকেনি।
দারুন এক বাতাস এসে লাগছে শরীরে। বালক মন আমার চলে যাচ্ছে দূরে। বহুদূরে।
ঐখানে আকাশের রঙ নীল। নীচে নীলচে নদীর পানি।
আচ্ছা এই পানি এত নীল কেন?
..::::::::::::::::::::::::::::::
মেঘ এই নীলচে নদী দেখেনি কখনো.....
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।