সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার ডিবির হাওর ও কেন্দ্রীবিলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও ভারতীয় বেসামরিক নাগরিকরা গতকাল বাংলাদেশ সীমানার ভেতর ঢুকে পড়লে সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিডিআর লাল পতাকা টানিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করে। কিন্তু বিডিআরের লাল পতাকাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভারতীয় নাগরিকরা দিবালোকে মাছ ধরা অব্যাহত রাখে। বিডিআর সূত্র জানিয়েছে, কেন্দ্র থেকে নির্দেশ না পাওয়ায় তারা ভারতীয় বিএসএফ এবং বেসামরিক নাগরিকদের বাংলাদেশ সীমানায় অনুপ্রবেশ ঠেকাতে গুলি ছুঁড়তে পারছে না। এদিকে গতকাল দিল্লিতে বিডিআর বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ের ৬ দিনব্যাপী বৈঠক শুরু হয়েছে।
দিল্লিতে যখন বিডিআর-বিএসএফ বৈঠক চলছে, ঠিক সে সময় ভারতীয় বিএসএফের সহযোগিতায় আবার বাংলাদেশের সীমানায় প্রবেশ করে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে।
সকাল ৯টায় ভারতীয় শতাধিক বিএসএফ ভারী অস্ত্রে সর্জিত হয়ে ১০/১২টি নৌকা দিয়ে ২৫/৩০ ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশের সীমান্তে ডিবির হাওর ও কেন্দ্রীবিলে প্রায় ১০০ গজ ভেতরে ঢেলে দেয়। ডিবির হাওর ও কেন্দ্রী এলাকার বিলাল আহমদ, হারুন মিয়া, জামাল মিয়া জানান, ভারতীয় নাগরিকরা বিলে নামতে অপারগতা দেখালে বিএসএফ তাদের ধমকিয়ে এবং অস্ত্র উঁচিয়ে মাছ ধরতে বাংলাদেশের সীমান্তে প্রবেশ করায়। ভারতীয় নাগরিকরা নৌকাযোগে কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরতে এলে বিডিআর জওয়ানরা তাদের সীমান্তের ওপারে চলে যেতে বারবার অনুরোধ করে এবং বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানায়। তারপরও যখন ভারতীয় নাগরিকরা সীমান্তের ওপারে যাচ্ছে না, তখন উপরের নির্দেশে দুপুর ১২টার সময় সীমান্তে লাল পতাকা উড়িয়ে সর্বোচ্চ সতর্কবার্তা জানানো হয়।
দুপুর সাড়ে ১২টার সময় ভারতীয় নাগরিকরা সীমান্তের ওপারে চলে যায়। তখন বিডিআর লাল পতাকা তুলে নিয়ে আসে। দুপুর ১টা ২০ মিনিটে আবারও বিএসএফ ভারতীয় নাগরিকদের জোর করে মাছ ধরতে বিলে পাঠায়। দেড়টায় বিডিআর আবারও হ্যান্ড মাইক দিয়ে চলে যেতে বলে; কিন্তু ভারতীয় নাগরিকরা না গিয়ে মাছধরা অব্যাহত রাখে। বিডিআর আবারও ২টায় সীমান্তে লাল পতাকা ওড়ালে বিএসএফ ভারতীয় নাগরিকদের মাছ ধরতে উত্সাহ দিতে থাকে।
বিএসএফের উত্সাহ পেয়ে ভারতীয় নাগরিকরা মাছধরা অব্যাহত রাখে। কর্তব্যরত বিডিআর সুবেদার হেলাল উদ্দিন ও নায়েক সুবেদার ইউনুছ প্রতিবেদককে জানান, গতকাল থেকে ভারতের নয়াদিল্লিতে বিডিআর-বিএসএফের উচ্চপর্যায়ে সীমান্তের বিশৃঙ্খলা নিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ৬ দিনের বৈঠক চলছে। ওই বৈঠক যাতে সফল না হয় সে জন্য ভারতীয় বিএসএফ সীমান্তে এ ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। স্থানীয় এলাকাবাসী মোঃ গোলজার হোসেন, বিলাল মিয়া, গোলাম শহিদ জানান, বিএসএফকে ওপারে ভারী অস্ত্র ও সৈন্য বৃদ্ধি করতে দেখা যায়। একদিকে উভয় দেশের সীমান্তে সমস্যা নিয়ে বৈঠক চলছে, অন্যদিকে বিএসএফ সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে।
গত ২ মার্চ বিডিআরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মইনুল ইসলাম কেন্দ্রী ও ডিবিবিলের সীমান্তের ১২৮৪ ও ১২৮৫ নম্বর পিলারের মধ্যবর্তী স্থান পরিদর্শনের পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও গতকাল আবারও বিএসএফ সীমান্তে পরিস্থিতি অশান্ত করে তুলে। বিডিআর আরও জানায়, আমরা সীমান্তে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং দিল্লিতে বৈঠক সফল করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। গত ১ মাস ৫ দিন ধরে বিডিআর জওয়ানরা সিলেট জৈন্তাপুর সীমান্তের ৩০০ একর ভূমি রক্ষার জন্য শিলাবৃষ্টি, ঝড়, উপেক্ষা করে দিনরাত হাওরে সীমানা পাহারা দিচ্ছে। এলাকায় আবারও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
এদিকে জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠন বিভিন্ন সভা, সেমিনার ও সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করে তুলছে।
নেতাকর্মীরা বলছেন, জৈন্তা-গোয়াইনঘাট সীমান্তের ভূমি ভারতকে ব্যবহার করতে দিলে সিলেট সীমান্ত থেকে সরকার পতনের আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে।
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।