হতাশা আর দু;খ ব্যাথা যাদের দেখে থমকে দাঁড়ায় আজকে তাদের খুব প্রয়োজন, বিশ্ব এসে দু হাত বাড়ায়।
আমার পাঁচ বছরের ছেলে আবিদ। আমি বাসায় থাকলে তার তার মুখে কথার ফুলঝুড়ি ছোটে। প্রশ্নের পর প্রশ্ন। আমিও চেষ্টা করি বিরক্ত না হয়ে প্রশ্নগুলোর জবাব দিতে।
যদিও মাঝে মধ্যে বিরক্ত হয়ে যে ধমক দেই না তা ন।
তো কাল রাতে এক সাথে ব্রাশ করছিলাম। হঠাত শুরু হলো প্রশ্ন।
আবিদঃ আমরা যে পানি গুলো বেসিনে ফেলছি সেগুলো কোথায় যায়?
আমি বেসিনের নীচের পাইপ দেখিয়ে বলি এটা দিয়ে বাইরে চলে যায়। এর পর সম্পুরক প্রশ্নঃ
আবিদঃ বাইরে তো রাস্তা।
আমরা যখন বাইরে যাই তখন তো পানি দেখতে পাইনা।
এবার আমি আরেকটু বুঝাই, পানির পাইপ আছে রাস্তার নীচ দিয়া। সকল বাড়ী থেকে পানি যেয়ে রাস্তার নীচের বড় পাইপে পড়ে। তারপর বড় পাইপ দিয়ে সেগুলো শহরের বাইরের নদীতে যেয়ে পড়ে।
ভেবেছিলাম এবার প্রশ্ন শেষ হবে।
কিন্ত না, এবার আসল বুদ্ধিজীবি মার্কা প্রশ্ন।
আবিদঃ তাহলে তো নদীর পানি ময়লা হয়ে যাবে।
এবার আমি পুত্রধনের আতেল মার্কা প্রশ্নে গর্বিত। সহজ ভাবে বলি তুমি যে বিষয়টি এত সহজে বুঝতে পারলে আমাদের হর্তাকর্তারা তো এটা বুঝে না। তাই কোন ব্যাবস্থা নাই আর নদীগুলো দিন দিন ময়লা হয়ে যাচ্ছে।
আবিদঃ তাহলে তো নদীগুলো কে পুকুর বলতে হয়। কারণ পুকুরের পানি ময়লা।
পুকুরের পানি ময়লা হয় আর নদীর পানি পরিস্কার হয় এমন তথ্য সে কথায় পেয়েছে তাও জানিনা। শিশুমুখ দিয়ে এমন বাস্তব কথা বের হয়েছে যে আমি কষ্ট করে বিরক্তি ঠেকাই। অনেকটা স্বগোতক্তির মতো বলি।
নদী গুলো পুকর নয় বাবা, এগুলো তারচেয়েও খারাপ। কোন নদীতে পানিই নাই আবার কোনটির পানি ময়লা আর কেমিকেলে বিষাক্ত।
আবার প্রশ্ন করে বসে আবিদ, আব্বু পানি বিষ কেন? এবার আমার বিরক্ত হবার পালা। বলি এত বুঝে কাজ নেই বাপু, এখন ঘুমাতে হবে।
ছেলেকে ধমক দিয়ে থামিয়ে দিলেও আমি ভাবতে থাকি তার তুলে আনা বিষয় টি।
সারা শহরের ময়লা, অবৈধ দখল আর শিল্প-কারখানার বর্জ্য দিয়ে আমারা নদীগূলোকে মেরে ফেলছি। এটা দেখার কি কেউ নেই????
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।