আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ওয়েবডিজাইনার হিসেবে সফল হওয়ার ১২টি টিপস

একজন ওয়েবডেভেলপারকে ওয়েবসাইট ডেভেলপিং করার সময় বিশাল তথ্যকে ভালভাবে সাজিয়ে সুন্দর একটি ওয়েবসাইট ডিজাইনের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। অনেক সময় একজন ওয়েবডিজাইনারকে ওয়েবসাইট তৈরির পাশাপাশি ওয়েবসাইটটি যে ব্যবসার জন্য তৈরি সে ব্যবসার সফলতার জন্য অনেক পদক্ষেপ নিতে হয়। সেজন্য একজন সফল ওয়েবডিজাইনার হতে হলে অনেকগুলো বিষয় নজর রাখা দরকার।
প্রফেশনাল ওয়েবডিজাইনার হিসেবে নিচের ১৬টি টিপস মেনে চললে নিজেকে সফল ওয়েবডিজাইনার হিসেবে প্রস্তুত করা সম্ভব।

 যাদের ভাল যোগাযোগ দক্ষতা আছে তারা সকল ক্ষেত্রেই সফলতা অর্জন করে।

ওয়েবডিজাইন ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়। বরং অনেক বেশি জরুরী। একজন ক্লায়েন্ট, ডিজাইনার এবং ডেভেলপার সকলের সমন্বিত সহযোগিতার মাধ্যমে ভাল একটি ওয়েবসাইট ডিজাইন হয়ে থাকে। যখন আপনি একটি ডিজাইন করলেন, সেটি আপনাকেই বোঝাতে হবে কেন ডিজাইনটি আপনি করেছেন, এ ডিজাইনটি কিভাবে ক্লায়েন্টের ব্যবসার জন্য সঠিক পছন্দ হবে, এগুলো যদি আপনি ভালভাবে ক্লায়েন্টের সাথে আলোচনা করতে না পারেন তাহলে আপনার ডিজাইনটি ক্লায়েন্টের সেরা পছন্দ হবেনা, সব সময় কিছু খুত থাকবে।
আপনি অনেক কাজ জানেন কিন্তু কেউ সেটা জানেনা, তাহলে কোনই লাভ নাই।

বর্তমানে প্রতিযোগিতার বাজার। সুতরাং যে যত বেশি মানুষের কাছে নিজেকে এবং নিজের যোগ্যতাকে প্রচার করতে পারবে সেই অন্যদের চাইতে বেশি লাভবান হবে। এ প্রচারটা করার জন্য অনেকগুলো উপায় আছে। যেমনঃ  মুখে মুখে প্রচার, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং সহ আরোও অনেকগুলো পদ্ধতিতে আপনার যোগ্যতাকে প্রচার করতে পারেন।

যেকোন কোম্পানীর ওয়েবডিজাইন করার আগে ভালভাবে পরিকল্পনা করুন।

পরিকল্পনা তিনটি ধাপে হবে।
ক) ক্লায়েন্টের কোম্পানী নিয়ে গবেষণা করুন।
খ) ক্লায়েন্ট তার ওয়েবসাইট থেকে কি চায়, ওয়েবসাইট তৈরির উদ্দেশ্য কি, সেটা আগে ভালভাবে জানুন।
গ) ক্লায়েন্টের প্রতিদ্ধন্দীদের ব্যপারে এবং তাদের ওয়েবসাইটটি আগে ভিজিট করে দেখুন এবং অ্যানালাইস করুন।
এবার প্রথমে মনে মনে একটি ডিজাইন সাজান, তারপর সেটিকে ফটোশপ দিয়ে ডিজাইন করুন।

অনেক ডিজাইনার এ কাজটি করেনা। কিন্তু কোডিংয়ের আগে প্রি ডিজাইন আপনার সময় এবং অনেক টাকা বাচিয়ে দেয়।
 
 
ডিজাইন করা শেষ হলে একবার নিজেই নিজের ডিজাইন খুব ভালভাবে দেখুন এবং ভুলগুলো ভালোভাবে খুজে বের করুন। একজন দক্ষ ডিজাইনারের নিজের ভুল ধরতে পারার মত চোখ থাকা উচিত। নিজের ভুল ধরতে পারা অনেক বিরল গুন।

ডিজাইন করার পর নিজের ভুল ধরার জন্য সময় দিন।
অনেকের মাঝে একটি ভুল ধারনা আছে, গ্রাফিকস ডিজাইনার হলেই সে ওয়েব সম্পর্কিত ডিজাইনগুলোও পারবে। আসলে প্রিন্টিং এর জন্য ডিজাইন এবং ওয়েবের জন্য ডিজাইনে অনেক পার্থক্য রয়েছে। ডিজাইন সম্পর্কিত পার্থক্যের সাথে এ দু’কাজের উদ্দেশ্য এবং অডিয়েন্সও ভিন্ন। হ্যা এটা সত্য যে, একজন গ্রাফিকস ডিজাইনার ওয়েবডিজাইন সম্পর্কিত কিছু টেকনিক্যাল বিষয় শিখে ওয়েবডিজাইনার হিসেবে নিজের যোগ্যতার আরও একটি ধাপ উন্নত করতে পারে।

কিন্তু তার মানে এটা না যে অনেক নাম করা গ্রাফিকস ডিজাইনার, এজন্য চাইলেই ওয়েবের জন্য ডিজাইন করতে পারবে। ওয়েবের জন্য ডিজাইন করতে হলে অবশ্যই এ সম্পর্কিত বিষয়গুলো খুব ভাল জেনে নিতে হবে।

পুরো পৃথিবীতে প্রতিদিন নতুন টেকনোলজী দেখা যায়। ওয়েব সম্পর্কিত টেকনোলজিও প্রতিদিন পরিবর্তন হয়। আগে ব্যবহার হত HTML4 আর এখন ব্যবহার হয় HTML5, আগে ব্যবহার হত CSS2 কিন্তু এখন ব্যবহার হয় CSS3।

এরকম নিয়মিত আপডেট হচ্ছে। এগুলো যদি শিখে না নেন, তাহলে অন্যদের থেকে আপনি পিছিয়ে যাবেন। সেজন্য সবসময় শেখার উপর থাকতে হবে। শেখার জন্য এ সম্পর্কিত ফোরাম কিংবা ব্লগগুলোতে নিয়মিত ভিজিট করুন।
ওয়েবডিজাইনার হিসেবে সফলতা পেতে হলে এ সম্পর্কিত ছোট ছোট সকল বিষয়গুলো ভালভাবে জানা থাকতে হবে।

যদিও আমি আগে বলেছিলাম সকল নতুন নতুন টেকনোলজী বিষয়গুলো জানা জরুরী। কিন্তু ছোট ছোট কিছু বিষয় আছে, যেগুলো জানা না থাকলে আসলে আপনাকে কেউ কাজ দিতে উৎসাহিত হবেনা। যেমনঃ রেসপন্সিভ ওয়েবসাইট ডিজাইন, সার্চ ইঞ্জিন উপযোগী ওয়েবসাইট তৈরি, Javascript UI techniques, বিভিন্ন ফ্রেম ওয়ার্কের ব্যবহার ইত্যাদি। এরকম আরো অনেক বিষয় আছে যেগুলো জানা থাকলে ভাল চাকুরী কিংবা ভাল মানের কাজ পাওয়া যাবে।

ওয়েবডিজাইনের কাজে অভিজ্ঞতা খুব বেশি জরুরী।

অনেক সময় দক্ষতা দেখেও ক্লায়েন্ট সন্তুষ্ট হয়না, অভিজ্ঞতাকে তারা বেশি পছন্দ করে। আপনি কয়টি ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন, কোন বিখ্যাত কোন কোম্পানী কিংবা বড় কোন কোম্পানীর ওয়েভসাইট তৈরি করেছেন কিনা, কিরকম প্রজেক্ট এখন পযন্ত সম্পন্ন করেছেন। এগুলো একজন ওয়েবডিজাইনারের জন্য খুব জরুরী। এজন্য আমার পরামর্শ হবে, কোন জায়গা হতে ওয়েবডিজাইনের প্রশিক্ষণ নেয়ার পর  চাকুরীতে প্রবেশ করতে হলে কিংবা আউটসোর্সিংয়ে ক্যারিয়ার গঠন করতে চাইলে অবশ্যই ঘরে বসে কাছের মানুষদের কিংবা নিজের কমপক্ষে ১০টি ভিন্ন ওয়েবসাইট প্রজেক্ট সম্পন্ন করা উচিত।
সকল কাজের ক্ষেত্রে সফলতার জন্য সবচাইতে প্রথম দরকার গোছানো কাজ করা।

ওয়েবডিজাইনের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নাই। একটি ওয়েবসাইট ডিজাইনের সময় ছবি, ভিডিও, অনেক ডিজাইন স্যাম্পল, ফন্ট, সাউন্ড ফাইলসহ আরও অনেক কিছুর প্রয়োজন। নিজের ব্যবহৃত কম্পিউটারে এগুলো সব ফোল্ডার আকারে গুছিয়ে রাখা উচিত। তাহলে প্রয়োজনের সময় সব খুজে পাওয়া যাবে সহজে। এতে কাজ সম্পন্ন করতে সময় অনেক কম লাগবে, কাজও অনেক ভাল হবে।

আমরা অনেক সময় ব্যস্ততার কারনে এদিকে কম মনোযোগ দেই কিন্তু এটিও ভাল কাজ করার জন্য অন্যতম প্রধান সহায়ক।

সকল ওয়েবডিজাইনার হোক সে ফ্রিল্যান্সার কিংবা বেতনভোগী চাকুরীজীবি, তাকে অবশ্যই ব্যবসায়িক মনোভাব থাকা উচিত যখন সে কোন প্রজেক্টের কাজ করতে খাকে। একজন সফল ওয়েবডিজাইনার ক্লায়েন্টের জন্য শুধুমাত্র ওয়েবসাইট ডিজাইনই করেনা, সে ক্লায়েন্টের ব্যবসার মার্কেটিং সলিউশনও করে থাকে। সেজন্য তাকে ক্লায়েন্টের পণ্যের মার্কেটিংয়ের প্রয়োজনীয়তা, তাদের সম্ভাব্য ক্রেতা ও তাদের প্রতিদ্ধন্দিদের ব্যপারে খেয়াল রেখে ডিজাইন করতে হবে। সফল ওয়েবডিজাইনার হতে হলে এ বিষয়গুলোরও চর্চা করতে হবে।


ওয়েবডেভেলপিং অনেক ক্ষেত্রে একা করা সম্ভব হয়না। একদম ছোট কোন কোম্পানীর কাজ হলে,  সেটা একধরনের বিষয়্। কিন্তু মোটামুটি বড় কোন প্রজেক্ট হলে সেটা একার পক্ষ্যে শেষ করা সম্ভব না। এক্ষেওত্র একটি প্রফেশনাল টিম নিয়ে কাজ করতে হয়। সেই টিমে থাকবে একজন ডিজাইনার, একজন কনটেন্ট রাইটার, একজন্ ডাটাবেস এক্সপার্ট, একজন্য ডেভেলপার আর একজন থাকবে টীম লিডার।

পুরো টিমের মধ্যে সমন্বয়টা খুব ভাল হতে হবে। এক্ষেত্রে বড় প্রজেক্ট খুব ভালভাবে সম্পন্ন হবে। ইংরেজীতে একটি কথা আছে: :Two heads are always better than one.

একজন ওয়েবডিজাইনারের নিয়মিত ভাল ভাল কাজ হাতে পাওয়ার জন্য নিজের একটি প্রফেশনালমানের পোর্টফলিও সাইট তৈরি করা অত্যন্ত জরুরী। সেই সাথে এ পোর্টফলিওটি সবসময় আপডেটেডও রাখা উচিত। একজন গ্রাফিকস ডিজাইনারের পোর্টফলিওতে ১৯৮০ সালের ডিজাইন রাখলেও কোন সমস্যা হবেনা কিন্তু ওয়েবডিজাইনারের পোর্টফলিওতে ১৯৯০ সালের ডিজাইন রাখলে সেটা চলবেন।

কারন একজন ক্লায়েন্ট দেখার চেষ্টা করবে যে আপনি এখনও কাজ করেন কিনা, নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোন কাজ করেছেন কিনা। পোর্টফলিও সাজানোর সময় ওয়েবডিজাইনের সকলবিষয়ের উপর আপনার দক্ষতার প্রকাশ পায়, আপনার করা এরকম সব কাজগুলো পোর্টফলিওতে দিতে হবে। এ পোর্টফলিও শুধুমাত্র সকল কাজে আপনার দক্ষতাই প্রকাশ করবেনা, ক্লায়েন্টের কাছ থেকে বেশি পেমেন্ট ডিমান্ড করার সুযোগ করে দিবে। যেমনঃ আমার পোর্টফলিওটি (http://creativeitweb.com/portfolio.php) দেখতে পারেন। এভাবে আপনার পোর্টফলিওটিকে সাজাতে পারেন।

আমার ডিজাইন করা সকল কাজগুলো বর্ণনাসহকারে, ওয়েবসাইটের স্ক্রিনপ্রিন্ট ও ওয়েবসাইটের লিংকসহ সকল তথ্য দেওয়া আছে এ পোর্টফলিওতে।
 
 
 
 
কমেন্ট না দিলে কষ্ট করে লিখে মজা পাইনা। যদি ভাল লাগে আপনার ফেসবুকে শেয়ার দিলে ভাল লাগবে।
যেকোন সহযোগিতার জন্য ফেসবুকগ্রুপে জয়েন করুন। ঃ  https://www.facebook.com/groups/creativeit/
সৌজন্যঃ ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউট


সোর্স: http://www.techtunes.com.bd/     দেখা হয়েছে ১৪ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।