বাংলায় মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বাংলা ব্লগারদের সাথে মত বিনিয়ের উদ্দেশ্যে এই প্রোফাইলটি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছে। আপনার ভালো লাগা, খারাপ লাগা জানিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের উদ্যোগে সামিল হোন।
শ্রীলংকাতে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনোত্তর সাংবাদিক, রাজনৈতিক কর্মী ও মানবাধিকার রক্ষাকর্মীদের উপর চালিত নির্যাতন বন্ধে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল শ্রীলংকা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
ভোট গ্রহণের পর থেকে বিরোধী দলীয় সমর্থক ও সাংবাদিকদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, বিখ্যাত কয়েকজন পত্রিকা সম্পাদককে মৃত্যুর হুমকি দেয়া হয়েছে এবং ট্রেড ইউনিয়ন নেতা ও বিরোধীদলীয় সমর্থকদের হয়রানি করা হচ্ছে।
সেন্টার ফর মনিটরিং ইলেকশন ভায়োলেন্স (সিএমইভি) ৮৫ এরও বেশি নির্বাচনোত্তর সহিংস ঘটনার কথা জানিয়েছে যার মধ্যে দু’টি হত্যা ও কয়েকটি আক্রমণের ঘটনা রয়েছে।
সিএমইভি ঘটনাগুলোর বিস্তারিত প্রকাশ করেনি।
গত ২৬ জানুয়ারির নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি মহিন্দ রাজাপাকসে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তার সাবেক সেনাপ্রধান অবসরপ্রাপ্ত সেনাপতি শরত ফনসেকাকে পরাজিত করে পুনঃনির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সরকারের সমালোচকদের উপর চাপ বাড়তে থাকে।
এ বিষয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উপ-পরিচালক মাধু মালহোত্রা বলেন, “তামিল টাইগারদের বিরুদ্ধে বিজয়ের পর অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শ্রীলংকাতে রাজনৈতিক দমন-নিপীড়ন বন্ধ হওয়ার পরিবর্তে আমরা এখন দেখছি স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের উপর মারাত্মকভাবে আঘাত হানা হচ্ছে। ”
শ্রীলংকার সাংবাদিকগণ মারাত্মকভাবে হুমকিগ্রস্ত তাদের সহকর্মী ৫৬ জন সাংবাদিকের একটি তালিকা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে সরবরাহ করেছে, যেখানে সরকারি মালিকানাধীন শ্রীলংকার ব্রডকাস্টিং করপোরেশনে কর্মরত কয়েকজন সাংবাদিকসহ ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন নেটওয়ার্ক, লাক হাদা এবং লেক হাউজ গ্রুপের সাংবাদিকগণ রয়েছেন। মাধু মালহোত্রা বলেন, “হুমকি, মারধোর করা এবং গ্রেফতারের মানে হলো শ্রীলংকার মানবাধিকার রক্ষাকর্মীরা যাতে রাজনৈতিক মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রে এর পরিণাম নিয়ে ভীত থাকে।
”
নিরাপত্তা কর্মকর্তাগণ গত ২৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী জেনারেল শরত ফনসেকার নির্বাচনী প্রচারণা কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে তার সমর্থক ১৩ জন সাবেক সামরিক কর্মকর্তাকে আটক করেছে। বিরোধী দলীয় আইনজীবি শিরাল লাকথিলাকার বক্তব্য অনুযায়ী তাদেরকে নির্জন কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। সরকার ফনসেকা ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে ক্যু (সামরিক অভুত্থান) করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছে।
এছাড়াও ২৯ জানুয়ারি ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) লংকা ইরিডা পত্রিকা অফিসে অভিযান চালিয়ে প্রধান সম্পাদক চন্দনা শ্রীমালতিকে গ্রেফতার করে। তিনি এখনো আটক আছেন।
নির্বাচন চলাকালে পত্রিকাটি প্রকাশ্যে বিরোধী প্রার্থী শরত ফনসেকার পক্ষে প্রচারণা চালায়। পরেরদিন ওই কার্যালয়ে পুনরায় অভিযান চালানো হয়। জনপ্রিয় ইন্টারনেট সাইট লঙ্কা ই নিউজের কার্যালয়গুলো কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দেয় এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানতে পেরেছে যে, গত সপ্তাহে অন্তত দুটি ঘটনায় অচেনা অস্ত্রধারীরা লঙ্কা ই নিউজ কার্যালয়ে ঢুকেছে।
ওয়েবসাইটের একজন প্রদায়ক শ্রীলংকান সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক প্রাজিদ একনালিগোদা নির্বাচনের দুইদিন আগে অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে অন্তর্ধানের শিকার হন এবং এখনো পর্যন্ত তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।
তার স্ত্রী যখন তার অন্তর্ধানের বিষয়টি হোমাগামা পুলিশ স্টেশনে অবহিত করেন, তখন তাকে কয়েক ঘণ্টা আটক রাখা হয়।
একনালিগোদা নির্বাচন সংক্রান্ত রাজনৈতিক ঘটনাগুলো নিয়ে সক্রিয়ভাবে প্রতিবেদন লিখেছেন এবং সাম্প্রতিককালে তিনি শরত ফনসেকার পক্ষে কথা বলেছেন।
মাধু মালহোত্রা বলেন, “রাষ্ট্রপতি রাজাপাকসের সরকারকে দেখাতে হবে যে তারা নির্বাচনোত্তরকালে নতুন করে দমন-পীড়নের পথে পা না বাড়িয়ে বরং তারা এখন মানবাধিকার লংঘনের যে ঘটনাগুলো শ্রীলংকাকে বিপর্যস্ত করে রেখেছে সেগুলোর সমাধানে কাজ করবে। ”
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অচেনা সন্ত্রাসীদের অসংখ্য ধরনের মারাত্মক আক্রমণের ঘটনার যথাযথ তদন্ত কিংবা বিচার করা হয়নি। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল শ্রীলংকান কর্তৃপক্ষের প্রতি এই ধারা পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়ে বলেছে যে, সাম্প্রতিককালের আক্রমণের ঘটনাগুলোর দ্রুত, বিস্তারিত, স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে মানবাধিকারের মানদন্ডের প্রতি তাদের যে অঙ্গীকার রয়েছে তা দেখাতে হবে।
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।