যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে
দুই সপ্তাহ আগে মালয়েশিয়ায় কলেজে পড়ুয়া কিছু ছাত্রী ভালোবাসা দিবসে “অন্তর্বাসহীন আন্দোলন” এর ঘোষণা দেয়। প্রেমিকদের প্রতি নারীর ভালোবাসা দেখানো এই অন্তর্বাসহীন প্রচারণার প্রধান লক্ষ্য। মুখ থেকে মুখে ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ক্যাম্পেইনটি এবং দ্রুত জনপ্রিয়ও হয়ে ওঠে।
এই অভিযানের বিরুদ্ধে লুরভিঞ্জেল তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন:
খুব উচ্চ-শিক্ষায় শিক্ষিত নয় এরা, তাই নয় কি? যদি হতো, তবে জানতো যে অন্তর্বাস না পরে প্রমাণ করা যায় না খাঁটি প্রেম, ঠিক? এ শুধুই লালসা ভরা - তবে অবশ্যই এটা যৌন উত্তেজনা তৈরী করবে যখন জানতে পারবেন যে আপনার অর্ধাঙ্গিনীর নিম্নাঙ্গে কোন বস্ত্র নাই, কিন্তু তাই বলে প্রকাশ্যে জানানো কেন? সমস্যা কি এই সব মানুষের?
প্রেমিকের সঙ্গকালীন শরীরের প্রতিটা ইঞ্চি মুড়ে অথবা পুরো উদোম থেকে খাঁটি প্রেম প্রমাণ করা যায় না। এসব নিয়ে যারা সন্দেহ তৈরী করে নিশ্চিতভাবে বলা যায় সে কখনও প্রেমে পড়ে নি বা ভালোবাসেনি অথবা জানে না খাঁটি প্রেমের মর্ম।
দ্যা সেলানগর ইসলামিক এফেয়ার্স ডিপার্টমেন্ট (জেএআইএস) ও অন্যান্য নাগরিক নীতিবোধ রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষ এতে বেজায় খেপে আছে। যারা অন্তর্বাসহীন আন্দোলনে যোগ দেবে তাদের খুঁজে বের করার শপথ নিয়েছে। ভালোবাসা দিবস উদযাপন নাকি ইসলামী শিক্ষার বরখেলাপ।
বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানোয় কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেছেন ড্যফোডিল নামে একজন মহিলা:
ধরে নিলাম প্রেমিকের প্রতি অনুরক্তি দেখাতে অন্তর্বাস খুলে সড়কে বের হওয়া খুবই কদর্য ….এবং সম্ভবত হ্যান্ড মিরর বা ক্যামেরা ফোনের অস্ত্র নিয়ে এক্সেলেটরের আড়ালে লুকানো কিছু যৌন-কাতর জন্তুর যোগসাজশে এই অশোভন আচরণ …… যারা ভেবেছে হয়ত তারাই সঠিক।
কিন্তু আমাদের দেশের নৈতিকতার ধ্বজাধারী পুলিশ উন্মাদ হয়ে গেছে এবং ভালোবাসা দিবসের বদমায়েশি রুখতে সতর্কতামূলক বার্তা জারি করেছে!!!??? অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া প্রদর্শকদের কথা বলছি…….মানে, একটু ভেবে দেখুন তো..যদি তারা চায় তবে তো তারা অন্য কোন দিনও অন্তর্বাস ছাড়া বের হতে পারে, ঠিক না?
অন্তর্বাস না পরলে তা কারো জন্য সমস্যা সৃষ্টি করবে না মনে করে জোশ:
আপনাদের একটা প্রশ্ন করি, একজন যদি অন্তর্বাস না পরে তবে কিভাবে তা আপনাকে আহত করতে পারে।
আপনি কি মোটেও আন্দাজ করতে পারবেন? জানতে পারবেন? আপনি কিভাবে জানবেন রাস্তায় আজ যাদের সাথে আপনার দেখা হয়েছে তারা অন্তর্বাস পরে ছিল? একজন মানুষ আন্ডারওয়্যার পরলো কিনা সেটা আপনি বুঝতেই পারছেন না বা কোনভাবেই আপনাকে আহত করছে না এমন সম্ভাবনা যখন রয়েছে তখন কেন এতো শোরগোল। এটা কোনো বিষয় না। মানুষজন কাপড়ের নিচে কি পরবে এটা যার যার একান্ত নিজস্ব ব্যাপার, অন্যদের নয়।
কর্তৃপক্ষ কিভাবে খুঁজে বের করবে কলেজের কোন ছাত্রী প্যান্টি পরে নাই - এ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন মুমসি । তারা কি ছাত্রীদের স্কার্ট তুলে দেখবে?
গড! এটা সত্যিই নয়া কিসিমের এবং জেএআইএসরা কিভাবে এর প্রতিরোধ করতে যাচ্ছে তাই নিয়ে ভাবছি?!…. তারা কি স্কার্টের নিচে কড়া নজরদারি শুরু করবে কোন কোন ছাত্রী প্যান্টি পরে নাই সেটা জানতে?!! তাহলে তো হবে আরো ভয়াবহ যৌন-অসদাচারণ, তাই নয় কি? উপলব্ধি করা যায় সেদিন কোন ছাত্রী প্যান্টি পরে নাই এ নিয়ে ছাত্ররা বাজি ধরবে এবং আন্দাজ করার চেষ্টা চালাবে।
এই প্রতিবাদ/ক্যাম্পেইনের মধ্যে অভিনবত্ব খুঁজে বের করেছেন দি আদার মালয়েশিয়া:
১. স্বতস্ফুর্ত এবং সংগঠিতভাবে এই ক্যাম্পেইনের আয়োজন, কোন রাজনৈতিক দল বা জনপ্রিয় রাজনীতিবিদের প্ররোচনায় নয়;
২. এই ক্যাম্পেইন মুখে মুখেই ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে গেছে। যা মধ্যমানের শিল্পোন্নত দেশের সারিতে দ্রুত উত্তরণের অংশ হিসাবে মালয়েশিয়ায় প্রবর্তিত ইন্টারনেট, এসএমএস এবং যোগাযোগ অবকাঠামোর নানা মাধ্যমের ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব তুলে ধরে;
৩. এই উদযাপন বা প্রতিবাদের ধরণ একেবারে অরাজনৈতিক এবং মূলত একান্ত ব্যক্তিগত যেহেতু এর উদ্দেশ্য প্রেমিকের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করা।
অন্তর্বাসহীন আন্দোলন কি আসলে পরোক্ষ প্রতিরোধের একটা পন্থা?
সমাজের নীতি নির্ধারকের ভূমিকা পালনকারী হিসাবে ব্যাপক পরিচিত ও সমালোচিত রাষ্ট্রীয় ধর্মীয় ব্যুরোক্রেসির বিরুদ্ধে এটা হয়ত একটা পরোক্ষ প্রতিবাদ। (লক্ষণীয়, এটা কেবল আমাদের অনুমান)।
সূত্রঃ মূল লেখাটি গ্লোবালভয়েসে পোস্ট করেছেন মঙ্গ পালাতিনো
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।