আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ওইটা গোলাবাড়ীর বর্গাচাষী রুস্তম আলির পোলা আবু বকরের কবর



মধুপুর উপজেলায় গোলাবাড়ী গ্রামের বর্গাচাষী রুস্তম আলীর সংসারে অভাব নিত্য দিনের অসুখ। আবার ৬ সন্তান তার। ৬ জনের মধ্যে আবুবকর সিদ্দিকী তৃতীয়। বড় মেয়ে রওশন আরার বিয়ে হয়েছে অনেক আগে। তার ছোটটা ছেলে, আব্বাস।

গোলাবাড়ী বাজারে মুদির দোকান করে। আরেক ছেলে ওমর ফারুক পড়ে ক্লাশ টেনে। স্থানীয় মহিলা মাদ্রাসায় পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে মেঝো মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা । আর সবার ছোট আদরের জুলেখা এবার প্রথম শ্রেণীতে । কিন্তু, পরিবারের সবার মধ্যেতো বটেই আশে পাশের গ্রামগুলোর মধ্যেও সবচে ভাল সুনাম আর শিক্ষিত হলো রুস্তম আলীর ৩য় সন্তান আবু বকর।

বড্ড বিনয়ী,কোমল স্বভাবের আর আদব কায়দা জানা ছেলে । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখা পড়া করে তার ছেলে যে কোন আলোচনায় কোন সুযোগে একবার কথাটা তুলতেন রুস্তম। অন্য লোকজনও রুস্তম আলীর কষ্ট দেখে বলতেন এই কামলার পোলা ভার্সিটিত পড়ে। মা বাপেরও আশা তাদের শিক্ষিত পোলা চাকরি করে সংসারের অভাব দূর করবে। তখন আর চিন্তার কিছু নেই।

বাড়িভিটাসহ ২০ শতাংশ জমি আছে পরিবারটির। বাঁশের চাটাইয়ের বেড়ায় দোচালা টিনের ঘর। ঘরে আসবাব বলে কিছু নেই। অনটনের সংসারে রুস্তম আলীর স্ত্রী রাবেয়া বেগম গহনা গাঁটি যা ছিল তা বিক্রি করে , হাস-মুরগীর ডিম পর্যন্ত বিক্রি করে ছেলের পড়ার জন্য ব্যয় করেছেন মিষ্টি মুখের তরুন আবু বকর কখনো রাজনীতি না করলেও রাজনৈতির বলির স্বীকার হয়ে গাঁয়ে ফেরত এলো। তাকে কবর দেয়া হয়েছে বাড়ির কোনার গোরস্তানে।

কবরটি এখনও কাঁচা। ওই যে খেজুর কাটা দেয়া। নতুন কবরে খেজুর কাটা দিলে রাতে শেয়াল কবরে এসে লাশ খুড়ে বের করতে সাহস পায় না। আবু বকরের মৃত্যুতে গ্রামের সহজ সরল মানুষদের ধন্ধ, সে কখনো বাজে ছেলেদের সাথে মিশেনি। খারাপ কাজ করেনি।

তাহলে কেন তাকে জীবন দিতে হলো ? আজ প্রথম আলোতে মতিউর রহমানের লেখাটার প্রশ্নগুলো দেশের সব মানুষ যদি এক সাথে বলে উঠতো! প্রধানমন্ত্রী, বকরের মা-বাবাকে কী বলবেন?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।