Bangladesh: Dream
মধ্যরাতে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফাঁসি হবে_ গণমাধ্যমে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে হাজার হাজার মানুষ মেতে ওঠে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে । বাংলার চোখসমকাল প্রতিবেদক
রাত ১২টা। কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে জ্বলজ্বল করছে হ্যালোজেন বাতির আলো। ধবধবে সাদা আলোর মধ্যেই হাজার হাজার মানুষ উল্লাস করছে। এ যেন কলঙ্কমুক্তির উচ্ছ্বাস।
এই উল্লাসের জন্যই তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন ৩৪টি বছর। অনেকে আসেন জাতীয় পতাকা হাতে। বঙ্গবল্পুব্দর খুনিদের ফাঁসি উপলক্ষে কারাগারের চারপাশে ছিল তিন স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী। ছিল রেড অ্যালার্ট। কিন্তু সেই নিরাপত্তার সব বাঁধ ভেঙে উৎসুক জনতা গভীর রাতে ভিড় করেছিলেন কারাগেটে।
রাত ১২টা ১ মিনিটে প্রথমে বঙ্গবল্পুব্দর দুই খুনি মেজর (অব.) বজলুল হুদা ও মুহিউদ্দিন আহমেদের (আর্টিলারি) ফাঁসি কার্যকর হওয়ার খবর বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচার হওয়ার
পরপরই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে কারাগেটে ভিড় জমান। সন্ধ্যা থেকেই উৎসুক মানুষ কারাগেটে আসতে শুরু করেন। রাত ১টায় ৫ খুনির ফাঁসি সম্পন্ন হওয়ার খবর কারাগেটে পেঁৗছা মাত্রই উল্লাসে ফেটে পড়েন উপস্থিত জনতা। একই সঙ্গে তারা ধিক্কার জানাতে থাকেন খুনিদের।
বঙ্গবল্পুব্দপ্রেমিক হাজার হাজার মানুষ 'জয় বাংলা, জয় বঙ্গবল্পুব্দ' স্নোগান দিয়ে প্রকম্পিত করে তোলেন পুরো নাজিম উদ্দিন রোড এলাকা।
গভীর রাত পর্যন্ত চলতে থাকে তাদের উল্লাস। রাত ২টা পর্যন্ত খুনিদের লাশ কারাগার থেকে বের করা হয়নি। একজন কারা কর্মকর্তা জানান, তাদের লাশ গ্রামের বাড়ি পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি লাশের সঙ্গে পুলিশ ও র্যাবের পৃথক দুটি গাড়ি নিরাপত্তার জন্য থাকবে। লাশ নেওয়া হবে অ্যাম্বুলেন্সে।
ফাঁসির রায় কার্যকরের খবর শুনে উপস্থিত অনেকে পরস্পরকে আবেগে জড়িয়ে ধরেন। অনেকের চোখে ছিল পানি। আবার অনেকে আনন্দে কেঁদে ফেলেন। আনন্দ ও আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়। দলমত নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ ছুটে আসেন কারাগার প্রাঙ্গণে।
সন্ধ্যার পর থেকেই পাল্টে যেতে থাকে পুরনো ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকার দৃশ্যপট। রাত ১১টার দিকে কারাগারের চারপাশের সড়কগুলোতে সাধারণের চলাফেরা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। একই সঙ্গে আশপাশের ভবনগুলোর বাসিন্দাদের ছাদে যেতে নিষেধ করেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। রাত বাড়ার সঙ্গেই জ্বলে ওঠে কারাগারের সামনের বিশাল হ্যালোজেন বাতি।
এ চিত্রই বলছে, বড় ধরনের কোনো ঘটনার আয়োজন চলছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। এর মধ্যেও ছিল দু-একজন উৎসুক মানুষের উপস্থিতি। ছিল মিডিয়াকর্মীদের ভিড়। অনেক টেলিভিশন চ্যানেল লাইভ প্রচার করেছে কারাগেটের দৃশ্য।
গতকাল সকাল থেকেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের চারপাশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।
র্যাব, পুলিশ এবং আর্মড পুলিশ মোতায়েন করা ছিল। মোতায়েন ছিলেন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা। অন্যান্য দিন গভীর রাত পর্যন্ত কারাগার সংলগ্ন দোকানপাট সরগরম থাকলেও গতকালের চিত্র ছিল ভিন্ন। সন্ধ্যার পর থেকেই দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। বঙ্গবল্পুব্দর খুনিদের ফাঁসির কথা শুনে কড়া নিরাপত্তার মধ্যেও অন্য অনেকের মতো কারাগারের সামনে আসেন ওয়ারীর বাসিন্দা আবদুল মোমেন।
তিনি জানান, 'এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। খুনিদের ফাঁসির কথা শুনে কারাগারের চিত্র দেখতে এলাম। ওদের কারাগারে নয়, পল্টন ময়দানে জনসমক্ষে ফাঁসিতে ঝোলালেই ভালো হতো। '
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।