নেতাজির দেশপ্রেম নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে সিপিএম অতীতে ভুল করেছিল বলে খোলাখুলি স্বীকার করলেন দলের শীর্ষ নেতা ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বছর দশেক আগে দলের সদ্য প্রয়াত ‘কিংবদন্তি’ নেতা জ্যোতি বসু প্রথম স্বীকার করেছিলেন, নেতাজির মূল্যায়নে তাদের বড় ভুল হয়ে গিয়েছিল। এদিন মুখ্যমন্ত্রী পূর্বসূরি শীর্ষ নেতার সুরে জনগণের সামনে শুধু ভুল স্বীকারই করেননি, তিনি এবং সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু নেতাজির পার্টির তথা বামফ্রন্টের শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতৃত্বের সঙ্গে এক মঞ্চ থেকে ২৩ জানুয়ারি দিনটি ‘দেশপ্রেম দিবস’ ঘোষণার দাবিতেও সরব হন। খবর কলকাতার বর্তমান পত্রিকার।
শনিবার সুভাষচন্দ্রের ১১৪তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে রেড রোডে নেতাজির মূর্তির পাদদেশে রাজ্য সরকার ও ফরওয়ার্ড ব্লক নিয়ন্ত্রিত নেতাজি জন্মজয়ন্তী কমিটি আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পর স্বাভাবিকভাবে আপ্লুত হয়ে পড়েন শরিক দলের সুপ্রিমো অশোক ঘোষ।
তিনি মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেবকে মঞ্চের উপরেই জড়িয়ে ধরে আশীর্বাদও করেন।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন ঐ অনুষ্ঠানে বলেন, একটা সময়ে আমরা কমিউনিস্টরা নেতাজির দেশপ্রেম নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে ভুল করেছিলাম। আসলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান, জার্মানি, ইতালির মতো ফ্যাসিবাদী দেশগুলি সোভিয়েত রাশিয়া ও তার সহযোগী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলির বিরুদ্ধে জোট বেঁধেছিল। আমরা সোভিয়েতের পক্ষ নিয়েছিলাম সে সময়। আর নেতাজির পথ ছিল ভিন্ন।
কিন্তু তিনি ভারত থেকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের অবসানের লক্ষ্যে ঐ রণকৌশল নিয়েছিলেন। আমরা সেটা বুঝিনি। নেতাজির দেশপ্রেম এবং সাম্রাজ্যবাদবিরোধী মনোভাবে সত্যিই কোনও খাদ ছিল না। তাই বছর দশেক আগে পার্টির নেতা জ্যোতি বসু প্রকাশ্যেই নেতাজি সম্পর্কে আমাদের ভুল মূল্যায়নের কথা স্বীকার করেন।
ফরওয়ার্ড ব্লকসহ চার বাম দলের তরফে ‘দেশপ্রেম দিবস’ ঘোষণার দাবিকে এদিন পূর্ণ সমর্থন জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এই প্রসঙ্গে তিনি কংগ্রেসের সমালোচনা করে বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে গান্ধীজির নিশ্চয়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। কিন্তু তাই বলে নেতাজির ভূমিকাকে অস্বীকার করে অন্যায় করছে কংগ্রেস। ধর্মনিরপেক্ষতা, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সম্পর্কে নেতাজির প্রদর্শিত পথেই আজ দেশ এগুতে চাইছে। অথচ তাকে নিয়ে কংগ্রেসের অস্পষ্ট অবস্থান দেশের মানুষের কাছে বোধগম্য নয়।
বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু এদিন বলেন, দেশপ্রেম আজ সত্যিই দেশে দুর্মূল্য হয়েছে।
সাধারণ মানুষ নয়, লুটেরা আর শোষকদের সুবিধার্থে দেশের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালে নেতাজি শুধু ব্রিটিশ নয়, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ সম্পর্কে গান্ধীজিকে আগাম সতর্ক করেছিলেন। তার সেই আশঙ্কা আজ বাস্তবে রূপ নিয়েছে। অশোক ঘোষ বলেন, আজ চরম সংকটের মুহূর্তে দেশকে রক্ষা করতে হলে ফের মানুষের মনে দেশপ্রেম জাগ্রত করতে হবে। আর তা করতে হলে নেতাজিকে উপযুক্ত সম্মান জানানো ছাড়া উপায়।
দেশপ্রেম দিবসের দাবি এখনও না মেনে মনমোহন সিংয়ের সরকার অত্যন্ত গর্হিত অপরাধ করেছে।
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।