আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২

চতুর্মাত্রিক.কম (choturmatrik.com)
পূর্ব প্রকাশের পর... সেপ্টেম্বর ৮, ২০০৯ রাত ৩:০৩ রাইন! ইশ! কতো কিছু মনে করায় দিচ্ছেন! আরেকটা গাছ ছিলো। ফুলার রোডের ঐ পাড়া। ভিসির বাড়ি আর ইউনিভার্সিটির মাঝখানে একটা আইল্যান্ড ছিলো, তিনকোনা। সেই আইল্যান্ডের মাঝখান... মাঝখানেই তো। একটা কৃষ্ণচূড়া গাছ।

আমি ল্যাবরেটরি স্কুলের যেতাম আর উইক-এন্ডে ঐ খানেই ছায়ানট, নাচ শিখতাম। কখন ফোটে কৃষ্ণচূড়া? গ্রীষ্মকালে? পুরা রাস্তায় পাঁপড়ি ছড়িয়ে থাকতো আর আমি মাঝে মাঝে তুলতাম। ডায়েরিতে রাখতাম। আমার একটা বান্ধবী ছিলো। নাম হলো দিয়া।

ও পুরনো উদয়ন স্কুল যেখানে ছিলো, তার পাশের পাড়ায় থাকতো। একদিন এমন বৃষ্টি আসলো, ওর কোনো ছাতা নাই আর আমার কাছে একটা ছাতা। আমরা দুই জন এক ছাতার তলায় আসলাম দৌড়াতে দৌড়াতে। কিন্তু বৃষ্টিতে ভিজলাম ঠিকই। পরে, আমার পাড়ার গেইট পর্যন্ত এসে ওকে দিয়ে দিলাম ছাতাটা।

আর আমি আরো ভিজতে ভিজতে বাসায় ফিরলাম। বৃষ্টিটা অনেক ভালো ছিলো। অনেক! চশমা নেয়ার আমারও শখ ছিলো জানেন? আমাদের বাসায় একটা ফ্যামিলি আসলো বেড়াতে। উনাদের তিন ছেলেমেয়ে। সবগুলার চশমা পড়তো! আমার শখ অবশ্য মিটেছে।

এখন ড্রাইভ করতে হলে চশমা পড়তে হয়। কিন্তু এখন আর ভালো লাগে না। স্পেশালি বৃষ্টির মধ্যে মহা যন্ত্রণা। তখন মনে হয় চশমায় যদি ওয়াইপার থাকতো, গাড়ির মতোন! কী দারুণ বলেন? যেই গাছটা আমি দেখতাম ঐ গাছটা আপনিও দেখেছেন। এটা একটা যোগাযোগ।

আপনার সাথে আমার, না? এই রকম আমার ভালো লাগে। মনে হয় যে আপনাকে আরো কত্তো আগে থেকেই চিনি... যখন চিনতাম না... সুন্দর করে বলসেন, অধিকারের কথা। অধিকারবোধ আর অধিকার এক জিনিস না, তাই না? বোধহয় একটা অনুরণনের মতোন... মাঝে মাঝে অধিকার জন্মাবার আগে থেকেই অনুভূতিটা থাকে... আবার শেষ হওয়ার পরও বাজতে থাকে। নিয়ন্তি -০-০-০- -০-০-০- -০-০-০- সেপ্টেম্বর ৮, ২০০৯ রাত ৩:৪৬ নিয়ন্তি, আমি এমনিতে এখন মরবিড হয়ে আছি। মৃত্যুচিন্তা করি না, এটা আসলে আমার অস্তিত্ব নিয়ে আজীবন ধরে চলমান ভয়, শঙ্কা।

আমি নিজের অস্তিত্ব হারাতে খুব ভয় পাই। এজন্য কখনই মৃত্যু নিয়ে ভাবি না। বৃষ্টি নিয়ে আমার কলেজের একটা স্মৃতি মনে পড়লো। আমি তখন একটা কোচিংয়ে পড়তাম। এক স্যারের কাছে অঙ্ক, আরেকজনের কাছে কেমিস্ট্রি।

একই গলিতে দু’জন স্যার, পড়ার টাইমটাও ছিলো পরপর। পড়া শেষ হলে হেঁটে হেঁটে বাসায় আসতাম। ওটা পুরো ছেলেদের ব্যাচ ছিলো। তারপরে মেয়েদের ব্যাচে জায়গা হয়নি বলে দু’টা মেয়ে পড়তে এলো! আর সব ছেলেগুলা অতিরিক্ত এটেনশন দেয়া শুরু করলো, বুঝেনই সতের বছর বয়েস। আমার কেনো জানি সতের বছরের তরুণীদের তখন থেকেই দূর্বোধ্য লাগতো।

কথা, চাহনি, সবকিছু। তাই এড়িয়ে চলতাম। একজনের তাতে কৃপা হলো, আমার প্রতি নজর পড়লো। অন্য সব শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে সে আমার সাথে যেচে কথা বলতো। আমি তাতে বিরাট বিব্রত হতাম, বিব্রত হলে আমার কান লাল হয়ে যায়।

যারা জানতো ব্যাপারটা সেই বন্ধুরা বিরাট ক্ষেপানো শুরু করলো! আর ক্রমেই আমার মেয়েটার উপরে রাগ বাড়তো। অগাস্ট সেপ্টেম্বরের দিকে, বৃষ্টি মৌসুমে একদিন এরকম ঝুম নামলো। আমি হেঁটে হেঁটে যাচ্ছি ফুটপাত দিয়ে, খেয়াল করলাম মেয়েটা বড়ো কষ্ট করে ছাতা সামলে যাচ্ছে। প্রচণ্ড বাতাস! ছাতা শেষমেশ ভেঙেই গেলো উল্টা হয়ে। আই দৌড়ে ওটা কুড়িয়ে দিলাম আর কী বেকুবের মতো বললাম, ‘স্যরি’, যেনো আমি ওটা ভেঙে ফেলেছি! মেয়েটা ঐ বৃষ্টির তোপের মধ্যেও হেসে ফেলেছিলো।

তারপরে ওড়না দিয়ে মাথা ঢেকে দ্রুত-হাঁটা। আমি আমার প্রায় খালি ব্যাগ (ওটার ভেতরে দুয়েকটা খাতা ছিলো) ওর মাথায় ধরলাম। মেয়েটা এমনভাবে তাকালো!!... ... বাসায় ফিরে জ্বর, ঠাণ্ডা। কোচিং বন্ধ। তারপরে পরীক্ষা চলে এলো আর কোচিংটা বন্ধ করে দিলাম।

পরীক্ষার পরে, মাঝে তিনমাস চলে গেছে, স্যারের বাসায় গিয়েছিলাম একদিন দেখা করতে। মেয়েটা হতো অন্য কোনো কোচিংয়ে চলে গেছে। দেখা হয়নি আর কোনোদিন! তখন বুঝিনাই, এখন বুঝি। এ ধরনের স্মৃতিগুলো মনে হয় মানুষকে অনেক বড়ো করে দেয়, পরিপক্ক করে দেয়। তখন যে ভাবালুতা কাজ করতো, মেয়েটার জন্য একটা করুণ কান্না পেতো মাঝে মাঝে।

মনে হতো, ওকে একবার দেখতে পেলে বেশ হয়। জীবন নীরবেই শিখিয়ে দিচ্ছে, দেখা পেলে বেশ হতো না! তাতে আমার শেখা হতো না, যে মানুষের জীবনটাই এমন। ফ্রেম ফ্রেম সারি সারি মুখ, কিন্তু কেউই কারো আপন নয়!! অনেক বাজে এখন। আপনার অফিস টাইমের বারোটা বাজাচ্ছি। স্মৃতিকাতরতা মার্জনা হউক! রাইন -০-০-০- -০-০-০- -০-০-০- সেপ্টেম্বর ৮, ২০০৯ রাত ৪:১০ ওয়াও রাইন! আপনার বর্ণনা এত্তো ভিভিড।

আমি মনে হলো দেখলাম আমার সামনে, আপনাকে, মেয়েটাকে… বৃষ্টি! কী সুন্দর সব। অনেক আগে আমি একটা গল্প লেখা শুরু করেছিলাম। ঐখানে বৃষ্টিতে একজনের সাথে প্রথম দেখা হওয়ার বর্ণনা ছিলো। আপনার কথা শুনে মনে পড়ে গেলো। ঐটাও ছাতা বিষয়ক... দেখি মনে হয় পুরানো ডায়েরিতে আছে এখনও, আজকে বাসায় যাওয়ার পরে পাঠাবো আপনাকে।

আরেকটা স্মৃতি এখন আমার মনে পড়লো। আমার একটা বন্ধু ছিলো, প্রদীপ। মানে বন্ধু আছে এখনও, কিন্তু যোগাযোগ নাই। সে মেলবোর্ন থেকে বেশ ভালো একটা ডিগ্রি নিয়ে এখন বাংলাদেশে কোন গ্রামে একটা স্কুলের হেডমাস্টার যেন। ওর বোন থাকে মেলবোর্নে, আমাকে বললো যে প্রদীপ নাকি গ্রামের রাস্তায় লুঙ্গি পড়ে মোটর-সাইকেল চালায়! এবং হাজার হলেও বিদেশে আসবে না... প্রদীপ খুব সুন্দর গান করতো।

একদিন, আমাদের বাসায় বসে গান করছে আর এই রকম সব কথা বলছে আমাকে... প্রথম প্রেমের স্মৃতি। তারপরে একটা মেয়ের সাথে অনেক ফোনে কথা বলতো, এই সব... কিছুক্ষণ পর ভাবলাম বীচ থেকে ঘুরে আসা যায়। তো, গেলাম। মেলবোর্নের ওয়েদার খুব বিখ্যাত হঠাৎ করে বদলে যাওয়ার জন্য। আমরা যখন বাড়ি থেকে বের হলাম, তখন বেশ সুন্দর রোদ।

বীচে কিছুক্ষণ পরেই দুই এক ফোটা বৃষ্টি শুরু হলো। প্রদীপ বললো, “চলো ফিরি...” তার মধ্যেই এমন ঝড় শুরু হয়ে গেলো। আর চারপাশ থেকে ধুলা উড়ে এসে একদম লাফ ঝাপ দিয়ে আমাদের গায়ে... এত্তো বাতাস, আমি প্রায় পড়েই যাচ্ছিলাম! ও আমাকে হাত ধরে একটা দৌড় লাগালো, প্রায় ১০ মিনিটের মতো, একবারও হাত ছাড়ে নাই! কী রকম অন্যরকম লাগলো তখন... কিন্তু জানেন, এর পরে আমরা কোনদিন ঐ দিনটা নিয়ে কথা বলি নাই... যেন কখনো ঘটেই নাই এটা... বা যেন আমরা ছিলাম না আসলে... অদ্ভুত না? আপনাকে হঠাৎ বলে দিলাম... এর আগে কাউকে বলিও নাই! আমি আসলে কখনই খুব নিয়মিত কিছু করতে পারি না। বললাম না আমার সব ছাড়া ছাড়া? আমার মাঝে মাঝে জানতে ইচ্ছা করে আমি আগে কেমন ছিলাম... আসলে ভুলে গেছি। বা আমি কি আমিই নাকি, সেই সন্দেহও হয় মাঝে মাঝে।

আপনি মরবিড হয়ে আছেন? জানেন মৃত্যুচিন্তা আমার সাথে থাকে সবসময়... ... আর মাঝ রাতে হঠাৎ ঘুম থেকে উঠলে আরো বেশি... কেমন খালি খালি একটা ব্যাপার হয় তখন। সন্ধ্যার সময় আগে বাসায় ফেরার সময় এরকম লাগতো... অথবা যদি কখনও দিনের বেলায় ঘুমিয়ে ঠিক সন্ধ্যার আগে আগে উঠি, তখনকার মতোন... আপনি মোটেও খারাপ না... অনেএএএএক ভালো... অনেক লিখেন আরো, আজ কাজ-টাজ মাথায় থাক। নিয়ন্তি -০-০-০- -০-০-০- -০-০-০- (চলবে)
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।