পরজীবীর মত বেঁচে আছি। সবার শ্রম আর ঘামের উপর দখলদারিত্ব করে। আমার মত অসৎ সকলে, যারা উৎপাদন ও শ্রমের সাথে যুক্ত না হয়ে বেঁচে থাকে।
শ্রমিকদের কাছেও সত্যেন সেন যেন প্রাণের চেয়েও প্রিয় ছিলেন। তিনি তাদের ব্যক্তিগত জীবন এবং তাদের বিভিন্ন ধর্মঘট, লড়াই সংগ্রামের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার ঘটাতেন।
শ্রমিকদের বিভিন্ন আন্দোলন, ধর্মঘট ও লড়াইয়ের সময় তাদের সংগঠিত করে নিজের রচিত বিপ্লবী গান শেখাতেন। যে গানে ঐ সময়ে তাদেরকে লড়াই ও সংগ্রামের দৃঢ়তায় উজ্জীবিত করে তুলতেন। তিনি রাত জেগে ঢাকেশ্বরী মিলের শ্রমিকদের নিয়ে কবি গানের দল করতেন। এভাবে তিনি শ্রমিক, কৃষক, মেহনতী মানুষদের নিয়ে গণজাগরণমূলক শ্রেণী সংগ্রামের গানের দল ও লোক কবির দল গঠন করে তাদের নিয়ে বিভিন্ন শ্রমিক-কৃষক এলাকায় ঐ সাড়া জাগানো গান গেয়ে আন্দোলন ও সংগ্রামের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতেন। সত্যেন সেন শ্রমিক-কৃষকদের মধ্যে যেমন এক প্রাণ এক আত্মা ছিলেন, বিভিন্ন আন্দোলনের অনুপ্রেরণা হিসেবেও তাঁর দায়িত্ব পালন করেছেন।
এক্ষেত্রে দেখা গেছে জেলে বন্দী অবস্থায় অন্যদেরকে তাদের লেখা লিখতে হাত দেবার জন্য অনুপ্রানিত করতেন। চল্লিশের দশক থেকেই তিনি প্রগতিশীল, সমাজতান্ত্রিক কর্মী হিসেবে জোতদার, জমিদার ও ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে জনগণকে উজ্জীবিত করে তোলার জন্য সাহিত্য সংস্কৃতির দিকটার প্রতিও আন্দোলনের ধারা প্রবাহিত করার প্রয়োজন অনুভব করেন এবং তখন থেকেই এ ব্যাপারে তিনি সচেষ্ট ছিলেন। পঞ্চাশের দশকে এসে যখন জেল-জুলুম, অত্যাচারের ফলে গণআন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়ল এবং বার বার কারাবন্দী হতে হলো তখন এ স্তব্ধপ্রায় আন্দোলনকে পুনরায় উজ্জীবিত করে তোলার জন্য কারাগারের ভেতর মূলত তিনি সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক দিকটার প্রতিই বেশি জোর দেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।