আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শীর্তাতদরে পাশে প্রপদ

চোখ খুবলে নেয়া অন্ধকার, স্ফুলিঙ্গ জ্বেলে দাও!

দেশ জুড়ে এখন তীব্র শৈত্য প্রবাহিত হচ্ছে। পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে গেছে। তীব্র শীতে গত কয়েকদিন ধরে উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কয়েক শ' মানুষ মারা গেছে। যারা বেঁচে আছেন তারা তীব্র যন্ত্রণায় রাত কাটাচ্ছেন। প্রতিটি রাত যেন তাদের কাছে জীবন-মরণের সংগ্রামে পরিণত হয়েছে।

মানুষের মৃত্যুর পাশাপাশি শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ, ক্ষতি হচ্ছে ফসলের এবং মারা যাচ্ছে গবাদি পশু। [রংপুরের গঙ্গচড়ার আলালচরে শীতবস্ত্র নিয়ে যাচ্ছেন বৃদ্ধ মহিলা] “শীত সংকটের স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে, শীতার্ত মানুষ, জাতি ও জনগণের মুক্তির লক্ষ্যে জনগণের উপর চেপে থাকা শোষণমূলক ব্যবস্থাকে আঘাত করুন” শ্লোগানকে সামনে রেখে প্রগতির পরিব্রাজক দল- প্রপদ শীতের শুরু থেকেই শীতার্তদের সহযোগিতার জন্য হাতে নিয়েছে ‘১৪তম শীতার্ত সহযোগিতা ও প্রচার কার্যক্রম’। ১৯৯৪ সাল থেকেই প্রপদ প্রতিবছর শীতার্তদের সহযোগিতায় শীত বস্ত্র সংগ্রহ ও বিতরণ করে আসছে। প্রতি বছরের মত এবারও শীতে প্রপদ অর্থ, বস্ত্র ও স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে শীতার্ত মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে কাজ করে। শীতের প্রকৃত কারণ সম্পর্কে প্রচারণার জন্য প্রপদ পোস্টার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল, ভাঁজপত্র প্রকাশ ও বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি রংপুর, নীলফামারী, কিশোরগঞ্জ, জকিগঞ্জ, খানসামা উপজেলায় একযোগে শীত বস্ত্র সংগ্রহ ও বিতরনের কাজ চলছে। [জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যাওয়া স্বেচ্ছাশ্রমিক বাড়ি বাড়ি গিয়ে সার্ভে করছেন] শীতের শুরুতে প্রপদ বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ও ক্লাসগুলোতে স্বেচ্ছাশ্রমিক আহবান করে কর্মী সংগ্রহ করে এবং শীত সংকটের প্রকৃত কারন জনগণের মধ্যে তুলে ধরে। সংগৃহীত কর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন হল ও এ্যাপার্টমেন্টগুলোতে বুথ স্থাপন করে বস্ত্র দেয়ার জন্য আহবান জানায়। পাশাপাশি বিভিন্ন শপিংমল, মার্কেট, দোকান ও জনসমাগমস্থল থেকে প্রপদের কর্মীরা টীম নিয়ে অর্থ সংগ্রহ করে। সংগৃহীত শীতবস্ত্র ও অর্থদ্বারা ক্রয়কৃত নতুন গরম কাপড় স্থানীয় ও কেন্দ্রীয়ভাবে বিতরণ করা হয়।

বিতরণ প্রথমে যে কোন একটি এলাকা নির্ধারণ করে প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি গিয়ে সার্ভে করে এবং যাদের শীতবস্ত্র প্রয়োজন তাদেরকে কুপন দিয়ে আসে এবং বিতরনের তারিখ ও সময় জানিয়ে দেয়। বিতরণের সময় সংক্ষিপ্ত আনুষ্ঠানিকতায় বিতরণ উদ্ধোধন করার জন্য শীতার্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী বয়সের শ্রমজীবী ব্যক্তিকে প্রধান অতিথি করা হয়। কুপন অনুযায়ী শীতার্তদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। বিতরণ শেষে শীতার্তদের সাথে শীতের কারণ নিয়ে মতবিনিময়সভা আয়োজন করা হয়। সবশেষে পুরো কাজের বিবরণ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপস্থিতিতে প্রকাশিত হয় শ্বেতপত্র।

এবারের শীতার্ত সহযোগিতা ও প্রচার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রপদ ইতোমধ্যে রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্ণিয়া ইউনিয়নের আলালচর এলাকায় এবং নীলফামারি জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ৪০০টি পরিবারের প্রায় ১৫০০ জন শীতার্তদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ সম্পন্ন করেছে এবং চট্টগ্রামসহ আরো তিনটি এলাকায় ৬০০টি পরিবারের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য টীম পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। শুধু শীতবস্ত্র বিতরণের মধ্যেই প্রপদ তার দায়িত্ব সীমাবদ্ধ রাখেনি। শীতার্তদের জন্য অবিলম্বে ত্রাণ বিতরণের জন্য ইতোমধ্যে তারা একটি সংবাদ সম্মেলন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি মানববন্ধন কর্মসূচী আয়োজন করেছে। প্রপদ ইতিমধ্যে ছাত্র-যুুবদের সংগঠিত করে শীতার্তদের জন্য শীতবস্ত্র ও অর্থ সংগ্রহ করে বিতরণ করছে এবং এখনও কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে। গত তের বছর ধরেই প্রপদ শীতার্ত সহযোগিতা কার্যক্রমের পাশাপাশি শীত সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য সমাজ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের সংগ্রামে জনগণকে জাগরিত করার চেষ্টা করছে প্রপদ।

এই জরুরী পরিস্থিতিতে ডাকসু ভবনে প্রপদ-এর কার্যালয়ে শীতার্ত সহযোগীতা সমন্বয় সেল স্থাপন করেছে। এর মাধ্যমে প্রপদ বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গের ত্রাণ সহযোগিতা ও উদ্যোগকে সমন্বিত করছি। ইতিমধ্যে অনেকে তাদের সংগৃহীত এবং দেয় ত্রাণ নিয়ে প্রপদের কাছে এসেছে। তাই এই জরুরী শীত সংকটে ব্যাপক ছাত্র-যুব, সব ধরণের সংগঠন এবং ব্যাপক জনগণের প্রতি প্রপদের আহ্বান, ক্ষুদ্র হলেও নিজেদের সামর্থকে সমন্বিত করে শীতার্তদের পাশে দাঁড়ান। প্রপদ-এর শীতার্ত সহযোগিতা সমন্বয় সেল-এ সহায়তা সংগ্রহ করছে এবং বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যাক্তিবর্গের উদ্যোগকে সমন্বিত করছে।

আপনার/আপনাদের সহযোগিতা বা সংগৃহীত অর্থ পাঠাতে পারেন মিলন কর, সঞ্চয়ী হিসাব নং- ০১৭১১০১০০০৩৬০১০, ডাচ বাংলা ব্যাংক লিঃ এই একাউন্টে এবং যে কারো সহায়তার জন্য নেয়া উদ্যোগকে সমন্বয় করতে যোগাযোগ করুন: প্রপদ- ডাকসু ভবন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা। ফোন: ০১৯১৩৩০৫২১৪, ০১৯১১৯৫০৩৯১।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.