আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যা ঘটেছিল তারকা হোটেলে

রঙ্গিলা বন্ধুরে....... i_mahmud2008@yahoo.com

মানবজমিন: রাত তখন ১২টা। শেরাটন হোটেলের লবি, বলরুম ও আর উইন্টার গার্ডেনে শ’ শ’ মানুষের অপেক্ষা। প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে নতুন বছরকে বরণ করতে তারা গিয়েছিলেন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে। হোটেলের বাইরে শাহবাগ আর টিএসসি’র বর্ষবরণের উচ্ছ্বাস দেখা গেলেও হোটেলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আয়োজক খানভিশন কর্তৃপক্ষের কোন সাড়া নেই। যেসব ব্যান্ড, ডিজে পার্টি, শিল্পী, উপস্থাপকের নামে পোস্টার ছাপানো হয়েছিল তাদের কেউ নেই অনুষ্ঠানে।

বারোটা বাজার কিছুক্ষণ পর কোন ঘোষণা ছাড়াই বলরুমে স্থানীয় শিল্পীদের দিয়ে শুরু হয় দায়সারা অনুষ্ঠান। এতে উপস্থিত দর্শক ও শ্রোতারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। অনেকে বলরুম থেকে বেরিয়ে এসে আয়োজকদের প্রতারণার প্রতিবাদ করেন। তারা হোটেল লবিতে আয়োজক প্রতিষ্ঠানের টিকিট কাউন্টারে গিয়ে আগের ঘোষিত শিল্পী-উপস্থাপক-ডিজে কেউ নেই কেন এর কারণ জানতে চান। তবে সেখানে অবস্থানরত কেউই কোন সদুত্তর দিতে পারেনি।

একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ লোকজন খানভিশনের টিকিট কাউন্টারে ভাঙচুর করে। শুর্বতেই বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হওয়ায় সেসময় অনেকে অনুষ্ঠান না দেখেই ফিরে যান। রাত ১টার দিকে একজন নির্ধারিত শিল্পী ও ব্যান্ড দল আসে অনুষ্ঠানস্থলে। বলর্বম আর উইন্টার গার্ডেনে শুর্ব হয় ব্যান্ড শো। তাড়াহুড়া করে অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকতে গিয়ে আবার বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।

এসময় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এক মাতাল যুবকের হামলার শিকার হন বার্তা সংস্থা ইউএনবি’র এক সাংবাদিক। দায়িত্বরত পুলিশ আর নিরাপত্তারৰীদের সামনেই তাকে ঘুষি মেরে গুলি করার হুমকি দেয় ওই যুবক। এসময় উপস্থিত সাংবাদিকরা এ ঘটনার প্রতিবাদ করে মাতাল ওই যুবককে গ্রেপ্তারের জন্য দায়িত্বরত পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যদের অনুরোধ করেন। তকে আটক করে তুলেও দেয়া হয় পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যদের হাতে। এসময় দু’জন ফটোসাংবাদিক ওই যুবকের ছবিও তুলে রাখেন।

তবে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার না করে একবার শাহবাগ আবার রমনা থানায় যোগাযোগ করতে বলেন। প্রায় আধাঘণ্টা চলে তাদের এমন নাটক। এর এক ফাঁকে বান্ধবীসহ ওই মাতাল যুবককে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় তার সহযোগীরা। পরে দায়িত্বরত পুলিশ অফিসার ঘটনার জন্য ৰমা চান উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে। তবে ঘটনা এখানেই শেষ হয়ে যায়নি।

রাত ২টার কিছু পরে সঙ্গীতানুষ্ঠান থেকে তিন ফটোসাংবাদিককে শেরাটন হোটেলের মিডিয়া ম্যানেজার সাদেক ধরে নিয়ে যান হোটেলের তৃতীয়তলায় জনসংযোগ বিভাগে। সেখানে নানারকম কটূক্তি করে তাদের ক্যামেরায় ধারণ করা অনুষ্ঠানের দৃশ্য, মাতাল যুবকের ছবি আর ক্ষুব্ধ লোকজনের টিকিট কাউন্টার ভাঙচুরের ছবি ক্যামেরা থেকে ফেলে দেয়া হয়। মিডিয়া ম্যানেজার সাদিক ও সেলস বিভাগের কর্মকর্তা আনিছুজ্জামানসহ ৩ কর্মকর্তা তাদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় অশোভন আচরণ করেন। তারা ফটোসাংবাদিকদের সেখানে আধাঘণ্টা আটকে রাখেন। তিন সাংবাদিককে অবর্বদ্ধ থাকার খবর পেয়ে হোটেলের ভেতরে ও বাইরে দায়িত্ব সাংবাদিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন।

তারা এর প্রতিবাদ করে শেরাটনের মিডিয়া ম্যানেজার সাদিকের কাছে ঘটনার ব্যাখ্যা দাবি করেন। তবে ওই কর্মকর্তা কোন সদুত্তর না দিয়েই আত্মগোপন করেন। পরে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য শেরাটন কর্র্তৃপৰ বা খানভিশনের কাউকেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। রাতে অনুষ্ঠান চলাকালে অনুষ্ঠানস্থলের ভেতরে ও বাইরে এভাবে একের পর এক ঘটনা ঘটে। হাতাহাতি, ভাঙচুর আর মাতাল হয়ে লোকজনের ওপর চড়াও হওয়ার মতো ঘটনা ঘটলেও উপস্থিত পুলিশ ও নিরাপত্তারৰীরা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে।

চরম অব্যবস্থাপনার কারণে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে না পারায় অনুষ্ঠানে যাওয়া লোকজন হোটেল ও আয়োজক কর্র্তৃপৰের প্রতি ৰোভ প্রকাশ করেন। সস্ত্রীক অনুষ্ঠান দেখার জন্য শেরাটনে গিয়েছিলেন, একটি ডেভেলপার কোম্পানির আইনি পরার্মশক মাসুদুর রহমান। তিনি জানান, সাড়ে ৩ হাজার টাকায় টিকিট কিনে অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। তবে আয়োজকদের প্রতারণার কারণে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারেনি তিনি। ব্যবসায়ী আফজাল হোসেন জানান, তিন বন্ধু ৬ হাজার টাকায় টিকিট কিনে অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন।

আয়োজকদের অব্যবস্থাপনা দেখে তারা অনুষ্ঠান না দেখেই চলে যান।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।