আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আবেদনকারী মন্ত্রী-সাংসদরা সবাই পেলেন উত্তরা পূর্বাচলের প্লট : ৭ জন পেয়েছেন দুটি করে



রাজউকের উত্তরা তৃতীয় পর্ব ও পূর্বাচল নতুন শহর আবাসিক প্রকল্পে ৩ হাজার ১১৬টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরা তৃতীয় পর্বে প্লট রয়েছে ৩৫৪টি ও পূর্বাচল নতুন শহরে ২ হাজার ৭৬২টি। এসব প্লটের মধ্যে মন্ত্রী-এমপি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও বিশেষ সহকারী এবং সমমর্যাদার ব্যক্তিরা পেয়েছেন ১৪০টি। এর মধ্যে ৭ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন। বেশ কয়েকজন এমপি ঢাকায় প্রচুর সম্পত্তি থাকার পরও রাজউকের প্লট নিয়েছেন।

৭ জন দুটি করে প্লট পেয়েছেন। এই ক্যাটাগরিতে আবেদনকারী প্রত্যেককেই প্লট দেয়া হয়েছে। মোট ছয় ক্যাটাগরির মধ্যে বাকি প্লটগুলো বরাদ্দ পেয়েছেন সরকারি চাকরিজীবী, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার চাকরিজীবী, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও অন্যান্য ক্যাটাগরির আবেদনকারীরা। নেতাদের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় সাংবাদিকদের অবশিষ্ট ৫৫টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়নি। মহাজোট সরকারের আমলে এ নিয়ে চার দফায় সর্বমোট ৫ হাজার ৬২৪টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হল।

এর মধ্যে প্লট রয়েছে পূর্বাচলে ৫ হাজার ৪২টি ও উত্তরায় ৫৮২টি। গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান বুধবার সকালে নিজ দফতরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্লট বরাদ্দের এ ঘোষণা দেন। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব মহবুব উর রহমান ও রাজউকের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোঃ নূরুল হুদাসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। রাজউক জানিয়েছে, মন্ত্রী-এমপি ও বিচারপতি ক্যাটাগরিতে আবেদনকারী প্রত্যেককেই প্লট দেয়া হয়েছে। এদের কোন লটারি হয়নি।

এমনকি ঢাকায় বাড়ি-জমি থাকলেও সেটা যাচাই করা হয়নি। এবার মন্ত্রী, এমপি ও সমমর্যাদার ব্যক্তিরা উত্তরা তৃতীয় পর্বে প্লট পেয়েছেন ৮৩টি ও পূর্বাচলে ৫৭টি। পূর্বাচলে সরকারি চাকরিজীবী ১ হাজার ৬৩২টি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী ৬৯২টি, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ১১৪টি, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারী ৫৭টি এবং অবশিষ্ট ক্যাটাগরিতে ২০৭টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়। উত্তরা তৃতীয় পর্ব প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ দেয়া হয় সরকারি চাকরিজীবী ১৬২টি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী ৬৯টি, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ১০টি, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারী ৪টি এবং অন্যান্য ক্যাটাগরিতে ২৮টি। আওয়ামী লীগের ভাগ্যবানদের তালিকা : মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও বিশেষ সহকারী এবং সমমর্যাদার ক্যাটাগরিতে উত্তরা তৃতীয় পর্বে আওয়ামী লীগের প্লটপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেনÑ ফরিদুন নাহার লাইলি এমপি, মোঃ জসিম উদ্দিন, আবদুল্লাহ আল ইসলাম, সুলতানা তরুণ এমপি, ননী গোপাল মণ্ডল, সাধন চন্দ্র মজুমদার, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ আহাদ আলী সরকার, অ্যাডভোকেট শফিকুল আজম খান, মোঃ আলী আজগর, মোঃ আবদুল ওয়াদুদ, আহমেদ নাজমিন সুলতানা, মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ, পারভিন তালুকদার, মঞ্জুর কাদের কোরাইশি, শেফালী মমতাজ এমপি, কাজী ফারুক কাদের, তহুরা আলী, নূর আফরোজ আলী, মোঃ আবদুস সাত্তার, মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, মোঃ ইসহাক হোসেন তালুকদার, শাহ জিকরুল আহমেদ, মোঃ জিয়াউর রহমান, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, শাহেদা তারেক দিপ্তী এমপি, আইন প্রতিমন্ত্রী মোঃ কামরুল ইসলাম, শ্রমিক লীগ ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসরাফিল আলম এমপি, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জুনায়েদ আহমেদ পলক, মোঃ আবু জহির এমপি, হায়াতুর রহমান খান, আনোয়ারুল আশরাফ খান, আনিসুল ইসলাম মণ্ডল, শামসুর রহমান শরীফ, আলহাজ অ্যাডভোকেট মোঃ রহমত আলী এমপি, হোসেন মকবুল শাহরিয়ার, মোঃ মোসলেম উদ্দিন, অধ্যক্ষ খাদিজা খাতুন শেফালী, মোঃ আশরাফ আলী খান খসরু, মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ, জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন, মোঃ আকরামুল করিম চৌধুরী, শওকত আরা বেগম এমপি, মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, মোঃ মুরাদ হাসান, মোঃ শহিদুজ্জামান সরকার, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী ডা. মোঃ আফসারুল আমীন, মোঃ ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা এমপি, একেএম বাহাউদ্দিন, মোঃ আসলামুল হক এমপি, মোঃ আবদুল ওয়াদুদ, মোঃ মকবুল হোসেন, আবদুর রহমান বদি এমপি, লুৎফর রহমান এমপি, জাহানারা বেগম, রণজিত কুমার রায়, মেরাজুদ্দিন মোল্লা, সাফিয়া খাতুন, মোল্লা জালাল উদ্দিন, জেডআইএম মোস্তফা আলী, বেনজির আহমেদ, জোবেদা খাতুন এমপি, খন্দকার আবদুল বাতেন, আজিজুল হক চৌধুরী, এএনএম শামসুল ইসলাম, মোঃ মতিউর রহমান, রুবি রহমান, মোঃ জাফর আলী, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, সুলতানা বুলবুল, মোঃ আবদুল জলিল, মোঃ নূরুল ইসলাম সুজন, মোঃ শাহ আলম, খালেদুর রহমান টিটো, মোঃ শফিকুল ইসলাম এবং মোঃ একাব্বর হোসেন।

পূর্বাচলে ১০ কাঠা আয়তনের প্লটপ্রাপ্ত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও বিশেষ সহকারীসহ সমমর্যাদাসম্পন্নদের মধ্যে রয়েছেনÑ আওয়ামী লীগের মোঃ মোজাহার আলী প্রধান, আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, হাবিবুন নাহার, নাসিমুল আলম চৌধুরী, মোঃ আবদুল ওয়াদুদ, জুনায়েদ আহমেদ পলক, মিজানুর রহমান খান, মোঃ গোলাম মাওলা রনি, দেওয়ান ফরিদ গাজী, মির্জা জলিল, মোঃ ফরিদুল হক খান, কেএম খালিদ, তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, আসাদুজ্জামান খান, ডা. মোঃ আনোয়ার হোসেন, আবদুল্লাহ আল কায়সার, মোঃ মাজাহারুল হক প্রধান, অপু উকিল এমপি, মোঃ আলী আজগর, লুৎফুল হাই, মোঃ আমজাদ হোসেন এমপি, মোসাম্মৎ ফরিদা আখতার, খন্দকার আসাদুজ্জামান, রণজিত কুমার রায়, আজিজুল হক চৌধুরী, যতীন্দ্রলাল ত্রিপুরা, মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ, শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়-য়া, মোঃ নজরুল ইসলাম, শামসুল হক চৌধুরী, মমতাজ বেগম, অ্যাডভোকেট মোঃ জিয়াউল হক মৃধা, গোলাম মোস্তফা, বিএম মোজাম্মেল হক, নিজাম উদ্দিন আহমেদ, কেরানীগঞ্জের এমপি নসরুল হামিদ, শেখ আবদুল ওহাব, একেএমএ আউয়াল (সাইদুর রহমান), আফাজ উদ্দিন আহমেদ, ড. আকরাম এইচ চৌধুরী এমপি, হুইপ মোঃ মুজিবুল হক, মোঃ শফিকুল ইসলাম, সিলেটের মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ডা. মোদাচ্ছের আলী ও ননী গোপাল মণ্ডল। পূর্বাচলে সাড়ে ৭ কাঠার প্লট পেয়েছেন নূরজাহান বেগম ও মাহফুজা মণ্ডল রিনা এবং ৫ কাঠার প্লট পেয়েছেন সাধন চন্দ্র মজুমদার। অন্য দলের যারা প্লট পেলেন : উত্তরায় জাতীয় পার্টির সাংসদদের মধ্যে প্লট পেয়েছেন নওয়াব আলী আব্বাস খান, একেএম হাফিজুর রহমান, নূর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরী ও নাসিম ওসমান এবং বিএনপির সাংসদদের মধ্যে পেয়েছেন আসমা জেরিন জুমু ও মোঃ জয়নুল আবেদীন। পূর্বাচলে প্লট পাওয়া সাংসদদের মধ্যে রয়েছেন জাসদের মঈন উদ্দিন খান বাদল, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, বিএনপির রেহানা আক্তার রানু, ব্যারিস্টার এএম মাহবুবউদ্দিন খোকন ও এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজান, জামায়াতের এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ এবং জাতীয় পার্টির এবিএম আবুল কাশেম ও গোলাম কিবরিয়া টিপু। সাতজনের দুটি করে প্লট : রাজউকের ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তালিকায় দেখা গেছে, মন্ত্রী-এমপি ক্যাটাগরিতে প্লটপ্রাপ্তদের অনেকেরই ঢাকায় একাধিক বাড়ি রয়েছে।

কেউ কেউ আবার পৈতৃকসূত্রে পাওয়া বাড়িতে বসবাস করছেন। অন্যদিকে ৭ জন উত্তরা ও পূর্বাচল দুটি প্রকল্পেই প্লট পাওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। তারা হলেনÑ মোঃ আবদুল ওয়াদুদ (পিতা-মৃত আবদুল লতিফ বিশ্বাস), জুনায়েদ আহমেদ পলক (পিতা-ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ), মোঃ আলী আজগর (পিতা-মৃত আবদুল ওহাব), রণজিত কুমার রায় (পিতা-নগেন্দ্রনাথ রায়), আজিজুল হক চৌধুরী (পিতা-মৃত আসাব উদ্দিন চৌধুরী), ননী গোপাল মণ্ডল (পিতা-মৃত মহেন্দ্রনাথ মণ্ডল) ও সাধন চন্দ্র মজুমদার (পিতা-মৃত কামিনী কুমার মজুমদার)। এত যাচাই-বাছাইয়ের পরও একই ব্যক্তির দুটি করে প্লট পাওয়া নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ঢাকায় নিজ নামে প্লট-বাড়ি কিংবা পৈতৃক সম্পদের প্রাচুর্য থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতাসীনদের প্লট হাতিয়ে নেয়ার ঘটনাও সাধারণ আবেদনকারীদের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে।

প্লট বরাদ্দ অনুষ্ঠানে ভুয়া সাংবাদিকদের প্লট দেয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রমাণ পেলে এদের বরাদ্দ বাতিল করা হবে। মন্ত্রী-এমপিদের প্লট বরাদ্দ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা সামান্যই পেয়েছেন। ৩৪৫ জন সাংসদ ও অর্ধশত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপদেষ্টা রয়েছে। এক্ষেত্রে আরও বেশি আবেদন জমা পড়ার কথা ছিল। কিন্তু আবেদন তেমন পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, উত্তরা-পূর্বাচলে সর্বশেষ আবেদনপত্র গ্রহণ করা হয় ৩০ এপ্রিল। তখন পর্যন্ত আবেদনপত্র পাওয়া যায় ১ লাখ ৫৭ হাজার। প্রথম লটারি অনুষ্ঠিত হয় ১৭ সেপ্টেম্বর, দ্বিতীয় লটারি ১০ অক্টোবর ও তৃতীয় লটারি ৪ নভেম্বর। Click This Link

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।