পতাকায় ফালগুন মানচিত্রে বসন্ত
মেধাবী স্কুল শিক্ষক নূরুল ইসলাম কোনদিনই কবিতা লেখেননি
নিজের বাগান থেকে কখনই ছেঁড়েননি তাজা কোন গোলাপকলি
শ্যাম্পুতে তার ঝাকড়া চুল ব্যাকব্রাশে পরিপাটি দেখে নাই কেউ।
তিনি পরতেন ঢোলা পাজামা, ভাঁজপড়া পানজাবি আর হাউয়াই চপ্পল
এমনি হাওয়ায় হাওয়ায় ভেতরের পথে স্বাগত হয়েছিল তার সুবর্ণ যৌবন
পিতামহ বলেছিলেন- একজন লক্ষ্ণী বৌমা ঘরে আনতে চাই রে নুরুল!
বাবা প্রশ্নহীন থেকে স্বহাস্যে পালকিতে চড়ে বসলেন বিনম্র লজ্জায়-
কিছুই না জেনেÑ কোথায় গন্তব্য, কোন সে মুখ? লক্ষ্ণী না স্বরস্বতী!
সেই প্রশ্নহীন অজানা ঘোমটার আড়ালে যিনি ছিলেন- তিনিই আমার মা।
নতুন দিনের প্রথম প্রহর থেকে যিনি ঘরবারান্দা উনুন রেখেছেন পরিপাটি
আনকোরা দুই কাঁখে দূরের পুকুর থেকে জল এনেছেন নতুন কলসি ভরে
উনুনের মুখে ফুঁক দিয়ে ভেজা ভেজা চোখে রান্না করেছেন তিনবেলা
ভালোবাসার চাঁদর মুড়িয়ে আগলে রেখেছেন আমাদের শৈশব-কৈশোর।
একদিন যৌবনের হাত ধরে সেই আমরাই ভালোবাসার পথে পা বাড়ালাম
তারপর ঠোঁটে ঠোঁট রেখে পরস্পরের চোখের ভাষায় শিখলাম শুদ্ধ নামতা
সবকিছু ছিল আলোতারায়; তবু শেষ থেকে খুনসুঁটি ছাড়া প্রাপ্তির খাতা শূন্য!
আমাদের ভালোবাসার পারিপার্শ্বিক শব্দগুলো কী ভীষণ ক্ষীণস্বরে উচ্চারিত
জীবন থেকে জীবনে প্রবাহিত হবার আগেই জলোচ্ছ্বাসে ভাসে তার শরীর
অথচ সেদিন অচেনা মেয়ের ঘোমটা সরিয়েই বাবা বলেছিলেন- কী সোন্দর!
শুধু আমার বাবা নয়; কী সোন্দর শব্দটি উচ্চারিত হয়েছে অনেক বাবার মুখে
আজও সেই সব মায়ের জন্য মা ছাড়া অন্য কোন উপমা উতপ্রেক্ষা যথেষ্ট নয়।
মেধাবী স্কুল শিক্ষক প্রয়াত নূরুল ইসলাম কোনদিন একচ্ছত্র কবিতা লেখেননি
তার ছিল কাব্যহীন কারবারি তবু ভালোবাসা উচ্চারণে বলতেন- কী সোন্দর!
অথচ আজও আমার অসংখ্য কবিতায় বাবার সেই প্রিয় বাক্যটি লেখা হয়নি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।