অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক, জ্যোৎস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই
আমরা একটা মাটির ঘরে থাকতাম। মাটির ঘরের দেয়াল ছিলো নিঝুম দিঘীর জলের মত ঠান্ডা। আমি মাটি ছুঁয়ে গাঁদা ফুল হতাম। আমার সখি বলতো- ওর বাবা ওদের তিন ভাই বোনের জন্য তিন বিশাল বাড়ি করেছেন। আমরা জানতাম বাবার বুক পকেটে এক সোনার সিন্দুকের চাবি ছিলো।
শুধু আমরা জানতাম না সিন্দুকটা কোথায় ছিলো। জানলে আমি এক সোনার নুপুর গড়াতাম। সোনার নুপুর পায়ে আমি মাটির ঘরে শুয়ে জোছনা গায়ে মাখতাম।
***********
সোনার রঙটা কেমন যেনো চোখে লাগে আমার এখন- বড্ড বেশি অসুন্দর। তবে সোনা নাকি দেহের সৌন্দর্য বাড়ায়।
মা বলতো-মার নাকি অনেক সোনার গয়না ছিলো। বাবা সব চুরি করে নিয়ে গেছে। আমি যদি পারতাম তাহলে মাকে একটা নাকফুল কিনে দিতাম। আমি জানি, মা এতটুকুন সোনা পড়েই স্বর্গের অপ্সরী হতো।
******
একটা সময় আমরা অনেক ক্ষুধার্ত ছিলাম।
আমরা চার ভাই বোন ভাগাভাগি করে শুকনো পাউরুটি খেয়েছি। তখন এতেই আনন্দ ছিলো। আজ ফ্রিজ ভর্তি এত খাবার! তবুও কেনো যেন ক্ষুধা পায় না!
***********
মাকে কখনো সাজতে দেখিনি আমি। যদিও মা বিয়ের আগে আমার মত সাজুগুজুর পাগল ছিলো। মা যে কতটা কষ্ট পেয়ে বদলে গেছে....কতটা নীল হয়ে গেছে তা চোখ দিয়ে দেখে বুঝা যায় না।
আমি নীল হতে চাই না।
********
মোহনকে মেরে ফেলা হয়েছিলো। মোহন, বয়সে নাকি আমার দুবছরের ছোট ছিলো। মোহনের কথা ভেবে মা অনেক কাঁদে। বড়পা বলে- মোহন থাকলে কত্ত ভালো হতো!।
মোহন বেঁচে থাকলে তাকে আমি গলা টিপে মেরে ফেলতাম। ভালোবাসা/আদরের কমতি আমার পছন্দ না।
**********
দাদিমা অনেক পান খেতেন একটা সময়। দাদীমার মুখের চাবানো পান খেতে আমি ভীষন ভালোবাসতাম।
একদিন বিকেলে, খেলা শেষে দাদীমাকে দেখলাম রানাকে কোলে বসিয়ে আদর করছেন।
অথচ দাদীমার আদর আমরা কখনো পাইনি।
রানা কখনোই আমার খেলার সাথী ছিলো না। ওর বাবা যখন ওকে মারত তখন আমরা আনন্দ পেতাম।
আর অন্যদিকে-আমি আর কক্ষনো দাদীমার কাছ থেকে পান খেয়ে ঠোঁট রাঙাইনি।
*******
আমি হিমু হতে চাই।
হিমুদের আবেগ থাকতে নেই। আমি কক্ষনো তোমার চোখে চোখ রাখবো না। যদি তোমার চোখের নীল আর আমার চোখের নীল মিশে একাকার হয়ে যেতো তাহলে সারা পৃথিবী জেনে যেতো কি গভীর প্রেম ডুবে আছে জলে!
জানো, আমি সেদিন স্বপ্নে বাবাকে খুন করেছি!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।