আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রত্নস্থানকে বিজ্ঞাপণে ব্যবহারের প্রতিবাদ জানাই।

কতো কী করার আছে বাকি..................

আজ সকালেই বাংলালিংকের একটা বিজ্ঞপণ দেখলাম লালবাগের কেল্লার পিছন দিকের বদ্ধ খিলানগুলোতে বসে আছে সারি সারি একগাদা মেয়ে আর ছেলে। সবাই জুটি বেঁধে। সবার হাতে মোবাইল, ফ্রি অফার পালন করে যাচ্ছে তারা। এমনিতে এই জায়গায় বসে সাধারাণত এই বয়েসের ছেলে মেয়রা প্রেম করে থাকে। এইটাও ঠিক না।

কিন্তু এসব দেখার কেউ নাই। আর আজ দেখলাম বাংলা লিংকের বিজ্ঞাপন। বিষয়টা চরম হতাশাজনক। এই বিজ্ঞাপণ প্রত্নস্থানের কনটেক্সটকে বিকৃত করে। একটা প্রত্নস্থান তার নিজস্ব ইতিহাস আর নিদর্শন নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।

তার যে কোন প্রকার ব্যবহারে অথবা পরিবর্তনে কোন প্রকার বিকৃতি বা ভুল ইতিহাস যেন তৈরি না হয় সেই খেয়াল রাখা দরকার। যেমন আমাদের দেশের অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা আছে যার সংস্কারের সময় আধুনিক সময়ের ইট বা প্লাস্টার ব্যবহার করা হয়েছে। এসব কাজ ইতিহাসকে হত্যার নামান্তর। বাংলালিংকের এই বিজ্ঞাপন দেখে মনে হয় আজ থেকে চার পাঁচশো বছর আগে আমাদের দেশের তরুণিরা তরুণরা মোবাইল ব্যবহার করতো, এই ধরণের পোশাক পড়তো। তাছাড়া এই বিজ্ঞাপণের জন্য শ্যুটিং এর সময় বা ছবি তোলার সময় স্থানটির কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা ভাবতে কষ্ট হয়।

সবাই দিব্বি জুতা পড়ে এমন একটি প্রত্নস্থানে ঘুরে বেড়িয়েছে। একটা প্রত্নস্থান সম্পর্কিত বোধ যাদের আছে তারা এ ধরণের কাজ কখনোই করবে না। কিন্তু এই ধরণের পুঁজিপতি প্রতিষ্ঠানগুলো নানা জায়গায় প্রত্নস্থান ধ্বংস করে হোটেল বা আবাসন গড়ে তুলেই ক্ষান্ত হয় না। তারা এখন তাদের বিজ্ঞাপণের কাজেও ব্যবহার করতে শুরু করেছে আমাদের দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নস্থান সমূহকে। বাংলাদেশে প্রচলিত প্রত্নতাত্ত্বিক আইনগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে প্রণীত ও ১৯৭৬ সালে সংশোধিত পুরাকীর্তি আইন- . ২৬ নং অনুচ্ছেদে সুষ্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কোনো সংরক্ষিত পুরাকীর্তি বা তার অংশবিশেষের আলোকচিত্র গ্রহণ করতে পারবে না।

বাংলালিংক সহ ব্যাবসায়ি প্রতিষ্ঠানগুলোর এমন আগ্রাসি বাণিজ্যের থাবা থেকে আমাদের ইতিহাস প্রত্নতত্ত্বকে রক্ষা করতে হবে। প্রতিবাদ জানাই প্রত্নস্থানের এমন বিকৃতির। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তরা এগিয়ে আসবেন প্রত্সস্থানকে এভাবে ধ্বংস থেকে রক্ষা করতে- এই আহ্বান জানাই।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.