তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মে।
প্রাইভেট গাড়িতে উঠলেই ঘুম আসে। সেটা দেশে, বিদেশে সমান তালেই হয়। কোম্পানীর কাজে গাড়ি নিয়ে অন্য অফিসে যেতে হতো। দুরত্ব প্রায় ৫০০ কিমি।
প্লেনে গেলে তাড়াতাড়ি হয়। কিন্তু কিছু হার্ডওয়্যারও সাথে নিতে হয় বলে গাড়িই ভরসা। ড্রাইভিং লাইসেন্স করার আগ পর্যন্ত কলিগদের সাথে যেতাম। গাড়ি হাইওয়ে উঠতেই শত চেষ্টায় চোখ খোলা রাখা মুশকিল ছিলো। সাধারনত ৫/৬ ঘন্টার লং ড্রাইভ হতো।
ড্রাইভিং লাইসেন্স করার পর এখন প্রানের ভয়ে ঘুম আসে না। অবশ্য কিছুটা গাড়ির ভয়ও আছে। গাড়িতে একটু দাগ লাগলেই মনে হয় কইলজ্যাতে কেউ ছুরি মারছে। প্রথম প্রথম টাকার জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্সে হাত দেইনি। পরবর্তিতে বেশ অল্প খরচেই করে ফেল্লাম।
দেশে থাকাকালিন সময় থেকেই মাছ ধরার সখ। যদিও আমার ধৈর্য্য বেশ কম। বর্শিতে মাছ ঠুকর না দিলে মেজাজ খারাপ হয়ে যেতো। আমার সাথে মামাতো ভাইকে দেখতাম অনেকক্ষন ধৈর্য্য ধরে মাছ ধরতে। সাধারনত আমাদের ধরা মাছগুলো বাসায় খুব একটা কাজে লাগতো না।
হাস, মোরগই খেতো। অনেক বড়ো পরিবার ছিলো। দুই-তিনটি মাছে কিছুই হতো না। তারপরও আমাদের মাছ ধরার কাজে কোন অবহেলা ছিলো না। অনেক সময় মাছ ধরে অনেককেই ফ্রি দিয়ে দিয়েছি।
বর্ষায় টিলার নীচে পানি আসলে আমাদের সুখের দিনের শুরু। মা-বাবা শত পিটুনির ভয়েও কাজ হতো না। কলেজ/ইউনিতে থাকাকালীন বিভিন্ন পরিচিত লোকজনের সাথে চুক্তিভিত্তিক মাছ ধরতে যেতাম। আমাদের কাজ ছিলো শুধু মাছ ধরা।
এখানে আসার পর অনেকদিন নদীর পাড় দিয়ে হেটেছি আর লোকজনের মাছ ধরা দেখেছি।
কিন্তু লাইসেন্স করতে কিছুটা ঝামেলা ছিলো। এইসব দেশে সব জায়গায় মাছ ধরা যাবে না। নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় শুধু মাছ ধরতে পারবে। তাও যাদের লাইসেন্স আছে শুধু তারা মাছ ধরবে। অন্যথায় জেল জরিমানা আছে।
গ্রীষ্মের লম্বা ছুটির দিনগুলোতো মোটামুটি ঘটি-বাটি নিয়ে মাছ ধরতে যাওয়া যায়। সখটাকে পকেটে রেখে দিয়েছিলাম এতোদিন।
গত সপ্তাহে লাইসেন্সের জন্য ভর্তি হয়ে গেলাম। পকেটে ব্যাংক কার্ড ছিলো। সাধারনত পকেটে ক্যাশ টাকা রাখা হয় কম।
কার্ড দিয়েই সব জায়গায় পে করা যায়। কিন্তু উনারা ক্যাশ টাকা নিবেন। কি আর করার। প্রায় ৩০ মিনিট ঠান্ডা আর বৃষ্টির মধ্যে হেটে অটোমেট থেকে টাকা তুলে এনে ভর্তি হলাম। বেশ ভালোই চার্জ করলো।
ঐ দিনই দুই ঘন্টা ক্লাস। অফিস শেষ করে রাত করে ক্লাস করা । এই ফাজলামী আবহাওয়ায় শনি রবি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্লাস চলবে চার সপ্তাহ। তারপর পরীক্ষা। ৬০ টা প্রশ্নের তিনটা ভুল গেলেই ফেলটুশ।
মাসখানেক সময় আছে। ফেল মারবো না আশা করি। এখন থেকে অফিসে আসতে যেতে আবারো বই নিয়ে দৌড়াদৌড়ি। ছুটির দিনেও ভোর ৬টায় ঘুম থেকে উঠতে হবে। আমার পড়াশোনা ট্রাম কেন্দ্রিক।
বই নিয়ে ট্রামে উঠে পড়ি। ট্রামের শেষ ষ্টপেজ থেকে শুরুর ষ্টপেজে আসে। আবারো যায়। এদিকে আমার রিভিউ ভালোমতোই হয়ে যায়। পরীক্ষার সময়ও ট্রামে উঠে পড়া রিভিউ দিতাম।
ছবি নেট থেকে সংগ্রিহীত
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।