আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শখের ছবি তোলা

সহসচল মনি শামিমের লুকিয়ে রাখা প্রতিভার বিকাশে আমার অল্প হলেও অবদান রয়েছে-- এই কৃতিত্বটুকু নিয়েই লেখা শুরু করছি। ছবি তোলা শখের হলেও আমার প্যাশনে পরিণত হতে পারেনি। যে কারণে ছবি তেমন তোলাও হয়না। হয়তো সমায়াভাব একটি বড় কারণ। ঠিক একই কারণে সাজিয়ে গুছিয়ে আর ছবি তোলা হয়ে ওঠেনা।

ঘটা করে বাইরে যাব--সেটাও এখন হয়না। ঘরে বসে তো আর ফটোগ্রাফি হয়না!
মনি শামিমের কথা বলছিলাম। মনি'র কথামতোই একটা ৮৫মিমি এফ ১.৮ প্রাইম নিলাম। বেশ শক্তপোক্ত লেন্স, হাতে নিয়ে ভালই লাগে। সস্তা সস্তা ভাব নেই।

গুগল করে দেখবেন এই লেন্সের প্রশংসায় সবাই পঞ্চমুখ। কিন্তু আমার মন হল দৈব চলকের মত। এখন মনে হচ্ছে ১০০মিমি ম্যাক্রো লেন্সটা কিনলে এক ঢিলে দুই পাখি মারা হয়ে যেত-- পোর্ট্রেইট করা যেত, ম্যাক্রো করে পেঁয়াজ-মরিচের ছবিও তোলা যেতো।
যার ছবি তোলার সময় হয়না সে তখন অন্যের ছবির সমালোচনা করা শুরু করে। এটাই মনে হয় নিয়ম।

সেজন্য নিজের ছবির সমালোচনা দিয়েই আজকেই ছবিব্লগ। এই লেন্সটি পোর্ট্রেইট করার জন্য খ্যাত। তাই শুধু পোর্ট্রেইগুলোই দিলাম।
১।

Exposure 0.003 sec (1/320)
Aperture f/8.0
Focal Length 85 mm
ISO Speed 100
Exposure Bias 0 EV
২।



Exposure 0.001 sec (1/1000)
Aperture f/3.5
Focal Length 85 mm
ISO Speed 100
Exposure Bias +2/3 EV
১ ও ২ নম্বর ছবিদুটো তোলা হয়েছে এমন একটা দিনে যেদিন বাইরে ভীষণ ঠান্ডা ছিল। আমেরিকার পূর্বদিক (ইস্ট কোস্ট) তখন বরফের নিচে চাপা পড়ে ছিল। আর আমাদের এখানে ঠান্ডা থাকলেও ঝলমলে রোদ এসে মনটা আনন্দে ভরে দিচ্ছিল। প্রথম ছবিটি দাঁড়িয়ে একটু নিচের দিকে ঝুঁকে তোলা হয়েছে। চেয়েছিলাম এমন একটা পারস্পেক্টিভ আনতে যেন মনে হয় অনেক উপর থেকে তোলা।

খুব ভালো না হলেও খারাপ হয়নি। তবে ছবিতে একটা বড় খুঁত আছে। উপরের ডান কোনে কার্পেটের উপর শুকনো পাতার ছিন্ন অংশ দেখা যাচ্ছে। বারান্দার দরজা একটু খুলেছিলাম, সম্ভবত তখনই ঢুকে পড়েছে।
২ নম্বর ছবিটি সেই তুলনায় অনেক উন্নত।

তবে খুব ভালো করে খেয়াল করলে দেখা যাবে বাচ্চাটা আউট অফ ফোকাস হয়েছে। অনেকেই এরকম আউট অফ ফোকাস পছন্দ করে তবে এক্ষেত্রে বাচ্চাটাকেও ফোকাসে আনা গেলে হয়তো ভাল হতো।
৩।

Exposure 0.013 sec (1/80)
Aperture f/1.8
Focal Length 85 mm
ISO Speed 1000
বাচ্চার টেডি বেয়ারের ছবি। লক্ষণীয় বিষয় হলো এপারচার।

এই লেন্সের এটিই সবচেয়ে বড় এপারচার। তার পরেও ছবির কোয়ালিটি যথেষ্ট ভালো। ছবিটি নেয়া হয়েছে আনুমানিক সাড়ে তিন ফুট দুর থেকে। কাছে থেকে তোলার কারণে এবং শ্যালো জমিনের গভীরতার কারণে টেডির মুখটুকুই শুধু ফোকাসে এসেছে। পেট আউট অফ ফোকাস হয়ে গিয়েছে।

ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার কোয়ালিটি খুবই চমৎকার, খুবই মসৃণ।
৪।

Exposure 0.01 sec (1/100)
Aperture f/2.8
Focal Length 85 mm
ISO Speed 10000
এই ছবিটির বিশেষত্ব হল এর আইএসও। ১০ হাজার আইএসওতেও কোয়ালিটি যথেষ্ট ভালো। বোঝা যায়না বললেই চলে।

রাতে ঘরের ফ্লোর ল্যাম্পের আলোয় তোলা হয়েছে। শিশুটি যেদিকে তাকিয়ে আছে সেদিকেই ল্যাম্পটির অবস্থান। সম্ভবত ২৫০ওয়াটের আলো। তোলা হয়েছে আনুমানিক ৩ মিটার দূর থেকে। ২.৮ এপারচারের কারণে ছবির মূল সাবজেক্ট স্পষ্ট ফোকাস হয়েছে।

তবে এপারচার আরেকটু বাড়িয়ে দিলে (অর্থাৎ নাম্বার কমিয়ে দিলে) হয়তো পিছনের স্ট্রলারটা আরেকটু ব্লার করা যেত। সেক্ষেত্রে সাবজেক্টের কিছু অংশ আউট অফ ফোকাস হয়ে যেত।
৫।

Exposure 0.01 sec (1/100)
Aperture f/2.5
Focal Length 85 mm
ISO Speed 3200
দুপুর বেলা ঘরের আলোয় তোলা ছবি। ডান দিক থেকে কাচের জানালা দিয়ে আলো আসছে।

জানালায় সাদা ক্রোশে কাপড়ের পরদা থাকায় সফট একটা টোন এসেছে। এক্সপোজার পার্ফেক্ট মনে হচ্ছে তবে ছবিতে একটা পারপল টোন এসেছে। কেন এসেছে সেটা আন্দাজ করতে পারছি কিন্তু ফিক্স করতে পারিনি। টোনটা আসার কারণ হলো বাচ্চার ডানদিকে বিছানার উপর নীলচে বেগুনী রঙের কুশন ছিল। সম্ভবত সেটার এফেক্ট পড়েছে।


৬।

Exposure 0.02 sec (1/50)
Aperture f/1.8
Focal Length 85 mm
ISO Speed 400
Exposure Bias 0 EV্
এই ছবিটির এক্সপ্রেশন আমার কাছে খুবই আকর্ষণীয়। সন্ধ্যায় তোলা। বাম দিক থেকে ২৫০ ওয়াটের ফ্লোর ল্যাম্প থেকে আলো এসেছে। ব্যাকগ্রাউন্ডটি ইচ্ছে করেই ওরকম বেছে নিয়েছিলাম।

কিন্তু ছবি তোলার পরে মনে হয়েছে সাবজেক্টকে ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আরো দূরে নেয়া দরকার ছিল। তাহলে ব্যাকগ্রাউন্ড আরো সুন্দরভাবে ব্লার হয়ে হয়তো দারুণ একটা এফেক্ট দিতো। কিন্তু ঘরে স্হান সংকুলান হয়নি। ট্রাইপডে ক্যামেরা বসিয়ে ছবি তোলা হয়েছে। ট্রাইপড পেছানোর উপায় ছিলনা।

৪০ডি ক্রপ ক্যামেরায় তোলার কারণে ফিল্ড অফ ভিউ প্রায় ১৩৫মিমি হয়ে গিয়েছে। যে কারণে এই সমস্যাগুলো সমাধান করা যায়নি।
বাকি সবগুলো ছবি ক্যানন ৬ডি ফুলফ্রেইম ক্যামেরায় তোলা।

সোর্স: http://www.sachalayatan.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।