Fragrance of Peace
lrom Sharmila
When life comes to its end
You, please transport
My lifeless body
Place it on the soil of Father Koubru
To reduce my dead body
To cinders amidst the flames
Chopping it with axe and spade
Fills my mind with revulsion
The outer cover is sure to dry out
Let it rot under the ground
Let it be of some use to future generations
Let it transform into ore in the mine
I'll spread the fragrance of peace
From Kanglei, my birthplace
In the ages to come
It will spread all over the world.
*********************************************
উপরের কবিতাটি ভারতের মনিপুর রাজ্যের কবি 'ইরোম শর্মিলা'র লেখা। দীর্ঘ ৯ বছর আগে ২০০০ সালের ২ নভেম্বর 'ইরোম শর্মিলা' ভারতের “Disturbed” এলাকা হিসাবে চিহ্নিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মুনিপুর রাজ্যের উপর ১৯৮০ সাল হতে কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক আরোপিত Forces (Special Powers) Act 1958 (AFSPA) নামক কালা-কানুন প্রত্যাহারের দাবিতে আমরণ অনমন শৃরু করেন। AFSPA নামক কালা-কানুনের বলে সামরিক-অধাসামরিক বাহিনীর যে কোন স্তরের সদস্য কোন ওয়ারেন্ট ব্যতিত যে কাউকে শুধু গুলি করতে বা গ্রেফতার করতেই পারে না , এই সাথে যে কোন সন্দেহভাজন কে হত্যার ক্ষমতা রাখে।
২০০০ সালের ২ নভেম্বর আধা সামরিক বাহিনী Assam Rifles মনিপুরের Malom এ ১০ তরুণ কে গুলি করে হত্যার পর 'ইরোম শর্মিলা' তার প্রতিবাদে আমরণ অনশণ শুরু করেন। অনশণের ৩য় দিনের মাথায় ' আত্নহত্যা ' প্রচেষ্টার অভিযোগে 'ইরোম শর্মিলা' গ্রেফতার হন এবং তাঁকে পরে আদালতের হেফাজতে নেওয়া হয়।
পুলিশ কাস্টডিতে তাঁর নাক দিযে নলের মাধ্যমে তরল খাদ্য খাওয়ানো হয়। সেই প্রক্রিয়া দীর্ঘ ৯ বছর পর আজও অব্যহত আছে।
২ অক্টোবর ২০০৬ মহাত্মা গান্ধির জন্মদিন উপলক্ষে 'শর্মিলা' মুক্তি পেযে গোপনে দিল্লি চলে যান এবং সেখানে ভাস্কর্য 'জনতার মন্তর' এর পাদদেশে অনশন শুরু করেন। ফলে তাকে পুনরায় গ্রেফতার করে All India Institute of Medical Sciences' hospital (AIIMS) এ ভর্তি করা হয়।
এ সময় প্রতিবাদের মুখে মনিপুর শহরের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে AFSPA শিথিল করা হয়।
কিন্তু AFSPA এর প্রতিবাদকারীরা উক্ত কালাকানুনের পূর্ণ অপসরণ দাবী করেন। তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে ২৮ নভেম্বর ২০০৬ শর্মিলা জোড় করে তার নাকে সংযুক্ত খাদ্যনল করে খুলে ফেলেন। আজও নিজ দেহ কে রণাঙ্গনে পরিনত করে শর্মিলার 'মনিপুরবাসী'র গনতান্ত্রিক অধিকারের দাবীতে জীবনপণ লড়াই অব্যহত আছেন।
কবি ইরোম শর্মিলারে লড়াই- এর দিনলিপি ।
My Body My Weapon
আজ ১ নভেম্বর ২০০৯ Tehelka অনলাইন এ চলচ্চিত্র নির্মাতা 'কবিতা যোশি' কর্তৃক মনিপুরের রাজধানী ইম্ফলে বন্দী শর্মিলার সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়।
আমাদের দেশে মানুষের মুক্তি সংগ্রামে নিবেদিত কর্মীদের জন্য অনেক শিক্ষণীয় বলে আমার মনে হওয়া এখানে স্বাক্ষাৎকার টি অনুবাদ করলাম।
কবিতা যোশী ঃকেন তুমি এই অনশণ শুরু করেছিলে?
শর্মিলা ঃ আমার মাতৃভূমির জন্য। যতক্ষন পর্যন্ত Armed Forces (Special Powers) Act 1958 সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা না হবে , ততক্ষন আমি আমার অনশণ থামাবো না।
কবিতা যোশী ঃ যে ঘটনা তোমাকে এই সিদ্ধান্তের দিকে ধাবিত করেছিল, তুমি কি সে সম্পর্কে আমাকে কিছু বলবে?
শর্মিলা ঃ আমি 'মালোম' এ একটি সভায় অশ গ্রহণ করতে গিযেছিলাম। সভা টি ছিল কিছু দিন পরে একটি শান্তি মিছিল করা সংক্রান্ত।
সে সময় পত্রিকার প্রথম পাতায় মৃতদেহগুলোর ছবি দেখে আমার মন কে প্রচন্ড আলোড়িত করেছিল। সেই মৃত্যুর ঘটনা আমকে এই পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য শক্তি জুগিয়েছিল। কারণ এ ভিন্ন আমার কাছে সেনাবাহিণী কর্তৃক সাধারণ জনগণের উপর নির্মম অত্যাচারের বন্ধ করার আর কোন পথ খোলা ছিল না। আমার কাছে ' শান্তি মিছিল' অর্র্থহীন মনে হল ; যদি না আমি অবস্থার পরিবর্তনের জন্য কিছু করি।
কবিতা যোশী ঃ কিন্তু এই বিশেষ পথ কেন বেছে নিলে? কেন আমৃত্যু অনশণ?
শর্মিলা ঃ এই একটি পথই আমার জন্য খোলা ছিল , যা আমি নিজের আত্মিক শক্তিতে করতে পারি।
কবিতা যোশী ঃ কিন্তু তুমি কি তোমার নিজের কিংবা তোমার শরীর-স্বাস্থ্যের উপর এর বিরূপ প্রভাবে কথা বিবেচণা করবে না?
শর্মিলা ঃ এটা স্ব আরোপিত কোন নির্যাতন নয় । কিংবা এটা নিজের উপর কোন শাস্তি নয়। আমি এটাকে আমার উপর আরোপিত দায়িত্ব বলে বিবেচনা করি।
কবিতা যোশী ঃ তোমরা পরিবার তোমার এই অনশণ কে কিভাবে দেখে?
শর্মিলা ঃ আমার মা আমার সিদ্বান্তের সকল কিছু অবগত। যদিও তিনি একজন নিরক্ষর সাধারণ মানুষ , কিন্তু তিনি আমার উপর আরোপিত দায়িত্ব ভার বহন করে নিতে আমাকে সাহস যোগান।
কবিতা যোশী ঃ তোমার মায়ের সাথে শেষ কবে দেখা হযেছে?
শর্মিলা ঃ পাঁচ বছর আগে। আমাদের দুই জনের মাঝে একটা বোঝাপড়া আছে। যত দিন না আমার দাবি পূর্ণ হবে....... আমার অঙ্গিকারপূর্ণ হবে , ততদিন আমাদের আর দেখা হবে না।
কবিতা যোশী ঃ তোমাদের দুই জনের জন্য তা নিশ্চয়ই খুব কঠিন........
শর্মিলা ঃ খুব কঠিন নয়......(চুপ করে থেকে) জানি না কিভাবে এটাকে বুঝাই। আমরা প্রত্যেক নির্দিষ্ট কর্তব্য নিযে এসেছি।
কবিতা যোশী ঃ তুমি কেন কাস্টডিতে? এর প্রকৃত কারণ কি?
শর্মিলা ঃ এটা আমার নিজ ইচ্ছায় নয়। রাষ্ট্র মনে করে আমার এই অনশণ বেআইনী।
কবিতা যোশী ঃ কিন্তু রাষ্ট্র বলছে যে, তোমার আমরণ অনশণ হচ্ছে আত্মহত্যার প্রচেষ্টা , যা বেআইনী।
শর্মিলা ঃ যদিও তারা এটা ভাবতে পারে , কিন্তু আত্মহত্যার কোন ইচ্ছা আমার নেই। যদি আমি আত্মহত্যা বাতিকগ্রস্ত হতাম , তবে তোমরা এবং আমার এই কথব-কথন কিভাবে সম্ভব হত?
কবিতা যোশী ঃ তুমি এভাবে কত দিন চালিযে যেতে চাও?
শর্মিলা ঃ আমি জানি না, তবে আমি আশাবাদী।
আমার অবস্থার সত্যের পক্ষে আর সত্যের চুড়ান্ত বিজয় অনিবার্য। ঈশ্বর আমাকে সাহস যোগান। তাই আমি আজও এই কৃত্রিমভাবে বেঁচে আছি।
কবিতা যোশী ঃ তুমি কি Miss কর?
শর্মিলা ঃ জনগণ কে। হাসপাতালে আমি যেহেতু আমি বন্দী , আমার সাথে অনুমতি ব্যতিত কাউকে দেখা করতে দেওয়া হয় না।
আমি জনগণের সঙ্গ খুবই Miss করি।
কবিতা যোশী ঃ যদি তোমাকে তোমার একটি আকাঙ্খার কথা জিজ্ঞাস করা হয়, সেটা কি হবে?
শর্মিলা ঃ আমার আকাঙ্খা! একজন পূর্ণ মানুষ হিসাবে আমাদের আত্মনিয়ন্ত্রনের অধিকার। (We must have the right to self determination as rational beings.)
কবিতা যোশী ঃতুমি কি মনে কর AFSPA তুলে নেওয়া হবে? যার জন্য তুমি লড়াই চলিয়ে যাচ্ছ তুমি তা অর্জিত হবে?
শর্মিলা ঃ আমি উপলদ্ধি করি আমার কাজ কুবই কঠিন ; কিন্তু আমি তা চালিয়ে যেতে বদ্ধ পরিকর। আমাকে ধ্যৈর্য্য ধারণ করতে হবে। সেই আলোকিত দিন অবশ্যই আসবে।
আমি বেঁচে থাকলে ধৈর্যধারণ কে সেই দিনে জন্য অপেক্ষা করবো। ( কবিতা যোশী প্রতি) তুমি কি আমাকে একটু সাহায্য করতে পার? আমি নেনসেল মেন্ডেলার জীবণি পড়তে চাই। তাঁর জীবন সংগ্রাম সম্পর্কে আমার কোন ধারণা নেই। তুমি কি তাঁর সম্পর্ক আমাকে একটা বই পাঠাবে? অনুগ্রহ করে নিরাপত্ত শাখায় তোমার পূর্ণ ঠিকানা দিয়ে যেও .....আর তা না হলে ও বই কখনও আমার কাছে পোছাবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।