আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পুনর্জন্মের স্বপ্ন দেখতে চায় টেশিস!



গত ১০ অক্টোবর বিভিন্ন দৈনিক এবং সেই সাথে মিডিয়াগুলোতে এসেছে দেশের একমাত্র সরকারী টেলিফোন সেট তৈরী প্রতিষ্ঠান টেলিফোন শিল্প সংস্থাকে আবারও চালু করা হচ্ছে। প্রযুক্তির ভারে নুয়ে পড়া মৃত প্রায় এই প্রতিষ্ঠান আবারও চলে এসেছে আলোচনায়। দীর্ঘ সময় অবেহলায় পড়ে থাকা টেশিসকে দাড় করানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও সংবাদ মাধ্যমগুলোকে জানানো হয়। বলা হয়, টেশিস খুব শিঘ্রয় নিজস্ব ল্যান্ডফোন সেট উৎপাদনে যাচ্ছে। এবং সেই সাথে প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্রাংশও কমলাপুর রেলষ্টেনে এসে পৌছেছে।

এও বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বরে আগামী জানুয়ারীর মধ্যে আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। একই সঙ্গে মোবাইলের ব্যাটারী, চার্জারও তৈরী করবে এ প্রতিষ্ঠানটি। সংবাদ মাধ্যমগুলো নিশ্চিত করে বলেছে, প্রথম দফায় ৮ হাজার ৮০ টি ল্যান্ডফোন সেট তৈরী করার প্রস্তুতিও নিচ্ছে টেশিস। এ ধরনের সংবাদ অবশ্যই আশার বাণি। আমাদের দেশের সর্ববৃহৎ একমাত্র টেলিযোগাযোগ যন্ত্রপাতি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান “টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টেশিস)”।

বিগত সকল আমলেই এই প্রতিষ্ঠানটি অযতেœ পড়ে ছিল। কিন্তু ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে যে সরকার ক্ষমতায় বসেছেন সে সরকারের পক্ষ থেকে এ পদক্ষেপ অবশ্যই প্রসংশাযোগ্য। তবে এ প্রতিষ্ঠানটির কেন এ হাল হলো? এবং কি-ই বা এর ইতিহাস। এ সব বিষয় নিয়েই আমার অনুসন্ধান। পেছনে ফেরা: ১৯৫৩ সালে পশ্চিম পাকিস্তান সরকার দেশটির টেলিযোগাযোগের উন্নতির স্বার্থে টেলিফোন এক্সচেঞ্জ এবং টেলিফোন সেট সংযোজন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য হাজরা/ হারিপুরে একটি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেন।

সেই প্রতিষ্ঠানটি কম সময়ের মধ্যেই অত্যন্ত লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রুপ নেয়। এরপরই পকিস্তান সরকার আরেকটি প্রতিষ্ঠান নির্মাণের উদ্যোগ নেয় তবে তা পূর্ব পাকিস্তানে। এ উদ্যোগের পেছনে কারণগুলো হলো- ১. পূর্ব পাকিস্তানকে টেলিযোগাযোগে স্বয়ং সম্পূর্ণ করে গড়ে তোলা। ২. কর্মসংস্থান গড়ে তোলা। ৩. আধুনিক প্রযুক্তির সাথে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া।

৪. পশ্চিম পকিস্তান থেকে টেলিযোগযোগের সরংজাম আনতে প্রচুর খরচ হতো। সেই খরচ কমানোও ছিল প্রধান লক্ষ। এ সকল কারণ দর্শিয়ে পাকিস্তান তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয় একটি বিল পেশ করে সরকার বরাবর যা সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণযোগ্য হয়। পর্ববর্তীতে জার্মানীর সিমেন্স কোম্পানী সকল ধরনের টেকনিকেল সহযোগিতা করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। পাকিস্তান তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রানালয় জার্মানির সিমেন্স কোম্পনির সাথে চুক্তি সাক্ষর করে।

চুক্তিতে উল্লেখ ছিল, দেশীয় সকল ধরনের সহযোগীতা সরকার কর্তৃক প্রদাণ করা হবে। এবং কারগরী সহযোগীতা সেই সাথে দক্ষ জনবল তৈরীতে প্রশিক্ষন দেবে জার্মানীয় কোম্পানী সিমেন্স। চুক্তিটি সাক্ষরিত হয়, ২৭/০৩/১৯৬৭। প্রতিষ্ঠানটির নাম দেয়া হয়, টেলিফোন ইন্ডান্ট্রিজ করপরাশান লিমিটেড(টি আই সি)। এই প্রতিষ্ঠানটির প্রথম পর্বের লক্ষ নির্ধারণ হয়, ১৯৭২ সালের মধ্যে সারা দেশে এক্সচেঞ্জ তৈরীর মাধ্যমে ২০ হাজার টেলিফোন লাইন দেয়া হবে এবং ৩০ হাজার টেলিফোন সেট তৈরী করা হবে।

এ লক্ষ নিয়েই যাত্রা শুরু টেলিফোন ইন্ডান্ট্রিজ করপরাশান লিমিটেড। এর ভিত্তি-প্রস্থর স্থাপন করা হয় গাজিপুরের টঙ্গিতে, ২৮ মার্চ ১৯৬৭। ১৯৬৯ সালেই টেলিফোন ইন্ডান্ট্রিজ করপরাশান লিমিটেড তাদের প্রথম পর্বের কাজ শুরু করে দেয়। জার্মান থেকে দক্ষ প্রকৌশলীরা এসে এ দেশের দক্ষ জনবল তৈরীতে কাজ করতে থাকে। এবং সেই সাথে পূর্ব পাকিস্তানের বহু দক্ষ প্রকৌশলীকেও এ প্রতিষ্ঠানে সুযোগ করে দেয় সরকার।

শুরুতে ৫০০ জন কমকর্তা-কর্মচারী নিয়ে যাত্রা শুরু করে টি আই সি। পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে তা ৯০০ তে গিয়ে ঠেকে। জনবল নিয়োগে প্রসংশযোগ্য পদক্ষেপটি ছিল ১০০ জন মহিলা জনবল নিয়োগ। সেই সময়ে পশ্চিম পাকিস্তানের মত একটি দেশে মহিলা জনশক্তি নিয়োগের জন্য অনুরোধ জানায় জার্মান কোম্পানী সিমেন্স। এছাড়াও নিয়োগকৃত অনেককেই বিদেশে প্রশিক্ষনের জন্য পাঠানো হয়।

টি আই সি ১৯৭০ সালে পুরো উৎপাদনে চলে যায়। এবং পূর্ব পাকিস্তানে যাত্রা শুরু হয় সেসময়কার অত্যন্ত অত্যাধুনিক সুইচিং সিস্টেম ই.এম.ডি ব্যবহার করে এক্সচেঞ্জ তৈরী। সেই সাথে প্রযুক্তির হাতছানি পেল পূর্ব পাকিস্তান। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধের পর টেলিফোন ইন্ডান্ট্রিজ করপরাশান লিমিটেড নাম পাল্টিয়ে রাখা হয়, টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টেশিস)। স্বাধীনতার পর: স্বাধীনতার পরের গল্পটা খুবই সুন্দর।

বাংলাদেশের অত্যন্ত লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রুপ নেয় টেশিস। সারা দেশে এক্সচেঞ্জ সংযোজন এবং টেলিফোন সেট তৈরীতে এগিয়ে চলে প্রতিষ্ঠানটি। ৩৭ বছরের হিসাবে দেখা যায়, টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্রে তিন লাখ লাইন ইউনিট ইএমডি সুইচিং যন্ত্রপাতি এবং ৬ লাখ টেলিফোন সেট উৎপাদন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়াও টেলিফোন সেটতো আছেই। এ সকল সফলতা থেকে বিটিটিবির প্রায় ৯শ কোটি টাকা আয় করে যার মধ্যে ৫শ কোটি টাকার অধিক সরকারের কোষাগারে জমা পড়ে।

দক্ষ জনবল এবং মেধাসম্পন্ন প্রকৌশলীরা এ দেশীয় প্রতিষ্ঠানে নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছিলেন। আর দেশ এগিয়ে চলছিল। সারা দেশে যত এনালগ একচেঞ্জ রয়েছে প্রায় সব’টিই টেশিসের তৈরী। তবে ভুল সিন্ধান্তের কারণে ধ্বস নামে টেলিফোন শিল্প সংস্থায়। একসময়ের প্রাণ চঞ্চল প্রতিষ্ঠানের সকল মেশিন বন্ধ হয়ে যায়।

সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হয়ে পড়ে কর্মহীন। ধ্বস নামার কারণ: সমস্ত কারিগরী দক্ষতা সত্ত্বেও ১৯৮৬ সালে এরশাদ সরকার বিদেশ থেকে ডিজিটাল এক্সচেঞ্জ এবং টেলিফোন সেট আমদানি শুরু করে। অথচ বিগত সময়গুলোতে দেশীয় চাহিদা টেশিসই মিটিয়ে আসছিল। যদিও টেশিসকে আধুনিক প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য সকল ধরনের দাফতরিক কাজ সম্পন্ন হয়েছিল ১৯৮০ সালে। ১৯৮০ সালের ১৭ই মার্চ, ২৪ সেপ্টম্বর ও ৩০ আগষ্ট অনুষ্ঠিত এনইসি সভায় টেশিসকে আধুনিকায়ন করে ডিজিটাল ইলেক্সট্রনিক সুইচিং যন্ত্রপাতি উৎপাদনের সিন্ধান্ত নেয়া হয়।

কিন্তু এসব কিছু কোনো এক অজানা কারণে ভাটা পড়ে। এবং ঠিক তখন এরশাদ সরকার জাপান থেকে ডিজিটাল এক্সচেঞ্জ এবং টেলিফোন সেট আমদানি করার অনুমতি দেন। ঠিক তখনই অন্ধকার যুগ শুরু হয় টেশিসে। প্রাণচঞ্চল এ প্রতিষ্ঠান ধীরে ধীরে একটি ধ্বংস্বস্তুপের দিকে এগিয়ে চলে। জার্মান কোম্পানি সিমেন্স ধীরে ধীরে তাদের গুটিয়ে নিতে শুরু করে।

তারপরও ১৯৯১ তে দেখা যায়, জুলাই মাসে তৎকালিন প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেকের সভায় ডিজিটাল প্রযুক্তি সহকারে টেশিসকে আধুনিকায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে বিটিএ্যান্ডটি এবং এলকাটেল কোম্পানি একে আধুনিকায়ন ছাড়াই ক্যাবল সরবারহের প্রস্তাব করে এবং জার্মানির সিমেন্স কোম্পানি ও বেলজিয়ামের আতিয়া কোম্পানি যৌথউদ্যোগে টেশিসকে আধুনিকায়ন সহ চট্রগ্রামে ডিজিটাল এক্সচেঞ্জ স্থাপনের জন্য দরপত্রে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু বিভিন্ন আমলাাতন্ত্রিক জটিলতায় পড়ে তাও ভেস্তে যায়। ১৯৯২ সালে আবারও উদ্যোগ নেয় সরকার। কিন্তু সেই উদ্যোগও অদৃশ্য মহলের তৎপরতায় বন্ধ হয়ে যায়।

এতকিছুর পরও কার্ডফোন উৎপাদন করে টেশিসকে বাচিয়ে রাখার একটি প্রচেষ্টা করা হয়। কিন্তু মোবাইল ফোনের বিস্তার লাভ থমকে দিয়েছে এই পদক্ষেপটিকেও। ধীরে ধীরে মৃত একটি প্রতিষ্ঠানে রুপ নেয়া শুরু করে দেশের একমাত্র বৃহৎ টেলিফোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টেশিস)। এই বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের বহু শ্রমিক - কর্মকর্তাকে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ছাটাই করা হয়। কোনো উদ্যোগ না নিয়ে কেনো এই ছাটাই তাও এখন অনুসন্ধানের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে।

জানা গেছে, ২০৯ জনকে বাধ্যতামূলক অবসরগ্রহণের নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। সেই নোটিশ যারা অমান্য করেছেন তাদের মধ্যে ৪২ জনকে ছাটাই করেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এ যেনো মৃতপ্রায় প্রতিষ্ঠানকে জোর করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া। এ সকল ছাটাইকৃত শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের চাকরী ফেরত পাওয়ার জন্যও বর্তমান সরকারের কাছে তদবির চালাচ্ছে বলে খবর আছে। বর্তমান অবস্থা: শুরুতেই উল্লেখ করেছি, টেশিসকে আবারও দাড় করানোর চেষ্টা চলছে।

বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা এবং মিডিয়াগুলোতে খবর আসছে টেশিসকে নিয়ে। তবে আসল বিষয় হলো, টেশিস চীন থেকে ৮ হাজারের কিছু বেশী টেলিফোন সেট আমদানী করছে নিছক ব্যবসা করার জন্য। চীনের সেট তারা এদেশে এনে বিক্রি করবে। তাছাড়া তেমন কোনো বিশেষ কিছু নয়। তবে হ্যা, মন্ত্রীমহদয় এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য এ বিষয়ে বিশেষ নজর দেয়ার পর থেকে টেশিস অনেকগুলো উদ্যোগ নেবার কথা ভাবছে।

তার মধ্যে হলো, ফোনের চার্জার, ব্যাটারীর চার্জার, ডিজিটাল মিটার। বিশেষ ভাবনার মধ্যে আছে, মোবাইল ফোন সেট উৎপাদন করা। তার জন্য দক্ষ জনবল এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করতে অনেক সময় লাগবে। যদিও আন্তর্জাতিকভাবে টেন্ডার চাওয়া হয়েছে। বিভিন্ন বিদেশী কোম্পানি যাচাই-বাচাই করে যদি কাজ করতে আগ্রহী হয় তবেই শুধু টেশিসের আশার আলো জ্বলবার সম্ভাবনা আছে।

তা না হলে টেশিস সেই অন্ধাকারেই থেকে যাবে। বিশেষজ্ঞ মতামত: দেশের অন্যতম বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের প্রকৌশলী বিভাগের পরিচালক প্রফেসার মোহাম্মাদ আনোয়ার টেশিস সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, ‘বর্তমান বিটিসিএল থেকে রেহাই না পাওয়া পর্যন্ত টেশিসকে তুলে দাঁড় করানো অনেকটা অসম্ভব। ’ এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘টেশিসের কাজটা পাইয়ে দেয় বিটিসিএল। সুতরাং সে ক্ষেত্রে বিটিসিএল কোন ভাবেই টেশিসকে সহযোগিতা করছে বলে মনে হচ্ছে না। বরং বিটিসিএলের আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় বিপাকে পড়েছে টেশিসের মতো সম্ভাবনাময় একটি প্রতিষ্ঠান।

’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘টেশিসকে প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে চলার কাজটা করা উচিত ছিল শুরু থেকেই কিন্তু কোন সরকার তা করেনি। এতে করে এই প্রতিষ্ঠানটি প্রযুক্তির অনেক বাইরে চলে গিয়েছে। একে যদি দাঁড় করানো উদ্যোগ নেয় হয় তবে তা হবে অত্যন্ত চ্যালেঞ্জের ব্যপার। কারণ, শুধুমাত্র বিল্ডিংটাই কাজে আসবে বাকি সব কিছুতে আনতে হবে পরিবর্তন। এমনকি বর্তমান যেই শ্রমিকরা আছেন তাদের প্রশিক্ষণেরও প্রশ্ন আসবে।

আর ভেতরের সমস্ত যন্ত্রপাতি বাতিল করে নতুন করে সমস্ত কিছু সংযোজন করতে হবে। তবে এতবড় উদ্যোগের জন্য সরকারকে আবেগ দিয়ে চিন্তা করতে হবে। দেশীয় এ প্রতিষ্ঠানকে ঢালাওভাবে সাজানোর বিষয় নিয়ে বৃহৎ উদ্যোগই পারে টেশিসকে রক্ষা করতে। ’ প্রফেসার আনোয়ার আরও বলেন, ‘যেহেতু টেশিসের মূল কাজ উৎপাদন সে ক্ষেত্রে এটি দেশীয় একটি শিল্প। তাই এই প্রতিষ্ঠানকে বিটিসিএল থেকে আলাদা করে সম্পূর্ণ বেসরকারীকরণ অথবা শিল্প মন্ত্রনালয়ের হাতে ছেড়ে দেয়া।

’ তারপরও টেশিসকে দাড় করাতে গেলে কারিগরী দক্ষ শ্রমিক গড়ে তোলার ব্যপারে প্রশ্ন করলে প্রফেসার আনোয়ার বলেন, ‘যদিও সরকার কখন কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে কারিগরী সহযোগিতা চাবে না। তারপরও যদি সরকার আন্তরিক হয় তবে আমরা টেশিসকে কারিগরী প্রশিক্ষণ দিতে সদা প্রস্তুত আছি। আমাদের সেই পরিমাণ দক্ষ জনবল আছে। ’ প্রফেসার আনোয়ার এও উল্লেখ করেন, ‘তারপরও এই প্রতিষ্ঠানকে কারিগরী দিক শুধু নয়; ব্যবসার আঙ্গীকেও চিন্তা করতে হবে। এজন্য সরকারের উচিত হবে, করিগরী, আইনি, ব্যবসার দিকগুলো বিবেচনা করে একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠনের।

তাদের সূদুর প্রসারী পরিকল্পনার প্রতি সরকার পূর্ণ আস্থা এনে কাজে নামলে মনে হয় কিছুটা হলেও টেলিযোগাযোগের এই ক্ষাতটি রক্ষা করা যাবে। ’ মজার বিষয় হচ্ছে, বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগের বাজার দখল করে নিচ্ছে। অথচ দেশীয় সম্পদ টেশিস সরকারের অনিহা আর অবহেলায় সকলের আড়ালেই রয়ে যাচ্ছে। একে কোনো ভাবেই যেনো তুলে দাড় করানো কথা ভাবছে না সরকার। হঠাৎ হঠাৎ ছোট খাটো কিছু পদক্ষেপ আশার আলো দেখালেও তা ভেস্তে যাচ্ছে বিভিন্ন আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়ে।

টেশিসকে যখন চালু করা হয় তখন তা ছিল এ্যানালগ প্রযুক্তিতে তৈরী। বর্তমান আমাদের বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখছে ডিজিটাল বাংলাদেশে রুপান্তরিত হওয়ার। তাই টেশিসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী-শ্রমিকরা আশায় বুক বাঁধছেন যে, সেই ডিজিটাল বাংলাদেশের ছোঁয়া তাঁদেরও লাগবে। তারা সর্বক্ষন অপেক্ষা করছে তাদের প্রিয় এই প্রতিষ্ঠানের আবার চালু হওয়ার। তারা অপেক্ষা করতে চায়।

তারা অপেক্ষা করতে চায় আরেকটি পুনর্জন্মের। ------------------------------------------------------------------------- লেখাটি গত ২২ অক্টোবর ২০০৯ ইং - এ দৈনিক সমকালে ইষৎ সংক্ষেপিত আকারে প্রকাশ পেয়েছে

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।