বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ
যোয়ান অভ আর্ক । মাত্র ১৭ বছর বয়েসে এই কৃষককন্যাটি স্বাধীনতা বোধে উজ্জ্বীবিত হয়ে ফরাসি রাজদরবারে উপস্থিত হয়ে আধিপত্যবাদী ইংরেজদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত হওয়ার অনুমতি চেয়েছিল: সে অনুমতি মিলেছিল। পরিণামে মাত্র উনিশ বছর বয়েসে যোয়ান অভ আর্ক কে ইংরেজদের বিরাগভাজন হয়ে আগুনে পুড়ে জীবন্ত মরতে হয়েছিল ...
ফ্রান্সের পুবে ডোমরেমি নামে একটি গ্রাম ছিল ।
সে গ্রামেই ১৪১২ খ্রিস্টাব্দের ৬ জানুয়ারি যোয়ান অভ আর্ক- এর জন্ম; যোয়ানের জান্মের সময়ে নাকি ফরাসি বিজয়ের শুভ চিহ্ন দেখতে পাওয়া যাচ্ছিল। যোয়ানের বাবা ছিলেন কৃষক। চাষবাস করতেন।
ফ্রান্সের মানচিত্রে ডোমরেমি গ্রামের অবস্থান
ডোমরেমি গ্রামের প্রশান্ত মাধুর্য
ডোমরেমি গ্রামের এই বাড়িটিতেই জন্মেছিলেন যোয়ান অভ আর্ক।
যাহোক।
অল্প বয়স থেকেই যোয়ান অভ আর্ক- এর সংবেদনশীলতা প্রকাশ পায়। বালিকার ধর্মীয় অনুভূতি ছিল নিগূঢ়। ঈশ্বরপুত্র যিশূ, আর্শীবাদপুষ্ঠ মা, মেরি ও মহামহিম ঈশ্বরের প্রতি বালিকা ছিল অনুগত। বালিকার ১২ বছর বয়েসেই মরমী অনুভূতির অভিজ্ঞতা হয়েছিল । ঈশ্বর নাকি ফ্রান্স কে ঐক্যবদ্ধ করতে উদ্যেগ নেওয়ার কথা বলতেন, যা ছিল একেবারে বাস্তব, যেন সে অন্যকে নিজের চোখে অন্যকে দেখছে আর ছিল আলো; পবিত্র সাধুরাও ছিলেন- সেন্ট মাইকের আর সাধু ক্যাথেরিন।
শিল্পী জুল বাস্তেইন লাপাগ এর আঁকা যোয়ান অভ আর্ক। গীর্জের ঘন্টা শুনলে হাতের কাজ ফেলে যোয়ান নাকি দৌড়ে গীর্জেয় চলে যেতেন ...
নিজের মরমী অভিজ্ঞতার কথা যোয়ান অভ আর্ক কাউকে বলত না। ১৪২৮ সালে এক স্বর্গীয় বাণীতে যোয়ান কে বলা হল চার্লস দ্য পনথিউ এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। চার্লস দ্য পনথিউ ছিলেন দাফনি নেতা। কেন? যোয়ান এর মেয়েবেলায় ফ্রান্স বিভক্ত ছিল।
১৪১৫ সালে ইংল্যান্ডের রাজা পঞ্চম হেনরি ফ্রান্স আক্রমন করে ফ্রান্সের অনেকটা অঞ্চল দখল করে নেয়। ইংল্যান্ডকে সমর্থন করা না করা নিয়ে ফরাসী অভিজাত শ্রোণি দুটি ভাগে ভাগ হয়ে যায়। একদলে ছিল ফরাসি স্বাধীনতার পক্ষে দাফনিরা ও অন্যপক্ষে ছিল ইংল্যান্ড সমর্থিত বারগানডিয়ানস।
ইংরেজ নিয়ন্ত্রিত ফ্রান্স (লাল চিহ্ন)
চার্লস দ্য পনথিউ এর অধীন সেসময় ফ্রান্স ছিল দিশেহারা। যোয়ান অভ আর্ক রাজদরবারে এসে অত্যন্ত আবেগতাড়িত কন্ঠে আধিপত্যবাদী ইংরেজদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত হওয়ার অনুমতি চাইল।
আশ্চর্য! ১৭ বছরের কৃষক পরিবারের কিশোরীটিকে যুদ্ধর করার অনুমতি দিয়ে সেনাবাহিনীর দায়িত্ব দেওয়া হল !
এক বছরের মধ্যে যোয়ান অভ আর্ক এর নেতৃত্বে ফরাসি সৈন্যদল পরপর তিনটে বিজয় অর্জন করে। আরও অনেক নগর ইংরেজদের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করা হল।
যোয়ান অভ আর্ক এবং তার পরিবার অভিজাত মর্যাদা পেল। ফরাসী সৈন্যরা যোয়ান অভ আর্ককে ভাবত-অলীক এক দেবী।
এক বছর পর ইংল্যান্ড সমর্থিত বারগানডিয়ানসরা যোয়ান অভ আর্ক কে বন্দি করে।
তারপর তারা যোয়ান অভ আর্ক কে ইংরেজদের কাছে বিক্রি করে দেয়। ফ্রান্সের নরম্যান্ডি ছিল ইংরেজদের দখলে। সেখানেই বিচার শুরু হয়। বিচার শেষে দোষী সাব্যস্ত হয় যোয়ান অভ আর্ক।
৩০ মে, ১৪৩১ সাল ।
ফ্রান্সের নর্মান্ডির রাজধানী রোয়েন। সেখানেই একটি উঁচু পিলারের সঙ্গে যোয়ান অভ আর্ক কে শক্ত করে বেঁধে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়।
১০ হাজার মানুষ দেখেছিল সেই মর্মান্তিক দৃশ্য।
এখানেই যোয়ান অভ আর্ক কে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। মরদেহের ছাই সিন নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।