ফেসবুক আইডি:নাই
বেপরোয়া ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণের কারণে কথিত মডেল রিয়াদ মাহমুদ রনিকে চার স্ত্রীই ছেড়ে চলে যায়। পরে আর সে বিয়ে করেনি। মডেলিংয়ের অফার দিয়ে ও পরে প্রেমের অভিনয় করে একে একে ভোগ করেছে ৬৪ নারীকে। ওই ভোগের চিত্র আবার রনি ক্যামেরায় বন্দি করে রেখে তাদের প্রতিবাদের মুখ বন্ধ করে রাখতো। ইজ্জত হারানো ও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে কোন নারীই তার বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পায়নি।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রনি জানিয়েছে, ক্ষোভ থেকেই সে এসব নারীকে ভোগ করেছে। ক্ষোভের কারণ, বারবার বিয়ে করেও স্ত্রীদের যে ঘরে রাখতে পারেনি। রনি জানায়, বিয়ের দেড় বছর পর প্রথম স্ত্রী তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর হাত ধরে চলে যায়। পরে প্রেম করে একে একে তিনটি বিয়ে করে তাদের ঘরে রাখতে পারেনি সে। এতে নারীদের প্রতি তার ক্ষোভ বেড়ে যায়।
এক পর্যায়ে পুরোপুরি মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। তখন তার বেপরোয়া আচরণ আরও বেড়ে যায়। কোন স্ত্রী-ই তার সঙ্গে এক বছরের বেশি সংসার করতে পারেনি। চার নম্বর স্ত্রী মুন্নী তার সঙ্গে ঘর করেছে মাত্র দশ দিন। সংশ্লিষ্টরা জানান, ছোট বেলা থেকেই রনি বেপরোয়া ছিল।
পিতার অঢেল টাকা-পয়সা থাকার কারণে কোন কিছুকেই সে পাত্তা দিতো না। ১৮ বছর বয়সে আরামবাগের ২৪ বছর বয়সী সাথীর সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করে রনি। মান-সম্মানের ভয়ে রনির বাবা-মা ওই বিয়ে বাধ্য হয়েই মেনে নেন। পরে বিয়ের দেড় বছরের মাথায় রনির ঘনিষ্ঠ বন্ধু দীপুর সঙ্গে পালিয়ে যায় সাথী। পরে ২০০০ সালে তন্বী নামের এক মডেলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে রনির।
তিন মাসের মাথায় সে একক সিদ্ধান্তেই বিয়ে করে তন্বী’কে। এক বছরের মাথায় তন্বী তাদের ছেলে আরিয়ানকে রেখে চলে যায়। এরপর ২০০৩ সালে শবনম নামের আরেক মডেলকে বিয়ে করে রনি। তার বাবা-মা শবনমকে মেনে না নেয়ায় তাকে ঘরে তুলতে পারেনি। তিন মাসের মধ্যেই তাদের বিয়ে ভেঙে যায়।
সর্বশেষ ২০০৮ সালে রনির পিতার ঘনিষ্ঠ বন্ধু মো. আবদুল হান্নানের মেয়ে মুন্নীর সঙ্গে পারিবারিকভাবেই বিয়ে হয় রনির। তবে ওই বিয়ের মেয়াদ ছিল মাত্র ১০ দিন। এ ব্যাপারে রনি জানায়, বিয়ের দুই দিন পর সে জানতে পারে আরেক ছেলের সঙ্গে মুন্নীর সম্পর্ক ছিল। পরে পারিবারিকভাবেই ওই বিয়ে ভেঙে যায়। এছাড়া, তার ছেলে আরিয়ানকেও মুন্নী মেনে নিতে পারেনি।
এদিকে রনির এক সময়কার এক বন্ধু জানান, বাবা-মায়ের অত্যধিক প্রশ্রয়েই রনি বখে যায়। পরে বিয়ে ভেঙে যাওয়ার কারণেই সে নষ্ট পথ বেছে নেয়। বাধ্য হয়ে তিনিও তার সঙ্গ ত্যাগ করেন। এদিকে, গতকাল থানা হাজতে ৬৪টি ধর্ষণের বিষয়ে রনি কোন কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে মেয়েদের সঙ্গে মিশতে তার ভাল লাগতো বলে জানায়।
তার বিশ্বাস, কোন মেয়েই তাকে ভালবাসতো না। কেবলই টাকা ও শারীরিক সঙ্গ পাওয়ার জন্যই মেয়েরা তার কাছে আসতো বলে জানায় সে। তবে নীলাকে (ছদ্মনাম) তার খুব ভাল লাগতো।
এদিকে গ্রেপ্তারের পর গত শনিবার আদালত রনি’র পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। গতকাল রিমান্ডের দু’দিন শেষ হয়েছে।
এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, রনি পেশাদার প্রতারক। এ ধরনের প্রতারণা সে আরও করেছে বলে স্বীকারও করেছে। তবে নীলাকে সে এখনও বিয়ে করতে চায়। এদিকে রনির ছোট ভাই জনি জানান, এখন পর্যন্ত তিনি রনিকে দেখতে থানায় যাননি। এ বিষয় নিয়ে তারা নিজেরাও সামাজিকভাবে হেয় হয়ে আছেন।
তারাও চান তার উপযুক্ত বিচার হোক। এদিকে মামলার বিষয়ে শঙ্কিত ধর্ষিতা নীলার পরিবার। কারণ নীলাকে ধর্ষণের চিত্র মোবাইল ফোনে ধারণ করে রেখেছে রনি। এ বিষয়ে তারা পুলিশকেও জানিয়েছে। তবে পুলিশ এখনও রনির কাছ থেকে ওই মোবাইল ফোন সেটটি উদ্ধার করেনি।
নীলা বলেন, রনির ধারণ করা ভিডিও চিত্র কোন ওয়েব সাইটে দেয়া হলে তার আত্মহত্যা করা ছাড়া কোন পথ থাকবে না। তিনি রনির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। যারা তাকে সহযোগিতা করেছে তাদেরও বিচার দাবি করেন তিনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।