হাঁটা পথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে হে সভ্যতা। আমরা সাত ভাই চম্পা মাতৃকাচিহ্ন কপালে দঁড়িয়েছি এসে _এই বিপাকে, পরিণামে। আমরা কথা বলি আর আমাদের মা আজো লতাপাতা খায়।
মানুষ নিজেকে টের পায় অন্য মানুষের মধ্যে ....কার্ল মার্কস।
খুবই গুরুত্বপূর্ণ খবর! ‘সবজিও মধ্যবিত্তের আওতার বাইরে’-দৈনিক আমার দেশ।
সর্বদাই যে তা নিম্নবিত্তের আওতার বাইরে ছিল। তা খবর নয়, তা ‘বাস্তবতা’। ‘বাস্তবতা’ খবর হয় না। মিডিয়ায়, রাষ্ট্রের দরবারে, শপিং মলে আর টেলিভিশনে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আঙিনায়, মধ্যবিত্ত নিজেকে নিয়েই মত্ত। আত্মপ্রেম এর ‘ধর্ম’।
অধিকারগুলো তার, নীতিগুলো তার, সুখ-দুঃখগুলোও তার। আমার আর আমাদের।
এই ‘আমি’ ও ‘আমরা’র সীমার ওপারে বাস করে কোনো এক ‘রসু খাঁ’। আমি ও আমরা নিশ্চিত, কোনো মহতাদর্শ দিয়ে আমাদের বলয়ে সিরিয়াল খুনী ‘রসু খাঁ’-কে নেব না মানব না। সবজির আওতার বাইরের নিম্নবিত্তের মানবেতর জীবন এবং তাদের থেকে আসা খুনীর বিকারগ্রস্থতা তাহলে কোথায় জন্মালো? সমাজ-রাজনীতি-ইতিহাসের বাইরে তো সে নয়।
‘এই গোকুলে শ্যামের প্রেমে, কে না মজেছে সখী!’ তাহলে সবারে বধিল যে, সে কি আমাদের গোকুলেরই সন্তান নয়?
এই প্রশ্নের সিবিল মীমাংসা নাই। তাই রসু খাঁ-কে আমরা ফুকো সাহেবের ক্ষমতার আকার-বিকারের ব্যকরণে আর সবজির দামকে মার্কসের সংগ্রামী দুনিয়ায় পাঠিয়ে পরস্পরের চোখে নিশ্চিন্তে তাকাব। কিন্তু অজস্র নারীদের খুন ও ধর্ষণের পর সে যে নারীকে জোর করে বউ করেছে, তার চোখের দিকে তাকাতে পারবে কি আমাদের সর্বদ্রষ্টা চোখ? তা পারবো না বলেই বাস করবো সেইসব গডফাদার, নেতা, শিল্পপতি, মিডিয়াশেঠ ও জেনারেলদের রাজত্বে। মিডিয়ায় তারা নায়ক বা খলনায়ক কখনো হন বটে, তাঁদের মানবত্তোর ঊর্ধ্বতনের আরশ কদাচ টলে না।
পত্রিকার পাতায় রসু খাঁ-র কাহিনী উপভোগ শেষে, মনের ধর্ষকাম-মর্ষকাম চরিতার্থতার পর রসু খাঁ-কে সরাসরি সম্প্রচারিত ফাঁসি দেওয়া যায়।
আর ক্ষমতাবিত্তমত্তদের আইনী-বেআইনী ওপেন আর ক্রসখুনের সিরিয়াল দিয়ে বানানো যায় একটা মহিমান্বিত গণকবর। শোকের মহিমা উপভোগের মতো এমন গণখুনের গণকবর অনেক দেশেরই নাই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।