যা শিখেছি, সেখান থেকেই কিছু বলার ও করার চেষ্টা করি
ফেসবুক ও সামু ব্লগে আমার কিছু নাস্তিকতায় আত্মদীক্ষিত বন্ধুদের ইদানিংকার ধর্ম ও ঈশ্বরবিরোধী পোস্ট তথা ঈশ্বরের অস্তিত্ত্বহীনতা প্রমাণের ব্যাপক তোরজোড় লক্ষ করলাম। আল্লাহ বা ঈশ্বর বলতে যে কিছু নাই সেটা প্রমাণ করার জন্যে তাদের তামোদ গঠনমূলক আলোচনা বা সমালোচনা বিষয়টি নিয়ে আমাকে কিছুটা ভাবতে বাধ্য করলো বইকি। না, ঈশ্বরকে নিয়ে না। উনার অস্তিত্ত্ব নিয়ে আমি তেমন একটা ভাবি না। ভাবলাম আমার নাস্তিক বন্ধুদের কার্যক্রম নিয়ে।
ভাবনার প্রসবগুলো এরকম:
প্রথমত, আমার যেসকল বন্ধুরা ‘ঈশ্বর বলতে কেউ নেই’ এটা প্রমাণ করাতে চাচ্ছেন তারা কেন এটা প্রমাণ করতে চাচ্ছেন ? যা নেই তাতো নেই-ই। কোন কিছুর অস্তিত্ত্ব প্রমাণ করা যেতে পারে। সর্বোচ্চ অনুপস্থিতি প্রমাণ করা যেতে পারে। কিন্তু অস্তিত্ত্বহীনতা প্রমাণের কি আছে ? অস্তিত্ত্বহীনতা প্রমাণ করা মানে হচ্ছে তাদের আগে অস্তিত্ত্ব প্রদান করা। এই দিক দিয়ে আমার বন্ধুরা সম্ভবত ভুল পথে হাটছেন।
তারা নিজের অজান্তেই ঈশ্বরের অস্তিত্ত্ব জানান দিচ্ছেন।
দ্বিতীয়ত, ধরে নেয়া যাক ঈশ্বর নেই। সেক্ষেত্রে নাস্তিক বন্ধুরা ধর্ম তথা ধর্ম বিরোধীতার পেছনে যে সময় খরচ করেন একজন আস্তিক বলতে গেলে মাঝারি জাতের একজন ধার্মিকও ধর্মের পেছনে এতো সময় খরচ করেনা। এতোটা চিন্তা, এতোটা সময় আর এতটা পড়াশোনা আপনি দিচ্ছেন যার অস্তিত্ত্ব নেই তার পেছনে অথচ যে অস্তিত্ত্বে বিশ্বাস করে, তার ধর্ম পালন করতে এতোটা সময় নষ্ট হচ্ছে না। অর্থাৎ ধর্ম প্রেক্ষাপটে একজন নাস্তিক মহাকালের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ‘সময়’ বেশি নষ্ট করছেন একজন আস্তিকের চাইতে।
সময়টা নাহয় অস্তিত্ত্বসম্পন্ন কোন কাজেই ব্যয় করুন। আর যদি দুর্ভাগ্যবশত ঈশ্বর আদতেই থেকে থাকেন, তবেতো আমার প্রিয় বন্ধুদের আমও গেল ছালাও গেল।
তৃতীয়ত, সারা বিশ্বে যেসকল ধর্ম আছে তার বেশিরভাগই এক ঈশ্বরবাদের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং সেই ঈশ্বর অদৃশ্য। কিন্তু আমার বন্ধুদের যত আক্রমন সব ইসলাম, কোরআন ও আল্লাহর উপর। আপনারা কেন অন্য কোন ধর্ম বা তার ধর্মগ্রন্থের ভুল ধরছেন না ? ধর্ম যার যেটাই হোকনা কেন, আস্তিকরা সকলেইতো আস্তিক, আপনার পরিপ্রেক্ষিতে আস্তিকতাইতো মূল ধর্ম তাইনা? নাকি আপনার ইসলামের সাথে কোন ব্যক্তিগত শত্রুতা আছে? যদি থেকেই থাকে তবে সেটাই বলুন।
ঘুরিয়ে বলারতো কিছু নেই।
শেষকথা, প্রবাদ আছে, যার মাথা নেই তার ব্যাথাও নেই। কিন্তু এখানে দেখতে পাচ্ছি যার মাথা নেই তার ব্যাথা বেশি। কারন অন্য সব ব্যাথার সাথে মাথা না থাকার ব্যাথাটাও কার্যকর। আমি আমার কোন বন্ধুকেই নাস্তিকতার চর্চা করা থেকে বিরত থাকতে বলছিনা।
বরং বলছি নাস্তিকতা যেন আবার ধর্মপরায়ন হয়ে না যায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।