কোন একদিন.. এদেশের আকাশে... কালেমার পতাকা দুলবে, সেদিন সবাই ... খোদায়ী বিধান পেয়ে দু:খ বেদনা ভুলবে..
২২.০৯.০৯
ঈদের পরের দিনটা শুরু হল ফজরের নামাজ দিয়ে। গ্রামের সেই কেমন অনুভূতির মসজিদে জনা পনের মুসল্লি নিয়ে জামাত হল। নামাজ শেষে দাদার কবর জিয়ারত করলাম। বাড়িতে নাস্তা খেয়ে, জিনিসপত্র গুছিয়ে আমার ভ্রমণের ছোট্ট আরেকটা অংশের শুরু করলাম। এবারও সঙ্গী আমার সেই চাচাত ভাই।
এর সাথে আরেকটা সাইকেলও যোগ হয়েছে। গ্রামের রাস্তায় সাইকেল আমার খুব পছন্দ। সাইকেলে চড়ে আধাকিলোমিটার পরে একটা নদী পড়ল। নদীর ছোট ডিঙ্গীতে করে আমরা পার হলাম। এরপর আবার সাইকেল।
সাইকেলে চড়েই কয়েকজন আত্নীয়ের বাড়িতে গেলাম। দুপুরে এক আত্নীয়ের বাড়িতে হেভী স্পেশাল খেলামও। খাওয়া দাওয়া শেষে হালকা বিশ্রাম শেষে আমার সঙ্গী সেই চাচাত ভাইকে সাইকেলসহ বিদায় দিয়ে আমি ভিন্ন রাস্তা ধরলাম।
মানুষ জীবন শুরুর আগে এবং মৃত্যুর পরের অসীম সময়ে একলাই থাকে, অথচ জীবনের সামান্য কিছু সময় একলা থাকতে পারে না। আমিও সকল মানুষের মতই।
একলা চলতে খুব একটা পছন্দ করিনা। আবার মাঝে মাঝে মনে হয় একলাই ভাল, দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু সত্যি হল এই যে, সাহায্যকারী এ পৃথিবীতে জীবন ধারনের জন্য প্রতিটি পদক্ষেপেই প্রয়োজন। গ্রামের বাজার হতে গাড়িতে উঠলাম। লক্ষ্য হল ফেনী শহর।
যেতে হবে দুধাপে। প্রথমে সিএনজি অটোরিক্সায় করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গিয়ে উঠলাম। সেখান থেকে বাসে চড়ে ফেনী শহরে পৌছলাম। রিকশা নিয়ে চলে গেলাম মামার বাসায়। আগে থেকেই জানি বাসায় আমার দুই মামাত ভাই ছাড়া কেউ নেই।
এদের একজন দ্বাদশ এবং অন্যজন অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। এখানে আসার মূল উদ্দেশ্য হল এদের মধ্যে অন্তত: একজনকে আমার ভ্রমনের বাকি অংশের জন্য সঙ্গী করে নেয়া। আনন্দের ব্যপার হল, দুজনেই আমার সাথে যাবার জন্য রাজী হয়ে গেল। কিন্তু বাসা সম্পুর্ন খালি থাকায় বাসা খালি রেখে যাওয়াটা নিরাপদ নয়। তাই তক্ষুনি আর রওনা হওয়া গেলনা।
পরদিনই মামা-মামী ফিরে আসবে বলে জানিয়েছেন, তাই আমরা পরদিন সকালে রওনা দেবার পরিকল্পনা করলাম।
বিকেলটা অযথা ঘরে বসে গেম খেলে কিংবা টিভি দেখে কাটাতে ইচ্ছে করলনা। তাই আমরা তিনজন মিলে শহর ভ্রমনে বের হলাম। পুরো শহর প্রদক্ষিন করা শেষে এসে পৌছলাম মহীপাল নামক এক জায়গায়। মহীপাল থেকেও খানিকটা পশ্চিমে এগুলাম রিকশা নিয়ে।
এখানেই সার্কিট হাউজটা অবস্থিত। আর তারই পাশে বিজয় সিং দিঘি। ইতিহাসের অনেক পুরোনো এই দিঘির চারপাশে ঈদের ছুটি কাটাতে আসা লোকজনের বিরাট ভীড় দেখতে পেলাম। ফেনীর এ স্থানটিতে আমি কখনোই এর আগে আসিনি। প্রকৃতির অপরূপ দৃশ্য দেখে খুব ভাল লাগল।
ফেনীর সবচে সুন্দর এবং একমাত্র সময় কাটানোর জায়গা হওয়া সত্ত্বেও এ স্থানের প্রতি পৌর কর্তৃপক্ষের তেমন কোন নজর নেই। দিঘীর চারপাশে হাটার জন্যেও কোন ব্যবস্থা রাখা হয়নি। দিঘীর চারপাশটা ঘুরে আসার জন্যে কাদাপানি আর টিলা-টক্কর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে হাটতে হয়। তারপরও প্রায় আধঘন্টা সময় নিয়ে কাদাপানিতে মাখামাখি হয়ে পুরো দিঘীটা ঘুরে এলাম। এরপর বাসায় ফিরে এলাম।
ফেনীর প্রত্যন্ত এক গ্রামের মসজিদের সামনেকার একটি পুকুর।
গ্রামের মসজিদ।
মসজিদের অযুখানা।
বিজয় সিং দিঘী, ফেনী
বিজয় সিং দিঘী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।