রিজওয়ানুল ইসলাম রুদ্র
ফাইনাল ডেস্টিনেশন বা 'শেষ গন্তব্য' যেটা মূলত মৃত্যুকেই উদ্দেশ করে... মৃত্যুর বিষাক্ত তীর যে ছাড়বে না কাউকেই! পৃথিবীর সকল ধর্মগ্রন্থে এই একটি জিনিসের প্রতিই বিশেষ ইঙ্গিত রয়েছে; রয়েছে মৃত্যুর অপার্থিব ইশারা! একদিন চলে যেতে হবে এই সুন্দর পৃথিবীকে ছেড়ে... তবে আমরা সবাই স্বাভাবিক মৃত্যু-প্রত্যাশী... অস্বাভাবিক, রক্তে রঞ্জিত ব্যথাময় মৃত্যুর কথা ভাবতেও লাগে ভয়! স্বাভাবিক, খুব স্বাভাবিক এসব... লেখাগুলো তাই কবিতা হয়ে উঠতে চাইছে যেন!
মৃত্যুর কাছাকাছি দাঁড়িয়ে মনে পড়ে যায় স্রষ্টার প্রতি যতবসব ধিকৃত তিরষ্কার! একটা কাঠের সিঁড়িতে যেমন মুখ থুবড়ে পড়ে কতগুলো রাজহাঁস... অত:পর ধ্বংসের স্তূপ; ইটের ভেতর ঝুলছে রক্তাক্ত লাশ, বাতাসে মৃত্যুর ধোঁয়াটে গন্ধ... শরণার্থীরা সবাই যে যার মতো নিশ্চুপ!
আমরা বর্তমানে 'ফাইনাল ডেস্টিনেশন' অবস্থা অতিক্রম করছি। আমাদের রক্তে এখন ভূমিকম্প! কোথাও মৃদু কেঁপে উঠলেও আঁতকে চেয়ার থেকে ধপাস করে পড়ে যাওয়াটাও অস্বাভাবিক কিছু নয়! কিছুক্ষণ আগে বোনের মোবাইল ভাইব্রেশন ফিল করে বুক একটু কেঁপে উঠেছিলো বৈকি! আহা... এক-দেড়শ বছর আগে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়েছিলো একটি সভ্যতা... এই একবিংশ শতকেও অসহায় মানুষ আরো একটি ধ্বংসের জন্য সত্যিই কি প্রস্তুত? নাকি এসব 'আয় আয় চাঁদ মামা টিপ দিয়ে যা..." ঘুমপাড়ানি গান? ফাইনাল ডেস্টিনেশন ছবির কোন দৃশ্য কী আমরা দেখতে পাবো? সবাই হয়তো ছবিটা দেখেছেন, সম্প্রতি ফাইনাল ডেস্টিনেশন ৪ রিলিজ হয়েছে। নায়ক বুঝতে পারে মৃত্যুর আগমন... তার সিক্সথ সেন্স বলে দেয়, কোথায়, কখন, কীভাবে, কার মৃত্যু ঘটবে... You can't cheat death : তুমি কখনো মৃত্যুর সাথে প্রতারণা করতে পারবে না, করতে যেও না, মৃত্যু শ্বাশ্বত, সর্বজনীন, সকল জীবের জন্যই সমভাবে প্রযোজ্য। এটাই ফাইনাল ডেস্টিনেশন সিরিজের মূল কথা। পবিত্র কোরআন শরীফে আছে, প্রত্যেক প্রাণীই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে... তবুও এমন মৃত্যু কারো কাম্য নয়... ভারি ইটের স্তূপে আমরা লাশ হয়ে মরতে চাই না... আমরা এখন কিছু আলামত দেখছি সিনেমার মতো, কিন্তু খানিকক্ষণ পরই যে তা বাস্তবে রূপ নেবে না : এটা যেমন দুঃস্বপ্নের মতো তেমনি আমাদের উদ্বেগ, সরকারের দায়িত্ববোধের অভাবও আশাহত করার মতো। এখন প্রয়োজন 'আর্থ-কোয়াক প্রিভেনশন কমিউনিটি'... ১৯৭১ এ যেমন বাংলার মানুষ দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো যুদ্ধে তেমনি আমাদেরও অন্তত মৃত্যুকে 'চ্যালেঞ্জ' করে অন্তত থামিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে, ঘরে-ঘরে সচেতনতা বাড়াতে হবে...
মৃত্যুকে অগ্রাহ্য করা যায় না, তবে থামিয়ে রাখা যায়... আর্মির চেইন অব কমান্ড এর মতো চেইন অব ডেথ একবার ভেঙে দিতে চেষ্টা করতে হবে অর্থাৎ সরকারসহ সকল শ্রেণীর মানুষকে একযোগে সচেতন হয়ে কাজ চালিয়ে যেতে হবে, রক্ষা করতে হবে শিশুদেরকে অর্থাৎ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে... শুধু নিজের জন্য না অন্যের জন্যও বেঁচে থাকতে হবে, আঁধি যখন চলে তখন সবাইকে এক হতে হয়, সকল বৈষম্য ছুঁড়ে দিতে হয় এঁদোডোবায়... "যা করার আল্লাহ করবেন... কপালে যা আছে তাই হবে"- এ জাতীয় অহেতুক কথা-বার্তার চাইতে ধর্মীয় কর্ম পালন করে বাঁচার স্বার্থে শুধু ঘরে বসে কাজ করলেই হবে না, পাড়ায়-পাড়ায় সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে...
ভূমিকম্পের সময় যেভাবে নিজেদের রক্ষা করতে হবে :
Click This Link
ক্ষয়-ক্ষতি এড়াতে :
Click This Link
ছবি : ওয়েবসাইটের সৌজন্যে
Click This Link
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।