শেষ বিকেলের রঙ
আজম মাহমুদ
মানুষের এক জীবনে ১২ বার প্রেম আসে। কথাটা আমার নয় আমার এক বন্ধুর। আমার জীবনে প্রেম একবারই এসেছে এযাবৎ পর্যন্ত। আর নতুন করে প্রেমে পড়ার কোন ইচ্ছাও নেই, কারণ আর সবার মতো হয়তো আমি খুব স্বাভাবিক মানুষ নই। আমার আশেপাশের প্রায় সব বন্ধুরাই একের পর এক চুটিয়ে প্রেম করে যাচ্ছে।
মোবাইল ফোন আসার পর তো প্রেমের রকম ভেদ পাল্টে গেছে। তাই অনেকের জন্য প্রেমে পড়ার উত্তম সময় এখনই বয়ে যায়। সেই জোয়ারে গা ভাসিয়ে দিব্বি প্রেম করে যাচ্ছে একের পর এক। ১২ কি ১৪ দেখার বিষয় তাদের মাথায় নেই। প্রেম এখন অনেকটাই সস্তা আর সহজলভ্য।
কিন্তু আমার বেলায় ঘটনাটি ঘটে একটু অন্য রকম ভাবে। প্রায় ৫ বছর আগের কথা। তখন আমার বয়স ২৪ বছর প্রায়। এই ২৪ বছরের আগে এত্তোগুলো বসন্ত এলো গেলো কিন্তু আমার জীবন তারা রাঙগিয়ে দিতে পারেনি। এই নিয়ে আমার সৃষ্টিকর্তার উপরেও প্রচুর ক্ষোভ ছিলো বৈকি।
আর নিজের উপরেও জন্মেছিলো যথেষ্ট বিরক্তি। কত আর সহ্য করা যায়- ২৪ বছর, শুধু একা! এই ২৪ বছরেও আমার নারী মন এবং নারী শরীর সম্পর্কে অভিজ্ঞতা শূন্যকোঠায়। একটি বারের জন্যও ছুঁয়ে দেখা হয়নি কোন মেয়েকে। সত্যি; এতো মেঘ-বৃষ্টির মধ্যেও আমার উঠোনে একফোটা বৃষ্টির শব্দ পাইনি এই ২৪ বছর। কারো কারো নিয়তি ঠিক এরকমই; দুধ সাদা পবিত্র শৈশব আর যৌবন।
এসব বলতে ভালো লাগে, শুনতেও। কিন্তু এর মধ্যে বেঁচে থাকা, বেড়ে ওঠা বড় কষ্টকর।
তারপর একদিন এলো জীবনের সেই মাহেন্দ্রণ। প্রেম এলো, হ্যাঁ অনেকটা জোর করেই প্রেম এলো। আমাকে ভাসিয়ে গেলে, আমাকে ডুবিয়ে গেলো।
এরপর একদিন আমাকে পুনরায় আগের মতো একা থাকার অনুরোধ করে সে চলেও গেলো। সে চলে যেতে বাধ্য হলো কারণ আমি পারিনি বীরত্ব দেখাতে, পারিনি তাকে ঘরে তুলে নিতে, অধিকার দিতে। সব মানুষ সব কিছু পারেনা। কারো কারো সীমাবদ্ধতা থাকে সকালের শিশির ভেজা দূর্বাঘাসে হাঁটতেও।
এরপর কেটে গেছে বেশ কিছু সময়, মিশে গেছে কত নদীর জল, লোনা সাগরের জলে।
কত কিছুই হয়েছে। শুধু আমার হয়নি ভুলে যাওয়া। আজও পূর্ণিমার চাঁদ উঠলে কষ্টটা বেড়ে যায় অস্বাভাবিক ভাবে। এই এক প্রেমের কষ্ট আমায় কাঁদিয়ে বেড়াই অহরনিশি। তাই জীবনে আরও ১১টি প্রেমের কোন আশা-ই করিনা।
জীবনে এখনও আমার দুপুর গড়াইনি। কিন্তু আমার চোখে শেষ বিকেলের রঙ খেলে যায় প্রতিদিন প্রতিক্ষণ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।