শিলা এই ছোট মেয়েটির নাম, বয়স কতই বা ২-৩ হবে। আজ ওর সাথে আমার পরিচয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপারাজয় বাংলার পদদেশে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম দিন উপলক্ষে কয়েজন বন্ধুর সাথে বিকালে আড্ডা মারতে যাওয়া এই আর কি ? আড্ডা দিছিলাম এই সময়ে দুইটি শিশু। বড়টি হামিদা আর ছোটটি শিলা , শিলা অবশ্য হামিদার কোলে করে এসে ঠিক আমাদের সামনে কোল থেকে নামল আর হাতটি বাড়িয়ে দিল একটি টাকার আশায় । শিলার দিকে তাকিয়ে মেনে নিতে পারছিলাম না এত ফুটফুটে একটি পথশিশু যে ক্ষুধা , তৃষ্ণা, আবাস টিকিয়ে রাখার জন্য হাত পাতছে।
সব তখন মিথ্যে হয়ে যায়, যখন মানুষ বলে জন্মেছে শিশু তাকে বসবাসের জায়গায় করে দিতে হবে । আমার কাছে মিথ্যে হয়ে যায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা কারন অপারাজয় বাংলার পদদেশে ,যে ওর সাথে আমার পরিচয় ।
কিছু কথা হল তার প্রেক্ষিতে জানতে পারলাম ওরা তিন বোন , বড়টির নাম মিলা , হমিদা আর সবথেকে ছোটটি শিলা থাকে পাশের সোরাওয়ারদ্দী উদ্দ্যানে। শিলা জন্মের পর ওদের বাবা , ওদের ছেড়ে চলে গেছে !!! এখানে বলে রাখি আমি যতবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাই প্রতিবার কোন না কোন পথশিশুর সাথে দেখা হলে আমি যে অবাক তথ্য পেয়েছি তা হল, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কিছু পশু শ্রেনীর পুরুষ তাদের জন্ম দিয়ে পালিয়ে যায়। সম্মানীত স্যার হুমায়ন আহমেদ বেঁচে থাকলে , আমি তাকে বলতে পারতাম স্যার আপনি ভুল , আপনার কথা " পৃথিবীতে খারাপ মানুষ থাকতে পারে , কিন্তু একজন খারাপ বাবা নেই "
কথায় কথায় হামিদাকে বললাম তোর ছোট বোন কে আমায় দিয়ে দেয় আমি নিয়ে যাই আমাদের বাসায় ভালই থাকবে , আমার কথায় সে যেভাবে অবাক করে তাকালো এবং দৃঢ় স্বরে বলল না ।
পরে ভেবে দেখলাম আসলেই তো আমি ওকে নিয়ে কিইবা করতে পারব ওর জন্য ? যেখানে আমি এখন নিজেকেই নিজের দ্বায়িত দিতে পারি নি! সেখানে ওর দ্বায়িত্ব নিব কিভাবে ?? মনটাই খারাপ হয়ে গেল ।
এই পৃথিবীতে শুধু আমরা আমাদের নিয়ে ব্যাস্ত ... স্বর্গ, টাকা, বাড়ী, সম্মান ক্ষমতা এই তো আর কি চাই ? রাষ্ট্র তার দায়িত্ব পালন করছে না । জনগন তার দ্বায়িত পালন করছে না আর আমি ও আমার অবস্থান থেকে দ্বায়িত পালন করছি না । কিন্তু চাই আমাদের সব চাই ! চাই ! চাই!
জানি না এই শিশুটির পরিনতি কি ? আসলে আমি জানতে চাই ও না ! কারন জেনে কিইবা হবে ? সমাজএর যাঁতাকলে আমি ও যে ওই চাই এর দলে !!! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।