আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাইরেসিরও দরকার আছে : গিয়াস উদ্দিন সেলিম

DO I NEED TO REMIND THAT I RULE

ভূতের মুখে রাম নাম! গিয়াস উদ্দিন সেলিমের কথা শুনলে প্রথমে সেটাই মনে হবে। বলে কিনা, পাইরেসিরও দরকার আছে। এটা না হলে কিছু মানুষ বঞ্চিতই থেকে যেত। তাদের আর 'মনপুরা' দেখা হতো না। অথচ বৃহত্তর নোয়াখালীর এই কৃতিসন্তানই একমাত্র পাইরেসি ঠেকিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রের রেকর্ড ভেঙেছেন বাণিজ্যের বিচারে।

পাইরেসি মড়ক ঠেকানোর জন্য সেলিমের কৌশল যেন জলজ্যান্ত এন্টিভাইরাস। সম্প্রতি সেলিম ‘মনপুরা’র বিপণন থেকে খানিক মন উঠিয়ে মন বসিয়েছেন তার নতুন ছবি ‘কাজল রেখা’তে। মূলত সেই ফাঁকেই ‘মনপুরা’ পাইরেসি হয়ে এখন সর্বত্র। এ নিয়ে সেলিম খুব একটা মনক্ষুণ্ণ নন। তিনি বলেন, কম তো আর চেষ্টা করলাম না।

তাও আবার একক উদ্যোগে। এখন পাইরেসি হচ্ছে হোক। কারণ, একটা শ্রেণী আছে যারা পাইরেসি ক্যাসেট না পেলে কোনো কিছু দেখতে বা শুনতে চায় না। নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি মানুষের সহজাত দুর্বলতার মতোই। তাছাড়া আর কত চেক দিবো।

আমি মনে করি ‘মনপুরা’ দেশের প্রায় প্রতিটি কোনায় এরই মধ্যে চলে গেছে। এখন পাইরেসি হয়েও খুব একটা লাভ নেই। বরং আমরা এখন দেশ জয় করে দেশের বাইরে এ ছবিটাকে নিয়ে যেতে চাই। অংশ নিতে চাই বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসব আর আন্তর্জাতিক টিভি চ্যানেলে। ‘মনপুরা’ নিয়ে সেলিমের আন্তর্জাতিক ভাবনা এখনও অব্যাহত রয়েছে, তবে তার চলমান কার্যক্রম ‘কাজল রেখা’কে নিয়েই।

এরই মধ্যে এর চিত্রনাট্য তৈরিতে নেমে পড়েছেন ঐতিহাসিক ময়মনসিংহ গীতিকাকে পাশে রেখে। সেখান থেকে তিনি চিত্রনাট্যের মধ্য দিয়ে তুলে ধরছেন বাংলার ৫-৬শ’ বছরের ইতিহাস। তিনি বলেন, এখানেও প্রেম-ট্রেমের চেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে আমরা ‘কাজল রেখা’র মধ্য দিয়ে বাংলার ঐতিহ্যটাকে তুলে ধরতে চাই। কারণ, বাঙালি ইতিহাস-ঐতিহ্য ভুলে যায়। যার জন্য এই ‘কাজল রেখা’র বড্ড প্রয়োজন মনে করছি।

আমি দেখাতে চাই কয়েকশ’ বছর আগে এই আমরা কেমন ছিলাম। সেলিম ‘কাজল রেখা’র চিত্রনাট্য তৈরি করতে গিয়ে আসন্ন ঈদ বাজারে নাটক তৈরির শত লোভনীয় অনুরোধ পাশ কাটিয়েছেন দ্ব্যর্থহীনভাবে। তিনি বলেছেন, নাটক যে বানাবো না তা কিন্তু নয়। আমি নাটকের মানুষ, এটা এখনই ভুলে যাইনি। যেতেও চাই না।

তবে আমি এখন কাজল রেখাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাই না, ঈদের নাটকের মধ্যে ডুব মেরে। তাছাড়া নাটক বানানোর জন্য আমাদের এখানে এখনও অনেক গুণী এবং জনপ্রিয় নির্মাতা আছেন। সেখানে আমি একজনের অনুপস্থিতি ব্যাপার না। এদিকে কাজল রেখার চিত্রনাট্যের পাশাপাশি এরই মধ্যে শুটিং লোকেশন খুঁজতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন সেলিম। চলতি সপ্তাহে টানা ১০ দিন সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওর-বাঁওড়ে কাটিয়ে এসেছেন মনপুরা’র টেকনিক্যাল টিম নিয়ে।

ঘরে বসে ‘কাজল রেখা’র যে অংশটি লিখছেন, ঠিক সে অংশটি চিত্রায়ণের যুৎসই লোকেশন খুঁজে বের করছেন। কারণ, হাতে খুব একটা সময় নেই। তিনি বলেন, হাতে সময় মাত্র ২০১০ সাল। এই এক বছরের মধ্যে ‘কাজল রেখা’কে এডিটিং প্যানেলে তুলতে হবে। আর ২০১১ সালের প্রথমদিকেই তুলতে হবে সিনেমা হলে।

এর মধ্যে শুটিং, এর আগে স্ক্রিপ্ট, লোকেশন, পাঁচশ’ বছর আগের কস্টিউম, কাস্টিংসহ সবকিছু গুছাতে হবে এ বছরের মধ্যেই। ‘মনপুরা’র আকাশচুম্বী ব্যবসার পর ‘কাজল রেখা’র শুটিং। এবারতো আর টাকার ঝামেলা নেই। দরকার হবে না সমবায় সমিতির। কাজল রেখা’র শুটিংয়ের জন্য দেশের বাইরে যাবেন নাকি? অনেকটা ঘৃণাভরেই সেলিম বলেন, প্রশ্নই আসে না।

পুরো শুটিং দেশের মধ্যেই হবে। আর সবাই মিলে কোটি কোটি টাকা ব্যবসার কথা বলছেন ঘুরে ফিরে। একবারও কি ভেবেছেন, এই ‘মনপুরা’ যদি সফল না হতো তাহলে বাকি জীবনটা আমাকে কৃতদাস হয়ে থাকতে হতো। সুতরাং বাণিজ্যের ভাবনায় উদ্বেলিত হতে চাই না, কাজ করতে চাই। আরও অনেক কিছু বাকি রয়ে গেল।

-সৌজন্যে: দৈনিক মানবজমিন

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.