সব কিছুর মধ্যেই সুন্দর খুঁজে পেতে চেষ্টা করি............
বকশিশের অপপ্রয়োগ বন্ধ হোক
কাজের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে সানন্দচিত্তে কাউকে কিছু টাকা-পয়সা প্রদান করার নাম বকশিশ। যাকে আমরা পারিতোষিক, ইনাম বা পুরস্কারও বলতে পারি। বকশিশ দাতা-গ্রহীতার মধুর সম্পর্ক আমাদের সংস্কৃতিরই অংশ। এ নিয়ে বহু উপাখ্যান আমাদের জানা আছে। কিন্তু আজকাল অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বকশিশের স্বরূপ হারিয়ে গেছে।
ক্ষেত্র-অক্ষেত্র, কাঙিক্ষত-অনাকাঙিক্ষত, যৌক্তিক-অযৌক্তিক বাছ-বিচার নির্বিশেষে বকশিশের সংক্রমণ ঘটেছে। এখন রীতিমতো ছিন্তাইকারীর মত বকশিশ দাবি করা হয়। অনেক অফিস-আদালতে সেবা গ্রহণ করতে গেলে জনগণকে বকশিশ আতঙ্কে তটস্থ হতে হয়। বলতে দ্বিধা নেই যে, বকশিশের বিকৃত চর্চা থেকেই সমাজে দুর্নীতির বিস্তার ঘটে। তাই রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতির স্পর্শ প্রতিহত করতে চাইলে বকশিশের সংজ্ঞাকে পূর্বাবস্থায় নিতে হবে।
এজন্য যে বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেয়া জরুরী তার মধ্যে অন্যতম হলো:
(১) বিদ্যমান নিয়ম-নীতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সঠিক সময়ে সেবা গ্রহণকারীকে কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হতে হবে।
(২) সংশ্লিষ্ট অফিস-আদালতের নৈমিত্তিক কর্মতৎপরতার জন্য সুনির্দিষ্ট ও ফলপ্রসূ কার্যপ্রণালী বিধির অনুসরণ নিশ্চিত করার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা।
(৩) নিয়মিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তা কর্তৃক তার অধস্তন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সার্বিক কর্মকাণ্ডের তদারকি ও জবাবদিহি বাস্তবায়ন করা।
(৪) বকশিশ গ্রহণে প্রলুব্ধ ব্যক্তির চাহিদা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর করা।
(৫) কৌশল অবলম্বন করে বকশিশ প্রদানের বাধ্য ব্যক্তি/ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা।
(৬) সেবা গ্রহণকারীর অভিযোগ বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোতে অভিযোগ বাক্স স্থাপন করে তা মনিটরিং করা।
(৭) অভিযোগ প্রমাণ হলে কর্মকর্তা-কর্মচারীকে তাৎক্ষণিক শাস্তি দেয়া।
যে বকশিশ দুর্নীতি বিস্তারের প্রারম্ভিক স্তর হিসেবে পরিচিত হচ্ছে, সমাজে সেই বকশিশকে নিরুৎসাহিত করা প্রয়োজন। আমাদের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিষয়টিকে এখনই গুরুত্ব সহকারে উপলব্ধি করতে হবে। যে কোনো মূল্যে বকশিশের প্রকৃত অর্থায়ন প্রতিষ্ঠিত করা সময়ের দাবি।
এজন্য সংশ্লিষ্ট মহলকে সচেতন থেকে প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালনের বিকল্প নেই। আসুন, আমরা সচেতন ভাবে বকশিশ নামের আড়ালে যত্র তত্র ছিন্তাইয়ের হাত থেকে পরিত্রানের পথ খুঁজি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।