আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সার্চ ইন্জিন নিয়ে কান্না, আর না আর না!

ভালো লাগে জোছনা রাতে মেঘ হয়ে আকাশে ভাসতে.... :)

বেশ কিছু পোস্ট পড়লাম আমাদের একটা শিশুর হঠাৎ আবিস্কার (!) আর তার বাবা মা-র সেটাকে নিয়ে মিডিয়াতে যাওয়া। মিডিয়ার অন্ধের মত সেটা নিয়ে বাড়াতে বাড়াতে আকাশ ছুঁইয়ে দেয়া নিয়ে সমালোচনা। ফলাফল স্বরূপ, সামুতে ডেভেলপলার/প্রোগ্রামারদের রাগ মোচন, এবং তা দেখে আরেকজনের রাগের উদ্রেক- সবাই কেনো একটা বাচ্চাকে নিয়ে লাফা লাফি করছে। পুরো বিষয়টা পর্যবেক্ষণ করে যা মনে হলো, ২ পক্ষেরই খেপার যৌক্তিকতা আছে মিডিয়ার কান্ড কর্মে। জাতীয় মিডিয়াতে আচমকা এরকম ভুয়া নিউজ বাংলাদেশে যদিও নতুন না, কিন্তু এরকম ফলাও করে প্রচার করে মিডিয়া প্রমাণ করেছে, ১।

কম্পিউটার সাইন্সের কোনো বেইল নাই। একটা বাচ্চা ছেলেও বড় কিছু করে ফেলতে পারে। (এটাতেই প্রোগ্রামারদের মূল রাগ। ) ২। আমাদের শিশুদের অনেক প্রতিভা।

৩। বাপ মা/ মামা চাচা যদি জায়গামত থাকে তাহলে ১ আর ২ কোনো ব্যাপার না! ফলাফলস্বরূপ কিছু ব্লগার ইতিমধ্যে তাদের নিজস্ব সার্চ ইন্জিন বানিয়ে নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। কেউ কেউ কোনো কোড না লিখেই কাজটি সম্পন্ন করেছেন। একটা সময় ছিল (১০ বছর আগে), একটা ওয়েব পেইজ বানানোর জন্য এইচ টি এম এল শিখতে হতো- এখন ড্রাগ এন্ড ড্রপ করে ছবি আঁকার মত করে আমরা ওয়েব সাইট বানিয়ে ফেলি। ভবিষ্যত-এর প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজগুলোও তাই হবে।

দেখলে মনে হবে কেউ কোড লেখার বদলে আঁকা আঁকি করছে কম্পিউটার স্ক্রীনে (এখনও আছে ইউ এম এল, অথবা WSDL)। আমার মাথায় কোনো আইডিয়া আসলেই সেটা নিয়ে আঁকাবুঁকি শুরু করি, কোড অনেক পরের কাজ। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে অনেক কঠিন জিনিস সহজ হবে- আসবে আরো কঠিনতর সমস্যা। এটাই তো নিয়ম। এক সময়ে একটা অপারেটিং সিস্টেম চালানোর জন্য একজন ইন্জিনিয়ার লাগত- তারও আগে এই বিষয়ে পি এইচ ডি না থাকলে কম্পিউটার অপারেটরের চাকুরী হতোনা- আজকে আমাদের ৩-৪ বছরের ছোট শিশুরা কম্পিউটার অন করে কারো সাহায্য ছাড়াই গেইম খেলছে, ছবি আঁকছে- করছে অনেক কাজ।

তাই বলে তো পিএইচ ডি ধারীদের চাকুরী চলে যায়নি। আমার মনে হয় প্রযুক্তিবিদদের এইটুকু সহনশীল হওয়া উচিত। প্রযুক্তি দুনিয়াটাই এমন, কয়েক বছর ঘাপটি মেরে পড়ে থাকা মানেই অনেক পিছিয়ে পড়া। এ কারণে নিয়মিত নিজেকে আপডেট রাখতে হয়। অনেকে মুহম্মদ জাফর ইকবাল-কে নিয়ে বলেছেন উনি কিভাবে এইটা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে বলেন।

সেটা আমিও শুরুতে ভাবছিলাম। পরে খেয়াল করে দেখলাম উনি হয়তো আজকের প্রযুক্তি নিয়ে কোনো খোঁজখবর রাখেন না। ইন ফেক্ট, এটা তার সাবজেক্টও না। উনি এতটুকু জানেন একটা সার্চ ইন্জিন বানানো অনেক কঠিন কাজ (যেটা সত্যি)। হয়তো এখনকার দিনের ম্যাশআপ ট্যাকনোলোজী দিয়ে যে কত কঠিন কাজ সহজে (কোনো প্রোগ্রামিং নলেজ ছাড়া) করা যায় সেটা জানেননা।

(উদাহরণ: ইয়াহু টিউবস)। এটা শুধুই আমার অনুমান। তবে যৌক্তিক অনুমান। তাই আমার মতে, আমাদের মিডিয়ার চৌদ্দগুস্টি উদ্ধার করা ছাড়াও যা যা করার আছে, ১। আমাদের ভালো কাজ গুলো চালিয়ে যাওয়া।

২। কিছু সত্যিকারের ব্রেকথ্রু টাইপের কাজ করা। (এখনও হাতে গুনা কয়েকটি ছাড়া কিছু দেখিনি। ) ৩। বাস্তবতাকে স্বীকার করা।

যত ভাবে সম্ভব নিজের স্কিল ডেভেলপ করা। ৪। বাচ্চাদেরকে আরো উৎসাহিত করা। সার্চ ইন্জিন বানানো ছেলেটা যেহেতু মিডিয়াতে প্রচার পেয়েই গেছে, আমাদের শিশুদের সেটা থেকে কিছু নেয়া। যে তারাও কিছু করতে পারবে।

৫। যত বেশি ডেভেলপার হবে দেশে, সেটা আমাদের জন্য মঙ্গলজনক। বেশি ডেভেলপার, বেশি কাজ, বেশি বড় মার্কেট। বিদেশী বিনিয়োগ আনতে হলে এর কোনো বিকল্প নেই। তাই কোনো কাজে কাউকে নিরুৎসাহিত না করে, বরং উৎসাহিত করুন।

(বেশ কিছু ব্লগে দেখলাম, কম্পিউটার সাইন্স না পড়া ছেলেমেয়েদের গালাগালি দেয়া হলো। ) ৬। মানুষকে সম্মান করা বাড়াতে হবে। আমাদের মধ্যে একটা হাম্ভরা ভাব চলে আসে কিছু করলেই। আমার অনেক পরিচিতদের মধ্যেই তা দেখেছি।

অনেক ভালো ভালো ডিগ্রী আছে, কিন্তু ডেভেলপমেন্টের অনেক সাধারণ কনসেপ্ট ঠিক মত বুঝেনা, বুঝতে চায়ওনা। বুঝাতে গেলে বলে এটা আর এমন কঠিন কি! একটা বাচ্চার কাছ থেকেও আমার অনেক কিছু শিখার থাকতে পারে। (এক্ষেত্রে উদাহরণের বাচ্চাটার কাছ থেকে শিখতে পারি কিভাবে নিজের প্রচার করতে হয়- আমাদের অনেক মেধাবীই প্রচারবিমুখ- যেটা ঠিক না)। একটু সাধারণ আলোচনা মূলক পোস্ট হয়ে গেলো। আশা করি ভুল ভাল ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.