জাগো মানুষ আজ জাগো, ভেবনা তুমি বাঙালী কি বাংলাদেশী....কেটে যাবে রোদ ভাঙ্গবে আঁধার, আমি দেখব মাগো তোমার মুখের হাসি
স্থান জহুরুল বাশার বিমানঘাঁটি। বেলা বেজে ৪টা।
কনফারেন্স হলের গোপন মিটিঙে থমথমে অবস্থা। উপস্থিত বাংলাদেশের বিমানবাহিনীর বৈমানিকেরা মন দিয়ে শুনছেন অপারেশন চীফের ব্রিফিং। দেয়ালের প্রজেক্টর মেশিনের বিশাল স্ক্রিনে একটি ছবির দিকে সবার দৃষ্টি সেঁটে আছে।
ভারতের টিঁপাইমুখ ড্যাম প্রকল্প। বাংলাদেশের জন্য অশনি এক নাম। বাংলাদেশের ভূমিকে গ্রাস করে এদেশের মানুষকে চিরতরে গোলামীর জিন্ঞ্জিরে আবদ্ধ করার মহাপরিকল্পনা নিয়ে তিন বছর পূর্বে এ প্রকল্পে হাত দেয় ভারত। বাংলাদেশের মেহ্নতি সাধারণ-মানুষের শত প্রতিবাদ-আন্দোলন-অনুরোধ উপেক্ষা করে এতদিন ধরে ড্যামের কাজ এগিয়ে নিয়েছে পূরোহিত্ববাদী ঐদেশটি।
বর্তমানে প্রকল্পটির শেষ পর্যায় চলছে।
আর একটি মাত্র পিলার করতে পারলেই 'বরাক' নামক নদীটির গতিপথ বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে চিরতরে ঘুরে যাবে ভারতের দিকে। ফলে শুকিয়ে যাবে ঐ নদীর বাংলাদেশ অংশ- সুরমা ও কুশিয়ারা। মরুভূমি হয়ে যাবে এদেশের এক-চতুর্থাংশ জমি।
প্রকল্পের ঐ বিশেষ পিলারটি স্থাপন করার কথা ছিল গত মাসেই। কিন্তু, সে পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেয় বাংলাদেশের অকুতোভয় একদল কমান্ডোবাহিনী।
শত অনুরোধেও যখন ভারত থামছিল না, তখন বাধ্য হয়ে এক সুইসাইড মিশনে পাঠানো হয় উনিশ সদস্যের ঐ দলটি। বাংলাদেশের সশস্ত্রবাহিনীর সবচেয়ে মেধাবী ও চৌকশ সদস্যদের নিয়ে গড়া কমান্ডোদলটি টিঁপাইমুখ প্রকল্প ঘিরে তৈরী ভারতীয় সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা বেষ্টনীর দূর্ভেদ্য দেয়াল ছারখাড় করে দিয়ে ড্যামের ঐ বিশেষ পিলারটির কাজের অগ্রগতি থামিয়ে দেয়, আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে উড়িয়ে দেয় পিলারের সরঞ্জামবাহী ৪টি লঞ্চ ও ভারতীয় নৌবাহিনীর পাহারাদার ৬টি যুদ্ধজাহাজ। এতে ব্যাপক ক্ষতি হয় প্রকল্পের স্হাপনাগুলোর। সুইসাইড সেই অ্যাটাকে দেশের জন্য একে একে জীবন দেন দেশের ঐ সেরা সন্তানেরা।
অপারেশন রুমের প্রজেক্টরের মেশিনের পর্দায় ভেসে উঠা টিঁপাইমুখ ড্যামের স্যাটেলাইট ভিউ'র দিকে তাকিয়ে সেই সুইসাইড মিশনের স্মৃতি রোমন্থন করছিল ফ্লাইট ল্যাফটেনেন্ট তালহা জুবায়ের।
ঐ মিশনে তার বড় ভাই মেজর উমর শাহাদাৎ বরণ করেন। কেউ ফিরে না আসায় কি হয়েছিল বিস্তারিত জানা যায়নি, তবে রেডিও মারফত শেষ যোগাযোগে কমান্ডোদলের প্রধানের কাছ থেকে যতদূর জানা গিয়েছিল, পূর্ব-পরিকল্পনানুযায়ী দু'টো দলে ভাগ হয়ে তারা টিঁপাইমুখ আক্রমন করেন। মেজর উমরের নেতৃত্বে একদল কমান্ডো বুকে বোমা বেঁধে প্রকল্পের মালবাহী জাহাজ ও তার নিরাপত্তায় নিয়োজিত ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজগুলোর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। দ্বিতীয়দলটি কমান্ডোচীফের নেতৃত্বে ভারতীয় সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা বেষ্টনীর স্ট্রং-হোল্ড আক্রমন করে। রেডিওতে ভেসে আসা প্রচন্ড গোলাগুলির শব্দের মাঝে চীফ জানান, কিছুক্ষণ আগে কয়েকটি জাহাজ প্রচন্ড বিস্ফোরনে ধ্বংশ হয়ে গেছে।
সেটাই ছিল শেষ যোগাযোগ। পরে গোয়েন্দাসূত্রে ও স্যাটেলাইট মারফত জানা গিয়েছিল ভারতীয়বাহিনী ও প্রকল্পের প্রচন্ড ক্ষতির কথা।
পর্দার দিকে দৃষ্টি সেঁটে থাকা তালহা জুবায়ের টের পায়, তার চোখের কোনা দু'টো ভিজে উঠেছে। মনে মনে প্রতিগ্বা নেয়, বড়ভাইয়ের এ আত্মত্যাগ কিছুতেই সে বৃথা যেতে দেবেনা। কিছুদিন আগেই খবর এসেছে, ভারত আবার শুরু করেছে তার প্রকল্পের কাজ।
এই খবরে বাংলাদেশের মানুষের সব ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে পড়েছে। তাদের প্রচন্ড চাপে সরকার আনুষ্ঠানিক ভাবে যুদ্ধ ঘোষনা করতে যাচ্ছে ভারতের বিরুদ্ধে। আগের আক্রমনের কথা ভারত চেপে গিয়েছিল। চীনের পরে তৃতীয় পরাশক্তি হিসেবে নিজেকে তৈরী করতে থাকা ভারত বাংলাদেশের মত ক্ষুদ্র একটি দেশের কাছে এমন মার খাওয়া বহির্বিশ্বে প্রকাশ পেলে হাসিরপাত্রে পরিণত হতে পারে বিধায়, ভারত সরকারও ব্যাপারটা চেঁপে যায়।
বাংলাদেশের সামরিক বিশেষগ্যদের ওয়ারপ্লেন অনুযায়ী বিমান হামলা চালিয়ে প্রথমেই পুরো ড্যাম এমন ভাবে ধ্বংশ করে দেওয়া হবে যাতে অন্ততঃ বছর পাঁচেক পিছিয়ে যায় প্রকল্পটি।
আর সেজন্যই আজকের এই বিশেষ ব্রিফিং।
বিমানশক্তিতে ভারতের চেয়ে বাংলাদেশ অনেক অনেক পিছিয়ে। মিরেজ,মিগ-৩১ ও ৩৩, পাইলটবিহীন যুদ্ধবিমান নিয়ে গড়া ভারতের বিমানবাহিনীর সাথে আকাশযুদ্ধে জয়ী হওয়া গোটা কয়েক মিগ-২৯ ও পুরোনো মডেলের ফাইটার নিয়ে গড়া বাংলাদেশের বিমানবাহিনীর পক্ষে অসম্ভব ব্যাপার।
[পরবর্তী পর্ব- ২৮অগাস্ট]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।