এখন ভাবলে অনুতপ্ত হই। কী কারনে এই শবেবরাত আমাদের কাছে আকাঙ্খিত ছিল! এই বিশেষ রাতগুলো কী উৎসাহেই না নষ্ট(!) করে গেছি বছরের পর বছর।
হে আল্লাহ, ক্ষমা করো।
স্কুলের গন্ডি মাত্র পেরিয়েছি। শবেবরাতের রাতে বাইরে থাকার ভিসা সবে বাবা দিতে শুরু করেছেন।
রাত ১টা। পরের বছর রাত ২টা। এভাবে একটা সময় এসে সারারাত ।
শবেবরাত মানেই, রাত্রী যাপনের বুক ভর্তি আনন্দ। যে বন্ধুদের সাথে দিনভর এক থাকা তাদের সাথে রাতভরও থাকা যাবে, আড্ডা দেয়া যাবে।
চোখ ভর্তি শহরের জেগে থাকার উচ্ছাস আর ব্যাগ ভর্তি পটকার ব্যাপক মজুদ।
আহ। সলতা।
আহ। মরিচা।
আরো কত রকম বোমা। আরো কত যে আয়োজন!
প্রথম দফায় বারো চৌদ্দ রাকাত নামাজ পড়া। তারপরই আল্লাহ'র জমিনে বেরিয়ে পড়া। মহল্লায় মহল্লায় বন্ধুদের অপেক্ষা। ফোন।
দল বেঁধে সব জায়গায় ফরজ হাজিরা। হিন্দু বন্ধুদের জোর করে আটকে রাখা আর জামাতে বোম ফাটানো।
রাত গভীর হলে হোটেলে খাওয়া দাওয়া।
সে সব কী রাত ছিল! সেকি সময় ছিল!
পটকার মতো গর্জনশীল আর মরিচার মতো বেপোরোয়া ।
অতঃপর সারারাতের উচ্ছলতা শেষে সকালে ফজরের নামায পরে চোখে ব্যাপক ক্লান্তি আর চেহারায় অসামান্য পূন্যবাণের ছাপ নিয়ে বাড়ীতে প্রবেশ।
এখনো শবেবরাতে বাইরে যাওয়া হয়। একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নিজেরা নিজেরা নামায পড়ি। তারপর বাড়ী ফিরে আসি। কখনো সারারাত জাগিও। তবে আগের মতো না।
বন্ধুবান্ধব বড় হয়ে গেছে।
আওয়ামীলীগ, বিএনপির জনসভার মতো বন্ধুদের বিশাল জমায়েত এখন জাসদ, বাসদের সমাবেশে রূপ নিয়েছে।
সবাই আসে না। অনেকে বিয়ে-টিয়ে করে ঘরে বন্দি।
সময় অনেকটা ম্লান ।
ম্লান জেনেও এখনো আমরা প্লান করে যাই। বাইরে বেরোই। এখন যদিও নামাযটাই মূল। ফাঁকে ফাঁকে আড্ডা।
তারপরও রাতে বেরোলে কেমন যেন লাগে।
শহর ভর্তি মানুষের চেহারা আর সদ্য স্কুল পেরোনো কমবয়সী ছেলেগুলোর উচ্ছলতায় খুঁজে ফিরি আমাদের মহিমান্বিত রজনীগুলো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।