আমি জানি ভাল কিছু করার মাঝে প্রকৃত আনন্দ । আমি সব ভালদের সঙ্গী হতে চাই।
ছাত্রীদের উত্যক্ত করাকে কেন্দ্র করে খুলনার সরকারি বিএল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ছাত্রলীগ চারটি বিভাগ ভাংচুর, ছাত্র-শিক্ষককে মারধরসহ তুলকালাম কান্ড ঘটিয়েছে। এসময় তাদের হামলায় অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক প্রফেসর আব্দুল আলিম, ছাত্র আব্দুল হাকিম, মহসিন ও জুলফিকার গুরুতর আহত হন। গতকাল বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর তাদের কর্মকান্ডে বাধা দেয়ায় প্রফেসর আব্দুল আলিমের বহিষ্কারের দাবিতে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়। ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে ইতিহাস বিভাগের কক্ষে ঢুকে কয়েকজন বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতা প্রথম বর্ষের ৩/৪ জন ছাত্রীকে উদ্দেশ করে অশ্লীল উক্তি করে। পরে ছাত্রীরা এ ঘটনা শিক্ষকদের জানায়।
শিক্ষকরা বিষয়টি জানার জন্য তাদের সাথে কথা বলতে গেলে বহিরাগত ওই ছাত্রলীগ নেতারা শিক্ষকদের সাথে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় এবং মারমুখী আচরণ করে। এ সময় ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক তৌহিদুর রহমান ও কামরুজ্জামান ছাত্রীদের সাথে এ ধরনের আচরণ করার কারণ জানতে চাইলে তারা তাদের সাথে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয়। অন্য শিক্ষকরা এগিয়ে আসে এবং কাশিপুর এলাকার বাসিন্দা ও ছাত্রলীগ নেতা আকরাম হোসেন ও কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র আকমলসহ ৫ জনকে কক্ষে আটকে রাখে। এ খবর পেয়ে ড. জোহা হল, তিতুমীর হল, কাজী নজরুল ইসলাম হল ও সুবোধ চন্দ্র ছাত্রাবাস থেকে ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে এবং ইতিহাস চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আব্দুল হাকিমকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। তাকে আশংকাজনক অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এসময় তারা ইতিহাস, অর্থনীতি, সমাজ বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিভাগের কক্ষ ভাংচুর করে এবং আসবাবপত্রের ক্ষতিসাধন করে। ভাংচুরে বাধা দিতে গেলে অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল আলিমকে মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। ঘটনার সময় অন্যান্য শিক্ষক কর্মচারীরা আত্মরক্ষার্থে নিরাপদে আশ্রয় নেয়। এতে ৮/১০ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মহসিনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র জুলফিকারকে দৌলতপুর পিরামিড ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
বাকীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর তাদের কর্মকান্ডে বাধা দেয়ায় প্রফেসর আব্দুল আলিমের বহিষ্কারের দাবিতে ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। এতে বক্তব্য দেন মনিরুল ইসলাম মনি, শফিকুর রহমান, জামাল শেখ, সাইদুর রহমান বাবলু, হাবিবুর রহমান, মেহেদি হাসান, আব্দুর রাজ্জাক, বাপ্পি প্রমুখ। বিকাল তিনটায় একাডেমিক কাউন্সিল ও ছাত্র নেতৃবৃন্দ যৌথ সভায় মিলিত হয়। বৈঠকে ঘটনার নিন্দা জানানো হয় এবং দোষীদের চিহ্নিত করতে তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
এ ব্যাপারে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুন্সি আসাদুল্লাহ বলেন, ছাত্রীদের উত্যক্ত করার ঘটনা সম্পর্কে শিক্ষকরা জানতে গেলে ছাত্রলীগ বহিরাগতদের নিয়ে ক্যাম্পাসে ভাংচুর চালায়।
এব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ ড. আহমেদ রেজার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বহিরাগত ছাত্রদের নিয়ে একটু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল । তবে তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ঘটনা নিয়ে একাডেমিক কাউন্সিল ও ছাত্র নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করা হয়েছে। আগামীতে কেউ পরিচয়পত্র ছাড়া কলেজে প্রবেশ করতে পারবে না।
প্রয়োজন হলে তদন্ত কমিটি করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।