সৎ ভাবে উপার্জিত এক টাকা অসৎ ভাবে উপার্জিত কোটি টাকার চাইতেও অনেক মূল্যমান চাকরির জন্য ঘুরে ঘুরে নিজের পায়ের তলা ক্ষয় করেছেন অনেকেই। এতে অনেকেই পান কাঙ্ক্ষিত সাফল্যের দেখা। যাঁরা পান না, তাঁদের মধ্যে অনেক ক্ষেত্রেই নেমে আসে হতাশা। সামান্য কর্মমুখী প্রশিক্ষণই বদলে দিতে পারে তাঁদের জীবন। সরকারের মাশরুম বিষয়ের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনেকটা তেমনই, যার মাধ্যমে ভাগ্য গড়ে নিতে পারেন সদ্য পাস করা কিংবা চাকরি-প্রত্যাশী যুবকেরা।
‘আসুন আমরা সবাই মিলে মাশরুম চাষ করি, নিয়মিত মাশরুম খাই এবং দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ি’—এই স্লোগান নিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মাশরুম নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। বেকার যুবকদের জন্য সরকারের যে কয়টি কর্মমুখী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে, তার মধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাশরুমবিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি উল্লেখযোগ্য। বিভিন্ন মেয়াদি এসব প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে যাচ্ছেন অনেকেই।
কেন মাশরুম: আশির দশকে দেশে মাশরুমের চাষ শুরু হয়। তবে ২০০৪ সালে বেসরকারি বিনিয়োগ আসার আগ পর্যন্ত এর পরিসর ছিল খুবই সীমিত।
পুষ্টি বিবেচনায় দিন দিন মাশরুমের কদর বাড়ায় এই খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী ব্যক্তির সংখ্যাও বাড়ছে।
সরকারের মাশরুম উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক সালেহ আহম্মদ বলেন, ‘দেশে চাষযোগ্য জমি দিন দিন কমছে। তাই খাদ্যের নিরাপত্তার জন্য বিকল্প ভাবতে হবে। এর মধ্যে অন্যতম মাশরুম। পুষ্টিগুণে এটি পৃথিবীজুড়ে সমাদৃত।
তা ছাড়া আছে ঔষধি গুণও। সব মিলিয়ে সুস্বাস্থ্যের জন্য খাবার হিসেবে মাশরুম অনন্য। ’ তিনি আরও জানান, মাশরুম চাষে বেশি জমির দরকার হয় না।
প্রশিক্ষণের ধরন: সাভারে অবস্থিত মূল কেন্দ্রসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৬টি মাশরুম সাব-সেন্টারে প্রশিক্ষণ দেয় জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ কেন্দ্র। তিন, পাঁচ, ১৪ ও ৬০ দিন—এই চার মেয়াদে প্রশিক্ষণগুলো দেওয়া হয়।
তবে ১৪ ও ৬০ দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় শুধু সাভার কেন্দ্রে। মাশরুম উৎপাদন, চাষের পদ্ধতি, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিপণন, পুষ্টিগুণ—সবকিছুর ধারণাই দেওয়া হয় প্রশিক্ষণে।
আবেদনের যোগ্যতা: মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ যেকোনো ব্যক্তিই মাশরুম বিষয়ে প্রশিক্ষণের জন্য আবেদন করতে পারেন। দুই মাসের প্রশিক্ষণ ছাড়া বাকিগুলোর ক্ষেত্রে এই শর্ত। তবে ৬০ দিনের প্রশিক্ষণের আবেদন শুধু তাঁরাই করতে পারবেন, যাঁরা ইতিমধ্যে অন্তত তিন দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং মাশরুম উৎপাদন, বিপণন ও সম্প্রসারণের কাজ শুরু করেছেন।
কীভাবে আবেদন করবেন: মাশরুম বিষয়ে প্রশিক্ষণের আয়োজন বছরে একবারই (ডিসেম্বরে) করা হয়। ৬০ দিনের প্রশিক্ষণের জন্য সাভার কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালকের বরাবর আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্রটি আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পৌঁছাতে হবে। এতে শিক্ষাগত, অন্যান্য যোগ্যতা, যোগাযোগের ঠিকানা ও নম্বরের উল্লেখ থাকতে হবে। প্রাপ্ত আবেদন পর্যালোচনা করে আবেদনপত্র বাছাই কমিটি ৩০ জনকে প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত করবে।
তবে অপেক্ষমাণ প্রার্থীরা পরবর্তী প্রশিক্ষণে অগ্রাধিকার পাবেন। তিন দিনের প্রশিক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে যোগাযোগ করে নিবন্ধন করা যাবে। তা ছাড়া নিজ খরচেও ১৪ দিনের প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ আছে।
সুযোগ-সুবিধা: দুই মাসের প্রশিক্ষণটি আবাসিক। এতে রয়েছে প্রশিক্ষণার্থীদের বিনা মূল্যে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও।
প্রশিক্ষণ শেষে মেলে সনদপত্র। আর প্রশিক্ষণে যাঁরা ভালো করবেন, তাঁরা কোর্স শেষে পাবেন ১৫ হাজার টাকার ভাতা। এ ছাড়া পরবর্তী সময়ে মাশরুমের বীজ উৎপাদন ও চাষসংক্রান্ত যেকোনো সমস্যায় তাঁদের পরামর্শ দেওয়া হবে। সনদধারীরা সহজ শর্তে ব্যাংক থেকে ঋণও পেতে পারেন।
যোগাযোগ করুন: মাশরুম উন্নয়ন জোরদারকরণ, জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন ও সম্প্রসারণকেন্দ্র, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, সোবহানবাগ, সাভার, ঢাকা।
ফোন: ০২-৭৭৪২৪৯৬। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।