আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অধুনিকতার নামে চলছে বেহায়াপনা

তুমি খুব স্লিম ,লোকে তোমাকে দেখলে শীষ বাজায় ,দুই একটা মন্তব্য করে । তুমি খুশিই হও । তোমার জন্য ছেলেরা পাগল । ফিদা । ওয়াও কি সুন্দর তোমার দেহসৌষ্ঠব।

এটার জন্য অহংকার করেবেড়াও তুমি তাই না !বুকের ওড়না গলায় পেচিয়ে চলো তুমি তাই । সগৌরবে চুল উড়িয়ে উড়িয়ে যাও তুমি ,ঠোটে কড়া লিপস্টিক দিয়ে,কোমর দুলিয়ে....লোকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকে । ইসলামে পর্দা হিসেবে হিজাবের বিধান রয়েছে। সাধারণত ইসলামী বক্তারা সবসময় মহিলাদের হিজাবের কথা বলেন। কিন্তু আল্লাহ পবিত্র কোরআনে প্রথমে বলেছেন পুরুষের হিজাবের কথা, তারপর নারীদের হিজাব।

সুরা নূরের ৩০ নম্বর আয়াতে আছে। হিজাব কথাটি শুনলে অনেকে আঁতকে ওঠেন। পর্দা করতে হবে, বোরকা পরতে হবে, স্কার্ফ মাথায় থাকতে হবে, সারাক্ষণ গৃহে বন্দী হয়ে দিন যাপন করতে হবে, পর পুরুষের সাথে কথা বলা যাবে না। এ ধরনের নানা প্রশ্ন-ভীতি মাথায় ভর করে। এটার একমাত্র কারণ পর্দা বা হিজাব কী জিনিস আমরা অনেকে তা বুঝি না।

এই অজ্ঞতাই আমাদের অনেক সময় ভুল পথে পরিচালিত করে। মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে হিজাব শব্দটি এসেছে পাঁচবার, যার আভিধানিক অর্থ হলো প্রতিহত করা, ফিরিয়ে আনা, আড়াল করা, আবৃত্ত করা, আচ্ছাদিত করা ইত্যাদি। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় হিজাব বা পর্দা সেই বিধিব্যবস্থা ও চেতনা যার মাধ্যমে ঘর থেকে শুরু করে, রাস্তা-ঘাট, ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণহীন কথাবার্তা, দর্শন, দৃষ্টিবিনিময়, সৌন্দর্য প্রদর্শন ও বলগাহীন আচরণ থেকে বিরত থাকা যায়। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন: আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনা স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের ওপর টেনে দেয়। এতে করে তাদেরকে খুব কমই চেনা যাবে।

ফলে তাদেরকে কেউ ইভটিজিং বা উত্ত্যক্ত করবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। (সূরা আহযাব: ৫৯) অনেক বোনদের পর্দার ব্যাপারে অযুহাত হলো, "আমার অন্তর পরিষ্কার আছে ! তাই হিজাবের দরকার নাই !"আমি বলবো, রাতের রাস্তায় গাড়ী চালানোর সময় অন্য গাড়ীর হেডলাইট জ্বালানো থাকা সত্ত্বেও আপনিও কিন্তু আপনার গাড়ীর হেডলাইট জ্বালিয়ে রাখেন ! কারন আপনার গাড়ীর উপর যাতে অন্য কেউ এসে না পরে ! তখন কিন্তু কেউ এই যুক্তি দেইনা যে, আমার চোখের জ্যোতি ভাল আছে, আমার হেডলাইট জ্বালানো লাগবেনা !আধুনিকতা মানে- উন্নত মানসিকতা। আর উন্নত মানসিকতা মানে- অন্যকে সহযোগীতা করা, অহংকার না করা, বিনয়ী ও ভদ্র হওয়া, সত্য কথা বলা , মিথ্যা কথা না বলা, কাউকে ধোকা না দেওয়া, কারো বিপদে এগিয়ে যাওয়া, সহমর্মিতা, কারো অধিকার হরন না করা, যার যার অধিকার বুঝিয়ে দেওয়া, বড়দের সন্মান ও ছোটদের স্নেহ করা, হাসি মুখে কথা বলা ইত্যাদি। হিজাব এখন এক ধরনের ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে ।

অনেকে মনে করে মাথায় স্কার্ফ পরলেই হিজাব হয়ে গেলো। পোশাক পরিচ্ছদ আকর্ষনীয় হবে না যা বিপরীত ব্যক্তিকে আকর্ষন করে। হিজাব বলতে শুধু পোশাক বুঝায় না। কোন ব্যক্তির আচরন,ব্যবহার্,দৃ­ষ্টি ভঙ্গি এমনকি ইচ্ছাকে বোঝায়্। পোশাক পরিচ্ছদের পাশাপাশি চোখ্, মন্,চিন্তা এমনকি হৃদয়ের হিজাব থাকবে।

বর্তমান সমাজ হচ্ছে সভ্য (!!!) ও শিক্ষিত সমাজ। অথচ কাজ-কর্মে দৃষ্টি দিলে দেখা যায় তারা যেন আদিকালের দিকে ফিরে যেতে চলেছে। আদিকালের মানুষ উলঙ্গ থাকত। কারণ হলো তারা কাপড় তৈরী করতে জানত না কিন্তু বর্তমানে তো কাপড়ের অভাব নেই। প্রচুরকাপড় উৎপাদিত হচ্ছে।

পোষাক আমাদের সংস্কৃতি অংশ। আর হিজাব মুসলিম মহিলাদের অন্যতম পছন্দের পোষাক। তথাকথিত সভ্য সমাজের লোকেরা একে মধ্য যুগিও পোষাক বলে থাকে কিন্তু তারাই মেয়েদের পণ্য বানিয়ে ছেড়েছে। বাংলাদেশের মতো একটি মুসলিম প্রধান দেশে দিন দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে হিজাব, পর্দা,শালীনতার প্রতি বিদ্বেষ বেড়েই চলছে। কয়েক বছর আগে যা কল্পনাও করা যেত না।

নিয়মের দোহাই দিয়ে বিগত দুই-তিন বছরে ইসলাম বিদ্বেষীতা বেড়েই চলছে। এক লোক ওয়াজে শুনলো, পাগড়ি পরা সুন্নত। একবার নামাজ পড়তে গিয়ে সে পাগড়ি নিতে ভুলে গেলো। তখন সে লুঙ্গি খুলে পাগড়ি বাঁধলো। ঐদিকে যে তার ফরয তরক হয়ে গেলো তাতে তার খেয়াল নাই।

আবার এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে বলছে, দোস্ত, মদ যেন গোঁফে না লাগে। তাহলে কিন্তু মাকরূহ-এর গুনাহ হবে। এই দুই গল্পের সাথে মিলে যায় কিছু কিছু হিজাবের অবস্থা। শরীরের আকষর্ণীয় ভাঁজ দেখিয়ে মাথা ঢাকার কোন অর্থ হয় না। অমুসলিম নারীরাও হিজাব পরতে পারেন।

যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ইসলামের অনুসারীরা হচ্ছে দিন দিন ডিজিটাল। দাঁড়ি রাখা নবীজির একটি সুন্নত সেই দাঁড়িটা আজ হয়ে গেছে মসলমানদের ফ্যাশন। "বৃক্ষ তোর নাম কি? ফলে পরিচয়"। হিজাব করলে বোঝা যায় এটা একটা নারী। জিন্স পরল---- মনে হয়।

সুতরাং একমাত্র সুরক্ষার উপায় হলো হিজাব। কুরআনে মুসলিম নারীদের পর্দা করতে বলা হয়েছে। এ আদেশের অর্থ হলো দেহের আর্কষণীয় অংশ যেমন বক্ষ, কেশ, বাহু এবং পা পরপুরুষের সম্মুখে আবৃত রাখা। ইসলামী শরিয়তে এজন্য হিজাব ব্যবহারের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। যেকোন সভ্যতার সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দুতে নারীর ভুমিকা মুখ্য।

আফগানিস্তান এবং ইরাকে পরিচালিত যুদ্ধ কেবল তেল চুরির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, তা আরো বিস্তৃতহয়ে মুসলিমদের ধর্ম আর সংস্কৃতির উপরও হাত দিতে শুরু করেছে, যার অন্যতম লক্ষ্য হল বোরখা উৎখাত করে বিকিনি আমদানি করা। পহেলা ফেব্রুয়ারি। বিশ্বের প্রথম ''বিশ্ব হিজাব দিবস''। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.