আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তুষি হল আপুর বান্ধবীর নাম...............

জীবন কেটে যায়

বেশ কিছুদিন ধরে ভাবছিলাম কবিতা লিখব, কিন্তু কিছুতেই সময় এবং সুযোগ কোনটাই হয়ে উঠছিল না। তাছাড়া কবিতা লিখতে গেলে আবেগ, অনুভূতি পাশাপাশি উপযুক্ত পরিবেশ না থাকলে আমি আবার লিখতে পারি না। আজকে বসব কালকে বসব বলে আর লিখা হয় না। একদিন ভাবলাম এখনই লিখব, আবেগ-অনুভূতি যা ই থাকনা কেন কবিতা আজকে আমি লিখেই ছাড়ব। তারপর রুমের লাইট বন্ধ করে দিয়ে ল্যাম্প জ্বালিয়ে বসে গেলাম।

বুঝতে পারলাম কলমে শব্দের আনাগোনা খারাপ হচ্ছে না। ভাবছি, লিখছি- এক পর্যায়ে যখন দেখলাম প্রায় অনেকটুকুই লিখে ফেলেছি তখন নিজের লিখাটা পড়ার স্বাদ জাগল। কিন্তু হায়, একি! রোমান্টিক কবিতা লিখব বলে কাগজ কলম নিয়ে বসলাম অথচ এইটা একটা বিদ্রোহী কবিতা হয়ে গেছে। কবিতার কয়েকটা লাইন তুলে ধরছি- তুমি বলেছিলে আসবে- আসনি তো কি হয়েছে; আমি কি বেঁচে নেই? হৃদয়ে আমার আজ আর রক্তরন হয় না হবে কি করে, আমি যে আমাতে আসীন........ [তারপরের লাইন গুলো যে কি মনে করে লিখলাম নিজেও জানি না] তোমার ভালবাসার অপক্ষাই আছি ভাব? জ্বলন্ত হৃদয়ের কয়লা আমি জমিয়ে রেখেছি তোমায় হাটাব.....তুমি হেটে যাবে, হাটতেই হবে আমি তোমায় টুকরো টুকরো করে প্রতিটি কোষে .......................................... এটুকুই থাক। রোমান্টিকতার এই বৈপ্লবিক রূপ দেখে একগ্লাস ঠান্ডা পানি খেয়ে অনমনষ্ক হয়ে মেঝেতে শুয়ে রইলাম।

ঠিক কতক্ষন জানি না একসময় আপুু এসে ডাক দিতেই অন্যমনস্কতা ভেঙ্গে যায়। দরজা খুলে দিতেই আপু ভেতরে ঢোকে বলে- কিরে, এই সময় লাইট বন্ধ করে ল্যাম্প জ্বালিয়ে রেখেছিস কেন? একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললাম- এমনি। কখন আপু আমার লিখাটা হাতে নিয়ে পড়ছে আমি খেয়াল করিনি হঠাত আপুর হাসির শব্দে আমি চমকে উঠলাম। হাসতে হাসতে আপু জিজ্ঞাসা করল - অর্ণব, এটা কি তুই লিখেছিস। আমি ব্যাপারটা বুঝতে পেরে আপুকে বললাম- দেখনা, একটা রোমান্টিক কবিতা লিখতে গিয়ে কেমন জানি বৈপ্লবিক রূপ নিয়েছে।

আমার কথা শুনে আপু আরো উচ্চস্বরে হাসতে থাকে। আমি ধমক দিতেই ও হাসতে হাসতে বলতে লাগল- একটা প্রেম কর, প্রেম করার সময় দেখবি একরকম আবেগ চলে আসবে তোর মাঝে তখন হরহর করে রোমান্টিক কবিতা লিখে যেতে পারবি। আবার যদি ছ্যাকা খাস তাহলে অন্যরকম আবেগ আসবে, কিন্তু দুটো আবেগই কবিতার জন্য তোকে খুব সাহায্য করবে, বলেই আপু আবার হাসতে বের হয়ে যায়। আমি হা করে আপুর চলে যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলাম, বুঝতে পারলাম এই দুর্বোধ্য কাজটি বুঝি আমার দ্বারা আর হবে না। আপু হয়ত দুষ্টুমি করেই আমাকে এই কথাগুলো বলেছিল কিন্তু আমি মনে মনে ভাবলাম বুদ্ধিটা খারাপ না।

তাই প্রেম করার জন্য মেয়ে খোঁজা শুরু করলাম। হঠাত একদিন সেই সুবর্ণ সুযোগ এসে গেল। একটা মেয়েকে দেখি আমাদের বাসার সামনে দিয়ে প্রতিদিনই আসা যাওয়া করে। আমি বারান্দা থেকে কয়েকদিন খেয়াল করেই ভাবলাম এই মেয়েটির সাথেই প্রেম করব। তো প্রেম করার জন্য কি কি করতে হয় আমার জানা ছিল না।

নিজের মত করেই ভাবলাম- প্রথম একটা চিঠি দিয়ে শুরু করলে মন্দ হয়না। তারপর না হয় মোবাইল নাম্বার নিয়ে চুটিয়ে রাত জেগে প্রেম করা যাবে। নাহ্ কোনকিছুতেই সাহস করে কোন সিদ্ধান্ত না নিতে পেরে আপুর সরনাপন্ন হলাম। তখন আপু বলল মেয়েটির নাম কি, কোথায় থাকে? আমি বললাম- থাকে আমাদের পাড়াতেই, তোকে দেখাব। পরদিন আপুকে নিয়ে বারান্দায় বসে আছি মেয়ে দেখানোর জন্য।

ওফ, এত দেরি করছে কেন আজকে....। যাইহোক, সমস্ত অপক্ষার পালায় সমাপ্তি ঘোষনা করে মেয়েটি যখন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে আমি তাড়াতাড়ি আপুকে বললাম- আপু দেখ দেখ, এই মেয়েটি। আপু মেয়েকে দেখে আমার দিকে এমনভাবে তাকাল আমি বোকা বনে গেলাম। একসময় হা হা করে আপু হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাবার অবস্থা। কিছু একটা বলতে চাইছে কিন্তু হাসির জন্য ওর কোন কথাই আমি বুঝতে পারছি না।

প্রায় ৪-৫ মি. পর আপু একটু স্বাভাবিক হয়ে বলল- ওনি তুষির আম্মু, বলেই আবার হাসতে লাগল..............

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.