ব্যস্ত শহর ঠাঁস বুনটের ভিরে আজো কিছু মানুষ স্বপ্ন খুজে ফিরে........
চিত্র১
দলীয় ও ব্যক্তিগত জীবনে আত্ম সচেতনতা,পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন ও সেটিকে উপস্থাপনের জন্য johari window একটি অতি গুরুত্ব পুর্ণ মেথড। ১৯৫৫ সালে Joseph Luft ও Harry Ingham এটি উদ্ভাবন করেন।
এতে ৪ টি বর্গ বা চতুর্ভাগ রয়েছে।
প্রথম চতুর্ভাগঃ ব্যক্তির যে তথ্য সে নিজে জানে ও অন্যরাও জানে। যেমনঃতার নাম,পরিচয় ইত্যাদি।
একে বলা হয় Open self।
দ্বিতীয় চতুর্ভাগঃ ব্যক্তির যে সকল তথ্য সে নিজে জানে না কিন্তু অন্যরা জানে। যেমনঃকারো গায়ের ঘামের গন্ধ,সে নিজে সেটি অভ্যস্ত তাই হয়ত সে বুঝতে পারে না কিন্তু অন্যরা সেটি বুঝতে পারে।
একে বলে Blind self.
তৃতীয় চতুর্ভাগঃ ব্যক্তির যে সকল তথ্য সে অন্যদের কাছ থেকে আড়াল করে রাখে,আর তাই নিজে জানে কিন্তু অন্যরা জানে না। যেমনঃপারিবারিক বা ব্যক্তিগত কোন দুর্বলতা,সেটি বন্ধু বান্ধব ও অন্যদের কাছে আমরা আড়াল করতে চেষ্টা করি।
একে বলে Hidden self।
চতুর্থ চতুর্ভাগঃ ব্যক্তির যে সকল তথ্য সে নিজেও জানেনা ও অন্যরাও জানে না। যেমনঃসঠিক সুযোগের অভাবে নিজের ভিতর থাকা কোন প্রতিভা হয়ত নিজেজেই জানিনা যে আমার আছে,আর তাই অন্যেরো জানার কোন অবকাশ থাকেনা। আত্মবিশ্বাসের অভাবে হয়ত একজন ব্যক্তি মঞ্চে দাড়ায়নি কখন,তাই নিজেকে সে কখন সুবক্তা ভাবে না,অন্যেরাও না।
একজন মানুষ বক্তি ও দলীয় জীবনে কতটা সফল হতে পারবে তা বুঝা যায় এই ৪টি ভাগ থেকে,সেই সাথে তার সাইকোলজিক্যাল দিকের ব্যপারেও তথ্য পাওয়া সম্ভব এখান থেকে।
যেমনঃ
কেউ ভালো গান গায়,কিন্তু সে কখন নিজেকে কোন প্রতিযোগিতায় উপস্থাপন করার সাহস পায়নি। বন্ধুদের আড্ডায় এভাবে একদিন গানে টান দেয়াতে বন্ধুরা জেনে গেল সে ভালো গান গায়,তাই সে ৪ নাম্বার ঘর থেকে প্রথমে ২ নাম্বারে চলে গেল। আর বন্ধুদের প্রশংসা ও তাদের চাপে ক্লোজাপ ১ এ রেজিট্রেশন করার মাধ্যমে নিজের প্রতি বিশ্বাস এলো,এখন সে নিজেও জানে সে ভালো গান গায়। এভাবে open self এ পৌছে গেল।
তেমনি নিজের খারাপ দিক,যেমন কেউ বদ রাগি সেটি সে তার কাছের মানুষের কাছথেকে জানতে পারলে নিজেকে কিছুটা হলেও সংশোধন করে নিতে পারে।
যা তার জন্য সহায়ক হয়।
সবচেয়ে জটিল ঘর হলো ৩ নাম্বার Hiddenself। ধরুন একজন চাকুরিজীবি,তার কলিগদের সাথে নিজের পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতার কথা বলতে সংকোচ করছে। তাই সে নানা মিথ্য বলা শুরু করল। আমার গ্রামে এই আছে সেই আছে।
আর নিজের মাঝে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ শুরু করল নিজের এই মিথ্য ঢেকে রাখার জন্য। কলিগ ছুটিতে বেড়াতে চাইলে নানা অজুহাত দেখাতে শুরু করল। সেখানেও অবিরা্ম নিজের সাথে সংগ্রাম। কলিগের মেয়ের বিয়ে। এখন দামী গিফট না দিলে মান যাবে,কারন অনেক বড় বড় কথা বলা আছে...এভাবে একটা ছোট্ট মিথ্য থেকে নিজেকে আড়াল করতে করতে নিজের উপর চাপ বাড়তে থাকল।
যা তার ব্যক্তি জীবনে ভয়াবহ ছাপ ফেলবে। তার চেয়ে নিজের প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করল তার চেয়ে অনেক মানসিক শান্তিতে থাকা যেত।
আবার ধরুন কারো বাবা কৃষক,ছেলে বড় ডাক্তার। বাবার এই পরিচয় সে আড়াল করল,তখন পরিচিয়ের মত সাধারন তথ্যটি সে ১ নাম্বার ঘর থেকে নিয়ে ৩ নাম্বারে রাখল। এভাবে মানুষ তারকে যত আড়াল করতে চাইবে জীবনে জটিলতা ততই বাড়বে।
যা তাকে একজন সফল মানুষ হতে প্রচন্ড বাঁধা দিয়ে যাবে।
চিত্র ২
তাই সবার উচিত চিত্র ২ এর মত ২,৩,৪ নাম্বার চতুর্ভাগের পরিমান কমিয়ে ১ নাম্বারের ক্ষেত্র বাড়ানো। ব্যক্তিগত ও দলীয় জীবনে সুখ ও সফলতা এর উপর প্রচন্ড ভাবে নির্ভর করে। সক্রেটিস বলেছেন know thyself,নিজেকে জানার ও আবিস্কারের জন্য এটি অনেক সহায়ক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।