শ্রদ্ধা আর মমতাই তোমাকে জয়ী করতে পারে; তুমি তোমার জ্ঞান প্রয়োগ কর।
কাদামাটি থেকে ব্রহ্মা সৃষ্টি করেন আদি মানব মনু (Manu)। মনুর দেহ থেকে অতঃপর ব্রহ্মা তৈরি করেন চার বর্ণের মানুষ।
আদি মানবের মস্তক থেকে উদ্ভূত হয় শুভ্র বর্ণের ব্রাহ্মণ—সর্বোৎকৃষ্ট শুদ্ধতম মানব, জীবন কাটবে তার যাজক, সাধু, কিংবা পণ্ডিত হিসেবে। রজত বর্ণের ক্ষত্রিয় আসে মনুর বাহু থেকে, যুদ্ধ ও শাসনকার্য উৎকীর্ণ তার ভাগ্যলিপিতে।
উরুসম্ভূত বৈশ্য, বর্ণ যার বাদামী, মনোনিবেশ করবে কৃষিকার্য ও বাণিজ্যে। আর কৃষ্ণবর্ণের শূদ্র, মনুর পদ সে, জন্মই তার অন্যের সেবায় শ্রমদানের জন্য।
আর্যদের ধর্মগ্রন্থ বেদের প্রথম খণ্ড ঋগ্বেদে (Rigveda) বর্ণিত রয়েছে বর্ণ চতুষ্টয়ের কথা। এদের মধ্যে শূদ্র ব্যতীত অন্য তিন বর্ণ হচ্ছে দ্বিজ (Dvija), কারণ পবিত্র উপাচার উপনয়নের (Initiation) মাধ্যমে আরেকবার জন্ম হবে তাদের, দীক্ষিত হবে তারা জীবনের চূড়ান্ত ব্রত, ব্রহ্মোপদেশমে (Brahmopadesam)। জীবনের চক্রে (Wheel of Life) কাটাবে তারা ৪টি পর্যায়ঃ ব্রহ্মাচার্যের শিষ্যব্রতে, গার্হস্থ্যে, বাণপ্রস্থে, এবং সবশেষে সন্ন্যাসে।
তবে মানব সমাজে শূদ্রের স্থানই সর্বনিম্ন নয়। চার বর্ণের বাইরে রয়েছে বর্ণহীন এক গোত্রঃ অচ্ছুৎ (Untouchable)। বেদের খণ্ডগুলোতে অবশ্য এদের উল্লেখ নেই; এদের কথা পাওয়া যায় ভগবৎ গীতায় (Bhagavad Gita)। বর্ণহীন এই শ্রেণীটি অশুদ্ধ ও দূষিত এবং সমাজে এদের ভূমিকা হচ্ছে ভৃত্যসুলভ, নিচ, অস্বাস্থ্যকর কাজ সম্পাদন করা।
অচ্ছুৎ অন্ত্যজ এই সম্প্রদায় বিভিন্ন নামে পরিচিত।
নিজেদেরকে এরা আখ্যায়িত করে দলিত হিসেবে, সমাজের নানা প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে তাদের সংগ্রামের প্রতি সম্মাননা হিসেবে। মহাত্মা গান্ধী এদের বলেন হরিজন—দেবতা হরি-বিষ্ণুর সন্তান।
অচ্ছুৎদের একটি শাখা তামিল নাড়ু, কেরালা এবং শ্রী লঙ্কার পারাইয়ার (Paraiyar) বা পারায়ার (Parayar) সম্প্রদায়। প্রাচীন তামিল ভাষায় পা-রাই (paRai) মানে ঢোল; শাস্ত্রীয় বা পেশাগত কারণে পারায়ার সম্প্রদায়ের লোকজন ঢাক-ঢোল বাজাত, আর এ থেকেই গোত্রটির নামকরণ। অচ্ছুৎ এই গোত্রটির নাম থেকেই সৃষ্টি হয় ইংরেজি pariah (পারায়াহ) শব্দটি, যার মানে সমাজচ্যূত, অস্পৃশ্য।
শব্দটি ইংরেজিতে প্রথম লিপিবদ্ধ হয় ১৬১৩ সালে, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীরা তা বয়ে নিয়ে যায় ইউরোপে। ইউরোপীয়রা অবশ্য ভুলবশতঃ নিম্নবর্ণের সব লোককে বুঝাতেই এটি ব্যবহার করত, এবং মাঝে মাঝে গোত্রহীন লোকদের ক্ষেত্রেও। ধীরে ধীরে, ঊনবিংশ শতাব্দীর দিকে, জন্ম নেয় pariah'র আধুনিক মানেঃ বিশেষ্য. সামাজিক কিংবা রাজনৈতিক কারণে দলচ্যূত ব্যক্তি, গোষ্ঠি, দেশ প্রভৃতি ।
"USA has a long, intolerant history of labeling a nationa pariah if it does not go along US policy."
[হিন্দু বর্ণভেদ প্রথা অনুসারে]
সূত্রঃ
Click This Link
http://www.friesian.com/caste.htm
http://en.wikipedia.org/wiki/Paraiyar
http://en.wikipedia.org/wiki/Dvija
ছবিঃ নেট
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।