সবকিছুই চুকিয়ে গেছে গালিব! বাকি আছে শুধু মৃত্যু!!
এবার বর্ষাটা একটু দেরি করে এসেছে। একটানা খরার একটা পর্যায়ে মনে হয়েছিল এবার বোধ হয় আর বৃষ্টির দেখা মিলবেনা। না, ঈশ্বর আমাদের প্রতি অতোটা রুক্ষ এখনো হননি। আমাদের বিষয়ে তাঁর মাঝে খানিকটা বিরক্তি বা অসন্তুষ্টি থাকলেও তা সম্ভবতো একেবারে চরমসীমায় পৌছায়নি। এ কারণে দেরিতে হলেও শেষ পর্যন্ত তাঁর করুণায় ধারায় অর্থাৎ বৃষ্টি ধারায় আমাদের সিক্ত করেছেন।
কৃষিনির্ভর গ্রামীণ অর্থনীতিতে বৃষ্টির আলাদা একটা তাৎপর্য্য আছে। ফসল বুনা থেকে শুরু করে ঘরে তোলা পর্যন্ত সবকিছুই বৃষ্টির উপস্থিতি বা অনুপস্থিতির উপর নির্ভরশীল। তবে আমরা যারা গ্রামীণ জীবনধারায় অভ্যস্ত নই কিংবা বহুকাল আগে এ ধারা থেকে বিচ্যুত হয়ে শহরের বাসিন্দা হয়েছি তাঁদের কাছে বৃষ্টির অর্থনৈতিক কোন তাৎপর্য্য নেই। এই শহরে সারা বছর বৃষ্টি না হলেও এখানকার বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবনযাপনে কোন সমস্যা হবেনা। প্রত্যক্ষ কোন আর্থিক ক্ষতিরও সম্ভাবনা নেই।
উষ্ণতার কারণে শরীরে একটু অস্বস্তি লাগবে এই আরকি। তবে যারা সার্বক্ষণিক এসি রুমে বাস করেন তাঁরাতো এই সমস্যা থেকেও মুক্ত।
শহুরে জীবনে অভ্যস্ত হওয়া এবং ব্যক্তি হিসেবে রুক্ষ হওয়ার কারণে কারণে বৃষ্টির কাছে আমার নিজেরও অর্থিনৈতিক বা রোমান্টিক কোন দায়বদ্ধতা নেই। তবে বৃষ্টি এলে একটা নস্টালজিয়া যে কাজ করে তা অস্বীকার করতে বা লুকাতে পারবনা। ছেলেবেলায় মুষলধারে বৃষ্টি নামলে বন্ধুরা সবাই মিলে ফুটবল খেলতে যেতাম।
পানি আর কাদায় একাকার হয়ে যেত শরীর। অনেক সময় ইচ্ছা করেও গায়ে কাঁদা মাখতাম। তারপর এক সময়ে পরিশ্রান্ত হয়ে কাঁদামাখা শরীরে বাড়ি ফিরলে মা বকুনি দিতেন। অসুখ হলে ডাক্তার দেখাবেননা বা খাবার বন্ধ করে দিবেন বলে হুমকিও দিতেন। তবে তা ছিল সম্পূর্ণই তার বাইরের অবয়ব।
বুঝতাম আমার শরীর বা আমাকে নিয়ে অত্যধিক ভাবনাটাই তাঁর এই স্নেহভরা বকুনির মূল উৎস। তাই ভয় পেতাম না। আবার বৃষ্টি নামলে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাতাম।
ক্যামন করে কখন যে দিনগুলো পার করে এলাম বুঝতেও পারিনি। এখন একটু হাটলেই দম ফুরিয়ে আসে।
শরীরে বয়সের ছাপ এবং উপস্থিতি স্পষ্ট টের পাই। বৃষ্টিটা যতোই মুষলধারে হোক না কেন ফুটবল খেলার সামর্থ্য আমার আর নেই। সাথের বন্ধুদেরও বোধ হয় একই অবস্থা। যদিও বহুকাল কোন যোগাযোগ নেই।
পুনর্জন্ম চাই ঈশ্বর!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।