কাঙাল জানিয়া বাবা দিও দরিশন, অধম জানিয়া বাবা দিও দরিশন.....
লাওয়াছড়া জাতীয় উদ্যান রক্ষায় জেলা প্রশাসকের মাইকিং এবং জনগনের সহযোগিতা কামনা।
বাংলাদেশের অন্যতম রেইন ফরেষ্ট লাওয়াছড়া জাতীয় উদ্যান যা শ্রীমঙ্গল এবং কমলগঞ্জ উপজেলার দুই সীমান্তের মধ্যবর্তী অঞ্চলে ১২৫০ হেক্টর বনভূমি নিয়ে গঠিত। তার সন্নিকটে দুইটি খাসিয়া পুন্জি এবং চারটি চা বাগান যথাক্রমে ভাড়াউড়া ,ফুলবাড়ী, নুরজাহান এবং জাকছড়া চা বাগান পরিবেষ্টিত। এই রেইন ফরেষ্ট এর ভিতর লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থী উপদ্রবকে কেন্দ্র করে নৈসর্গ নামক একটি বেসরকারী সংস্থাকে দেকভাল করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। যা অনিভিপ্রেত এবং তারাই এই জাতীয় সম্পদ জাতীয় উদ্যানকে সংকটাপন্ন করে তুলেছে।
চা বাগান পরিবেষ্টিত এই রেইনফরেষ্টকে প্রভাবশালী মহল লেবু চাষের জন্য জোড় করে দখলে রেখেছে বন ভূমির বিরাট অংশ। এদেরকে বনদস্যুও বলা যায়।
এই জাতীয় উদ্যানের রক্ষকরাই ভক্ষকের ভুমিকায়।
এখানে আদিবাসী খাসি সম্প্রদায় বনকে প্রাকৃতিক ভাবে বেড়ে উঠার সূযোগ করে দেয়। তারা বনকে দেবতা মনে করে।
তাছাড়া চা বাগানের লেবাররা প্রায়ই জ্বালানী কাঠ সংগ্রহের জন্য এই বনকে ব্যাবহার করে। এই অঞ্চলের আদি বাসি নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ করে জানা যায় । এই ফরেষ্টকে কেন্দ্র করে কয়েকটি মাফিয়া চক্র গড়ে উঠেছে। সরকারী পৃষ্টপোষকতায় এই মাফিয়া ডনরা দখল করে রেখেছে বনভূমির বৃহৎ একটা অংশ। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় বনবিভাগের কর্মকর্তারা এখানে অসহায়।
তারা কখনো্ বনবিভাগের জমি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে না বা করতে পারেনা। আমি এই এলাকার সন্তান এবং পারিবারিক জন্ম সুত্রেই এই এলাকার আনাচে কানাচে ঘুরে ফিরে বড় হয়েছি। লাওয়াছড়ায় বাই-সাইকেলে চড়ে কতবার যে গিয়েছি তার হিসাব নাই। পুরো বনাঞ্চল ঘুরে বেড়িয়েছি। কিন্তু এখন কিছুই নেই।
এই রেইনফরেষ্টের নিজস্ব কিছু গাছ বিরল প্রজাতির ও অনেক গাছ এখন নাই বললেই চলে। দেশী প্রজাতির গাছ বনবিভাগের অসাধু কর্মকর্তাদের সহায়তায় কেটে ফেলা হচ্ছে। জীব বৈচিত্র রক্ষা করতে হলে এই দেশী প্রজাতির গাছ খুবই জরুরী। তা না করে বনবিভাগ বিদেশী জাতের গাছ লাগায়। লাওয়াছড়ার মধ্যে দিয়ে গেছে সিলেট ঢাকা রেলপথ ।
এই রেলপথের জন্যে বিরল প্রজাতির প্রানিদের আবাস্থল হুমকির সম্মুখিন।
এরই মধ্যে আমরা হারিয়েছি বিরল প্রজাতির অনেক প্রানি। অনেকে মনে করে মাগুরছড়া বিস্ফোরন একটি কারন । যদিও তা একটি অন্যতম কারন। মানুষের আগ্রাসন এবং অনেকদিন যাবদ মানূষের অনুপ্রবেশ অবাধ যাতায়াত প্রানির বংশবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্থ করেছে।
এই জাতীয় উদ্যানে উল্লুকের বংশবৃদ্ধি কমে গেছে। আগের মতো আর দেখা যায় না।
জাতীয় উদ্যানকে রক্ষাকরতে হলে সবার আগে পর্যটকের অবাধ যাতায়াত বন্ধ করতে হবে।
বিলম্বে হলেও জেলাপ্রশাসন মানূষকে সচেতন করার চেষ্টা করছেন। যদি বনবিভাগের দূর্নিতি বন্ধ না করে তাদের দূর্নিতিকে সহায়তা দেয়ার জন্য নৈসর্গ নামের সংস্থাটির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
তাদের বনসম্পদের প্রতি অবহেলা ব্যাবসায়িক স্বার্থ পরিত্যাগ করা জরুরী। কাউকে বাণিজ্যিক ভাবে এখানে ঠিকাদারী দেয়া ঠিক হবে না। পরিবেশ রক্ষায় কোন বেসরকারী সংস্থা কার্যকর নয়। বরং তাদের কারনে এই বনাঞ্চলের জমি বেদখল হয়ে যেতে পারে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।