গিন্নীর ঘ্যাংঘ্যানিতে অবশেষে ওর কাজিনের বিয়েতে যেতে রাজি হলাম। সমস্যায় পড়লাম ড্রেসআপ নিয়ে। এমনিতে আমি প্রচন্ড পরিমান ক্যাজুয়েল। জিন্স আর টি শার্ট ছাড়া কিছুই ভলো লাগেনা পরতে। এ নিয়ে আমার শ্বসুরবাড়ীতেও অভিযোগের কোনো অন্ত নাই।
আল্লার রহমতে এসব আমি থোরাই কেয়ার করি। কিন্তু বড়লোক পার্টির বিয়ে, গিন্নীর অনুরোধে বেজার হয়ে জিন্সের সাথে অন্তত ব্লেজার পরতে সম্মত হলাম। ড্রেসআপ শেষ করে গিন্নীকে বললাম - দেখোতো আমাকে কেমন লাগছে দেখতে?। উত্তরে সে বললো - ড্রাগ এডিক্টেডের কাপড়ও এর চাইতে ভালো হয় - একবার নিজেই আয়নায় দেখো না! আয়নায় তাকাতেই দেখি গিন্নী কথাটা খারাপ বলে নাই, জিন্সের পেন্টে ১১৪ টা ভাঁজ পরে আছে...গেলাম ইস্তেরিতে ডলা দিতে , মাগার কারেন্ট নাই....আইপিএস দিয়েতো আর ইস্তেরি হয় না, অজ্ঞত্বা গলায় গামছা (টাই) ঝুলালাম আর জিন্সের বদলে কমপ্লিট সুটেটভুটেট হলাম।
বিয়েতে গেছি, গিন্নী আমাকে ফেলে নারী মহলে সামাজিক কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলো।
আমি এদিক সেদিক পাইচারি করি। হঠাৎ এক মেয়েকে দেখি আমার দিকে তাকিয়ে আছে, আমার বুকটা ধক্ করে উঠলো, সন্দেহ হলো - আমার প্যান্টের জিপার খোলা নাইতো? এভাবে আমার দিকে তাকাবে কেনো? তরিৎ হাত চালিয়ে চেক করলাম, না...সব ঠিক ঠাক আছে.....আমি আস্তে করে ঐখান থেকে কেটে পরলাম। বর আসতে অনেক দেরি....মেজাজ খারাপ হতে থাকলো, কারন বর যাত্রীর সাথে আমার পরিচিত জনেরা আছে.....উনারা আসলে দুটা কথা বলতে পারতাম......ভাবতে ভাবতে এক আন্টি টাইপের মহিলার সাথে চোখাচোখি হলো। (আন্টি বলাটা ঠিক হবে কিনা বুঝতে পারছিনা....কারন এখন অনেকেই আমাকে আংকেল ডাকে), কিছুক্ষনপর তিনি আমেকে প্রশ্ন করলেন, আপনি কোন পক্ষের? , এই বয়সী মহিলা দেখলে আমার হার্ট এমনিতেই ফলস বিট দেওয়া শুরু করে, উনার প্রশ্ন শুনে আমার সবগুলো বিটই যেনো ফলস হতে থাকলো। মিন মিন কর জবাব দিলাম বর আমার কাজিন হয়।
। এভাবেই কথা শুরু আমি কি করি, কোথায় থাকি জানতে চাইলেন.....উনিও একটা স্টাবলিস্ট কম্পানীর এইচ এর ম্যানেজার........মনে মনে কতো প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে লাগলো......
আমার কি নতুন চাকুরী হবে?
পরকীয় নামের একটা শব্দ শুনেছি.....এরকম কিছু কি হতে যাচ্ছে?
উনার সাথে কি পরে ফোনে আমার যোগাযোগ হবে?
তাহলেতো জিপি ইউজ করতে পারবো না, কোন কম্পানীর সিম নিবো? সিটিসেল, নাকি ওয়ারিদ?
ভাবতে ভাবতে কথা বলছি.....এক সময় লবিতে সোফায় বসলাম.....হঠাৎ করে এক তরুনী এসে হাজির হলো....ভদ্র মহিলার মেয়ে....দেখতে সম্ভবত তার বাবার মতো, কারন মায়ের রূপ কিছুই তিনি পান নাই......
ভদ্রমহিলা মেয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন এবং ঠিক বাংলা সিনেমার মতো হঠাৎ মেয়ে কে রেখে তার নিজের সেলফোন নিয়ে মহা ব্যস্ত হয়ে গেলেন। বাংলা সিনেমার এটাই শেষ না.......কারন কিছুক্ষন যেতে না যেতেই আমার গিন্নীর চেহারা দেখা গেলো। আমি খুব দ্রুত গিন্নীর সাথে উনাদের পরিচয় করিয়ে দিলাম। এর মাঝে বর চলে এসেছে।
গিন্নী আমকে নিয়ে খেতে বসলো। টেবিলে ছয়টা চেয়ার....সবাই আমার শ্বশুর বাড়ীর মানুষ। আমার মনে হলো বেয়ারা আমার দিকেই একটু বেশি কনসেনট্রেশন দিচ্ছে। আমার অনুমান সত্য প্রমান করে খাবার শেষে বেয়ারা আমাকে আলাদা প্রীচে জরদা খেতে দিলো (যদিও সবাই ঝুটা প্লেটেই জরদা নিচ্ছিলো)। আমার শ্যালীকা বললো - কি ব্যাপার আপনাকে এতো খাতির করছে কেনো?
আমি বললাম - আমি মনে হয় অর্থনৈতীক বিপদে পরতে যাচ্ছি...অনেক রাত হয়ে গেছে, আমরা চললাম.....
এই বলেই আমি আমার গিন্নীকে নিয়ে রওনা হলাম.......গাড়ীতে উঠে গিন্নী বললো - তুমি আর এসব স্যুট ফ্যুট পরো না.....এসব পরলে তোমাকে খুব ক্ষ্যেত ক্ষ্যেত লাগে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।