.
প্রতিদিন জ্যামের কারনে আমাদের মত ম্যাংগো জনতার কত শ্রমঘন্টা নষ্ট হয় তার হিসাব আল্লায়ও রাখে কিনা কে জানে ? ফজরের পর থেকেই অফিসের জন্য ব্যস্ততা শুরু । গা ধুয়ে, জামা-কাপড় পরে, লাঞ্চের ব্যাগটা হাতে নিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে কোনরকমে বাস স্টান্ডে দাঁড়ানোর সাথেই শুরু হয় অফিসে যাবার বিড়ম্বনা । দাঁড়িয়ে থাকো ঘন্টা খানেক । যদি কদাচিৎ কোন বেলাইনের গাড়ি এসে আপনাকে তুলে নেয় তো সেদিন শুরু হবে কার চাঁদমুখ দেখে ঘুম থেকে উঠেছিলেন তার হিসেব । অফিসে যাতায়াত করতে গিয়ে নিত্যদিনের বিড়ম্বনার যেন শেষ নেই ।
সকাল বেলা উঠে দেখলেন পানি নেই । বিদ্যুৎ নেই । পানি আসবে তার ঠিক নেই । কারণ বিদ্যুৎ আসারও ঠিক নেই । এবার গোছল না করেই অফিসে রওয়ানা দিতে হবে ।
আর যদি রাতে কোন অঘটন ঘটে থাকে তাইলে গোসল না করে কেমনে বাইর হবেন ? অফিসে না গিয়ে উপায় থাকবে ? সারাদিন গা ঘিনঘিন করা বিরক্তি নিয়ে অফিস করতে হবে । খাবার-দাবার পেটে যাবে কিনা তা নিয়েও ঘোর সন্দেহ । বিকেলে যখন বাসায় ফিরবেন -অমুকের বউয়ের মিষ্টি কথাও আর ভাল লাগবেনা । ছখিনা- জরিনাদের ফোন ধরতেও ব্যাপক অনিহা টের পাবেন নিজের ভেতরে ।
নতুন করে যোগ হচ্ছে ঘড়ির কাটা একঘন্টা এগিয়ে নেয়ার ঝামেলা ।
আগে আপনি তাও কোনমতে যানযটের সাথে পাল্লা দিয়ে অফিসে যেতে পারতেন - সকাল সকাল রওয়ানা দেবার কারনে । এখন আর সে সুযোগ পাচ্ছেননা । এখন আপনি রওয়ানা দেয়ার আগেই অফিস শুরু হয়ে যাবে । আগে আপনি সন্ধ্যা হয়ে গেছে এই অজুহাতে বসের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে আগে এসে ফিরতি বাসের লাইনে দাঁড়াতে পারতেন- এখন পারবেননা । কারণ আরো এক ঘন্টা পর সন্ধ্যা হবে ।
লাভের লাভ আপনার কষ্টের মেয়াদ দৈনিক এক ঘন্টা করে বাড়ল । আপনার নষ্ট হয়ে যাওয়া সময় নিয়ে সরকারের কোন মাথাব্যথা নেই । সরকারের মাথাব্যথা আপনার কাছ থেকে কত সময় আদায় করে নেয়া যায় । বলবেন বিদ্যুৎ সাশ্রয় ? কিন্তু এভাবে আর কতকাল ?
এদেশে যখনই কোন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে তা ছিল সাময়িক প্রয়োজন মেটানোর জন্য । সুদূরপ্রসারি চিন্তার অভাব সবসময়ই লক্ষ্য করা গেছে ।
যানজট নিরসনের জন্য কোথায় রাস্তা থেকে প্রাইভেট গাড়িগুলো নির্বাসনে পাঠাবে, তা না করে নির্বাসনে পাঠাচ্ছে পাবলিক বাস । আর দিনদিন ঢাকার রাস্তায় অনিয়ন্ত্রিত প্রাইভেটের চাপে রাস্তগুলোর নাভিশ্বাসের যোগাড় । চট্টগ্রাম বন্দর জুড়ে তো কেবল হরেক রকমের গাড়ির বিরাট স্তুপ । এতো গাড়ি যদি একসাথে রাস্তায় নামে রাস্তাগুলো সামলাতে পারবে এই বর্ধিত চাপ ? মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস আমদানী না করে বিরাট পরিমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফুটো করে কার স্বার্থে এই সব বিলাসী সামগ্রী আমদানী করা হয় তা কিন্তু আমরা ম্যাংগো জনতা কখনোই জানতে পারিনা ।
মাঝে মাঝে দেশটাকে গালি দিতে ইচ্ছে করে ।
কিন্তু কী লাভ গালি দিয়ে ? আমার শুধু মনে হয় বন্দুকের নল ছাড়া এই চির বদমায়েসের দল ভাল হবেনা । একটা যুদ্ধ করে দেশ ম্বাধীন হয়েছে । আরেকটা যুদ্ধ করে পবিত্র হওয়া দরকার-এই সব নাপাক জানোয়ারদের কবল থেকে । রক্তের বন্যায় নাকি অন্যায় ভেসে যায় ? ভাসাক না কেউ রক্তগঙ্গায় এ জাতিকে পুনর্বার !
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।