আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এতকাল পরে এসে রোজা লুক্সেমবুর্গের সমাধি নিয়ে বুর্জোয়া জালিয়াতী।

নিশ্চই একদিন জরাজীর্ণ পৃথিবীটা আমূল বদলে যাবে
রোজা লুক্সেমবুর্গ রচিত "সংস্কার অথবা বিপ্লব" গ্রন্থটি দুটি প্রন্ধমালা হিসাবে প্রথম প্রকাশ ১৮৯৮-৯৯ খৃষ্টাব্দে। তৎকালিন জার্মান সোস্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এসপিডি)তথা দ্বিতীয় আন্তর্জাতিকের মুকুটহীন সম্রাট কার্ল কাউৎস্কি যখন মাকর্সবাদের বিপ্লবী পথ ছেড়ে সংশোধনবাদী সংস্কারের পথের প্রবক্তা হয়ে উঠেছেন, তখন তার বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ অস্ত্র হিসাবে প্রকাশিত হয় প্রবন্ধমালাটি। ইংরেজি অনুবাদের মুখবন্ধ লিখতে গিয়ে ডনি গ্লাকস্টেইন লিখেছেন; "যতদিন পুঁজিতন্ত্র থাকবে ততদিন সংস্কারবাদও থাকবে, আর তাই লুক্সেমবুর্গ উত্থাপিত যুক্তিগুলিও অবশ্যই সমাজতন্ত্রের অস্ত্রাগারের অপরিহার্য অঙ্গ থেকে যাবে। " সেই লুক্সেমবুর্গকে নিয়ে পশ্চিমা পুঁজিবাদীরা নতুন এক খেলায় নেমেছেন! বিবিসি অনলাইনের খবরটি এরকম: সমাজতান্ত্রিক ভাবাদর্শে বিশ্বাসী যারা বার্লিনে যান, তাদের অধিকাংশই একবার হলেও ঘুরে আসেন কমিউনিস্ট নেত্রী রোজা লুক্সেমবার্গের সমাধিতে। প্রয়াতের প্রতি শ্রদ্ধাস্বরূপ ফুল দিয়ে আসেন সেখানে।

কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠেছে, ওই সমাধিতে আসলেই রোজার দেহাবশেষ আছে কি-না। বার্লিন হাসপাতালের এক গবেষকের দাবি, রোজার দেহাবশেষ রয়েছে হাসপাতালে, সমাধিতে নয়। ১৯১৯ সালে উগ্র ডানপন্থিদের হামলায় নিহত হন রোজা লুক্সেমবার্গ। তখন তার বয়স ছিল ৪৭। হত্যার পর মৃতদেহটি নর্দমায় ফেলে দেয় ঘাতকরা।

মাসখানেক পর নর্দমায় একটি মরদেহ পাওয়া যায়। মিখাইল স্টপকোস প্রশ্ন তোলার আগ পর্যন্ত এতদিন ধরে সেটাকেই রোজার মৃতদেহ ভাবা হয়ে আসছে। দু’বছর আগে হাসপাতাল মর্গে একটি দেহাবশেষ খুঁজে পান হাসপাতালের ফরেসনিক বিভাগের প্রধান স্টপকোস। এ নিয়ে গবেষণা চালাতে থাকেন তিনি। এর মধ্য দিয়েই তিনি মোটামুটি নিশ্চিত, এটি রোজারই দেহাবশেষ।

স্টপকোস জার্মান সাময়িকী ডার স্কইজেলকে বলেন, ‘দেহাবশেষটি এক নারীর এবং তার বয়স ৪৫ থেকে ৫০। এটি অনেকদিন পানিতে ছিল। এ সবই রোজার সঙ্গে মেলে। ’ তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, ছেলেবেলায় অসুস্স্থতার কারণে রোজার যেমন একটি পা অন্যটির চেয়ে খাটো ছিল, স্টপকোসের পাওয়া মরদেহটিও একই রকম। স্টপকোস বলেন, ‘রোজার মরদেহ হাসপাতালে আছে, বহুকাল ধরে এ গুজব শুনে আসছিলাম।

এখন মনে হচ্ছে, এর ভিত্তি আছে। ’ নতুন পাওয়া দেহাবশেষটি রোজার কি-না, তা পুরোপুরি নিশ্চিত হতে প্রয়োজন ডিএনএ পরীক্ষা। কিন্তু এ জন্য রোজার দেহের কোনো উপাদান লাগবে। স্টপকোস বলেন, ‘তার ব্যবহৃত একটি হ্যাট পাওয়া গেলে খুবই ভালো হতো। কারণ সেখানে চুল লেগে থাকতে পারে, যা থেকে দুটির পরীক্ষা করে মেলানো যাবে।

’ রোজা লুক্সেমবুর্গ কে ছিলেন, কিভাবে তাকে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়েছিল তা নিয়ে সমাজতন্ত্রিদের নতুন করে ভাববার কিছু নেই। এই ভাবনাটা পুঁজিবাদীদের মাথায় এসেছে ভিন্ন একটি দৃষ্টিকোণ থেকে, আর তা হলো- লুক্সেমবুর্গের সমাধিকে মিথ্যা প্রমান করে একটি সাধারণ কবরে রূপ দেওয়া! এত বছর পরেও সেই মহান বিপ্লবীর দেহাবশেষ নিয়েও পুঁজিবাদীদের জালিয়াতী বন্ধ হয়নি! এই অপচেষ্টাকে ধিক্কার জানানো ছাড়া আর কি করতে পারি আমরা।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।