নিজের শিশু সন্তানকে খুন করার অপরাধে লন্ডনের আদালত গত পরশু মা (সংগত কারনে নাম অপ্রকাশ্য) এবং তার বয়ফ্রেন্ডকে কারাদন্ড প্রদান করে। উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের অগাস্টের তিন তারিখ অপরাধী মহিলা এবং তার বয়ফ্রেন্ড মিলে সতের মাসের শিশু পিটারকে নিষ্ঠুরভাবে খুন করে, যা পৃথিবী ব্যাপী প্রচন্ড আলোড়ন সৃষ্টি করে। খবরে প্রকাশ, পিটারের জন্মের মাত্র তিন মাসের মধ্যেই তার মা নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। পিটারের বাবা ঘর ত্যাগ করে চলে যায়। ইতিমধ্যে সোশাল ওয়ার্কারস পিটারের খবর নিতে আসলে তার মা জানায়, পিটার নিজের দুষ্টুমীর কারনে নিজেই প্রায় সময় ব্যাথা পায়।
পাঁচ মাস বয়সী পিটারের মাথায় এবং বুকে আঘাতের চিহ্ন প্রকাশ পেলে তার মা পিটার পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছে বলে জানায়।
ইতিমধ্যে পিটারের মায়ের বয়ফ্রেন্ড একই বাসায় বসবাস শুরু করে। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে সোশাল ওয়ার্কারস পুনরায় পিটারের খোঁজ নিতে এলে তারা পিটারকে মারাত্নকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত দেখতে পায়। পিটারকে হসপিটালে ভর্তি করানো হয় এবং তার মা’কে শিশু নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে পিটারকে তার মা পুনরায় নিজের কাছে নিয়ে আসে এবং আবার নির্যাতন শুরু করে।
সোশাল ওয়ার্কার্স পিটারের মা’কে প্যারেন্টিংস ক্লাসে ভর্তি হতে বাধ্য করে। ২০০৭ সালের এপ্রিলে পিটারকে পুনরায় হসপিটালে ভর্তি করাতে বাধ্য হয় তার মা। আঘাতের কারনে পিটারের দুই চোখে কালো দাগ পড়ে যায়। কিন্তু যথারীতি পিটারের মা জানায় প্রতিবেশীর বাচ্চা পিটারকে আঘাত করে। জুনে পিটারের সারা শরীরে বারটি’রও বেশী মারাত্নক আঘাতের প্রমান পাওয়া গেলে পিটারের মা’কে পুনরায় শিশু নির্যাতনের অপরাধে গ্রেফতার করা হয়।
কিছুদিন পরেই ছাড়া পেয়ে পিটারের মা আবার পিটারকে নিজের কাছে নিয়ে আসে। জুলাইয়ে সোশাল ওয়ার্কারস পিটারের খোঁজ নিতে আসলে পিটারের আঘাতের স্থানে চকলেট লাগিয়ে রেখে সোশাল ওয়ার্কারসের চোখ ফাঁকি দেয়া হয়। অগাষ্টের তিন তারিখ সারা শরীরে পঞ্চাশটিরও বেশী স্পষ্ট আঘাতের চিহ্ন এবং ভেংগে যাওয়া মেরুদন্ড সহ মৃত পিটারের লাশ তার দোলনা থেকে উদ্ধার করা হয়।
পিটারের উপর দীর্ঘমেয়াদী নির্যাতনের স্পষ্ট প্রমান পাওয়ার পরও পিটারকে বাঁচানোর কোনো পদক্ষেপ না নেয়ার কারনে স্থানীয় চাইল্ড সার্ভিস ম্যানেজারকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এছাড়াও যেসব সোশাল ওয়ার্কার্স পিটারের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন তাদেরকেও চাকরিচ্যুত করা হয়।
যে ডাক্তারের কাছে পিটারকে শেষবার দেখানো হয়েছিল, উক্ত ডাক্তারের মেডিকেল সার্টিফিকেট বাজেয়াপ্ত করা হয়, তিনি জীবনে আর কখনো ডাক্তারী প্রেকটিস করতে পারবেন না।
লন্ডনের চাইল্ড প্রটেকশান সার্ভিসের প্রধান পিটারের নিষ্ঠূর অমানবিক মৃত্যুতে দায়ভার স্বীকার করে ক্ষমা চাইলেও সাধারন মানুষ পিটারের মৃত্যুর বিচারের রায়ে সন্তুষ্ট নয়। গত শুক্রবার বিচার চলাকালীন অবস্থায় কোর্টরূমের সামনে বিক্ষুব্ধ জনতা জড়ো হয় এবং কঠোর শাস্তির দাবী জানায়।
এখানে লিংক
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।