::::: দেখবো এবার জগতটাকে :::::
জাফলং এ নেমে পিচ্চি পিচ্চি গাইডরা দল বেধে খিচে ধরলো। ঘুরিয়ে দেখাবে। ওদের রেট শুনে মাথা ঘুরে। জাফলং অল্প জায়গা। খুব বেশী ঘোরার কিছু নেই।
ওরা চাইলো একশ টাকা। আমার ২০টাকা দেব বলে উত্তরের অপেক্ষায় না থেকে হনহনিয়ে হাঁটা শুরু করলাম।
খেয়া ঘাটের কাছে এসে এক পিচ্চি পাকড়াও করলো। বছর আটেক বয়স। নাম আল-আমীন।
সে এই রেটেই দেখাবে। ওপারে রিক্সাওয়ালারা হাকডাক শুরু করলো তাদের ৮০/১০০টাকা দিলে পুরোটা ঘুরিয়ে দেখাবে। টুরিস্টের দল লাফাতে লাফাতে রিক্সায় বা ভটভটিতে উঠছে। আমি টুরিস্ট না। তাই আর এখানে রিক্সা বা ভটভটির দুরত্বে কিছু নাই জানি তাই পায়ে হেটেই রওনা হব শুনে আল-আমিনের চেহারা কালো হয়ে গেল।
অনেক রাস্তা। হাটতে কষ্ট।
আমি কোন কথা না বলে ব্যাগপ্যাকটা দুই কাধ থেকে সরিয়ে এক দিকে নিলাম। আল-আমিন কে চ্যাংদোলা করে নিয়ে অন্যকাঁধে নিয়া বললাম আমার কাছে রিক্সাভাড়া নেই তুমি এই কান্ধে বসে থাকে। সে হাচরে পাচরে জোড় করে নেমে গিয়ে আমার দিকে বিষ দৃষ্টিতে তাকাতে থাকে।
অবশ্য তার বিরক্তি খুব তারাতারি কেটে যায়। ওর সাথে গল্পে মেতে উঠি। খাশিয়ারা বান্দারবানের ট্রাইবদের মতো মোটেও ফ্রেন্ডলী না। ওদের সাথে গল্পগুজব করাটা সহজ হলো না। তবে পানের বরজ গুলোতে কিছু ফ্রেন্ড পেয়ে গেলাম।
যারা অন্যান্যদের চেয়ে অমায়িক।
খাশিয়া জমিদার বাড়িতে কমলা গাছে কমলা দেখলাম। এমনি কমলা বাগানে কিছুই নাই। এটা বৈশাখ মাসের শেষ। কমলা থাকার কথাও না।
কিন্তু জমিদার বাড়ির বাগানে দেখলাম একটা পাকা কমলা গাছে দুলছে। দরজায় বড় করে লেখা নো এন্ট্রেন্স।
চারপাশে খালি পানের বরজ। এক দোকান থেকে পান কিনে খেলাম। মজা পেলাম না।
এটাই হয়। যেসব জায়গা পানের জন্যে বিখ্যাত সেখানে পান খেয়ে মজা নাই। মহেশখালীর পান কিনে বন্ধুরে খাওয়াইতাম। শেফালী ঘোষের বিখ্যাত গান আছে। কিন্তু মহেশখালীতে বসে মহেশখালীর পান খেয়ে অত্যন্ত নিরাশ হয়েছি।
ইতিমধ্যে আল-আমিনের সাথে হেভী দোস্তি হয়ে গেছে। চা বাগানে গিয়ে সে গাই গুই করলো জোকের ভয়ে। আবার তাকে গাইডকে ঘারে করে নিতে হলো।
পথে খাশিয়া গ্রামে এক জমজমাট ক্যারাম আড্ডা দেখে ঢুকে পড়লাম। আমি ক্যারামে যাচ্ছে তাই।
গুটিই চিনি না। আল-আমিন জানালো সে ক্যারামে নাকি ফাটাফাটি। অবশ্য কিছুক্ষনের মধ্যেই দেখলাম সে হারা ছাড়া কিছু পারে না। হারে আর লাজুক হাসি দিয়ে বলে আইজকা আমার কুফা লাগছে। জুত করতে পারতেছি না।
অবশ্য আরেক পিচ্চি নিকোলাস কথাই বলে না। যা বলি উত্তরে খালি মিচকি হাসি দেয়। খেলতে গিয়ে দেখা গেল সে বিশাল ক্যারাম প্রতিভা। আল-আমিন আর আমার বারোটা বাজায় দিল। একটু পরে আরেক পিচ্চি আসলো।
সে কোন কথাই বলেনা। কিছু জিজ্ঞেস করলে খালি বিজ্ঞের মতো মাথা দুলায় আর ভুরু কুচকে তাকায়। যেনো আমার প্রশ্নের মতো অবান্তর কথা জীবনে সে শুনে নাই ভবিষ্যতে শোনার সম্ভবনাও সামান্য। এর নাম গিবসন। সে নিকোলাসের চেয়েও বড় প্রতিভা।
গিবসনের সাথে এসে যোগ দিল আরেকজন শক্ত চেহারার পিচ্চি। জানালো ওর নাম রোনালদো। সে বিশাল ক্যারাম স্টার হিসাবে আবির্ভুত হলো।
পিচ্চিদের দলে আরেকজন ছিল। সে অবশ্য আল-আমিন ঘরানার।
অর্থাৎ সারাক্ষন জানাচ্ছিলো সে খুব ভালো ক্যারাম খেলে আসলে হারা ছাড়া আর কিছু দেখাতে পারলো না। ওর নাম রিকি।
ছবিঃ
আয় আয় চাঁদ মামা টিপ দিয়ে যা।
ঝর্নাটা মেঘালয়ে। ছবিটা জিরোপয়েন্ট থেকে তুলছি।
আমার সঙ্গি আল-আমিন।
খাশিয়া পল্লীতে ঢুকার মুখে। পানের বাগান। ছবি তুলছে আল-আমিন। আমারে হ্যান্ড-সাম লাগতেছে তো?
সবুজের ডাক।
বৈশাখের শেষ, জৈষ্ঠ আসতেছে। কিন্তুক গাছে এখনো পাকা কমলা। বাংলা লিঙ্ক ওয়ালারা কই?
কোথা যাও নাচি নাচি। পান খেকো (?) প্রজাপতি।
যদি হয় সুজন।
তেতুঁল পাতায় ন-জন। এইখানে অবশ্য ১১জন আছে।
ক্যারাম বোর্ডের অপ্রতিদ্বন্দি চ্যাম্পিয়ান নিকোলাস। আমারে হারায় ভুত বানাইছে ।
নিকোলাসের গর্বিত হাসি আর আল-আমিনের (লাল-টুপি) মিচকা হাসি।
খেলার রেজাল্ট বুঝাই যাইতেছে।
আল-আমিন আবার হারতেছে। এইবারে চ্যাম্পিয়ান রোনালদো (সাদা-লাল চেক গেঞ্জি)
নিকোলাস আবার ফাটাইতেছে ।
কঠিন ফাইট হচ্ছে, নিকোলাস বনাম গিবসন (মেরুন গেঞ্জি)।
চল সবাই ইশকুলে যাই ।
গাড়ি (?) চলে না চলে না, চলে না রে।
গুল মরিচের গাছ।
আমার পথ চলা, আমার পথে। যেন বেলা শেষে আনমনে...
ইচ্ছে করে হেটে হেটে যাই অনেক দূর।
আকাশে হেলান দিয়ে পাহাড় ঘুমায় ঐ।
টিয়া পাখির ট্যারা দৃষ্টি। বার্ডস আই ভিউ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।